চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

শোডাউন রূপ নিচ্ছে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে

ইফতে­খারুল ইসলাম

১৬ জানুয়ারি, ২০২০ | ৪:২২ পূর্বাহ্ণ

আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় সমর্থন নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। যা কিছু ক্ষেত্রে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে রূপ নিচ্ছে। কোথাও কোথাও দলীয় কর্মসূচি নিয়ে চলছে শোডাউন।

বিশেষ করে বিজয়ের মাস গত ডিসেম্বরে ওয়ার্ডভিত্তিক নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রার্থিতার কথা জানান দেন। ১০ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া মুজিববর্ষের কর্মসূচিও অধিকাংশ ওয়ার্ডে একাধিক স্থানে আয়োজন করা হয়েছে। কেউ কেউ মিছিল করে নিজের শক্তিমত্তার জানান দিয়েছেন। কেউ কেউ আয়োজন করেছে আলোচনা সভা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। সবাই যে যার মত করে চেষ্টা করছেন সংগঠনের নজর কাড়তে। সাথে চলছে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা। প্রতিযোগিতার দৌড়ে বর্তমান কাউন্সিলরদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছেন বর্তমান ও সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতারা। প্রতিটি ওয়ার্ডে একের অধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে ব্যানার-পোস্টার লাগিয়েছেন। এসব ব্যানার-পোস্টারের নিচে ‘সৌজন্যে এলাকাবাসী’ হলেও বাস্তবে তারা নিজেরাই যে নিজের প্রচার করছেন তা সাধারণ ভোটাররাও বুঝতে পারছেন। তবে কোন কোন এলাকায় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, দাগী আসামি, ছিনতাইকারি, চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যুরাও নিজেদের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার করছে। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এসব দাগী মানুষের নাম দেখে এলাকার সাধারণ মানুষ কিছুটা শংকিতও। তাদের আশঙ্কা, এসব অপরাধী যদি কোনক্রমে দলীয় সমর্থন পেয়ে যায় তাহলে তাদেরকে আর কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তাদের অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাবে। কোথাও কোথাও হাইব্রিড তথা নব্য আওয়ামী লীগাররাও পোস্টার-ব্যানার লাগিয়েছেন। তাতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে কিছুটা ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

আবার কিছু সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা অপেক্ষায় আছেন দলীয় সংকেতের জন্য। কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হওয়ার মনস্থির করলেও তা এখনো প্রকাশ করছেন না। দলের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত পেলেই তারা নির্বাচনী মাঠে নামবেন।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হাবিবুর রহমান তারেক পূর্বকোণকে জানান, তিনি এবার শুলকবহর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচন করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছেন। আছে সাংগঠনিক প্রস্তুতিও। তবে তিনি ব্যানার-পোস্টার ছাপাননি। দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। দল যদি তাকে সমর্থন দেয় তাহলে নির্বাচন করে ওয়ার্ডবাসীর সেবা করতে চান।

আরেক সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ফরহাদুল ইসলাম চৌধুরী রিন্টু পূর্বকোণকে বলেন, তিনি তৃণমূল পর্যায় থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসছেন। কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন কিন্তু জামাল খান ওয়ার্ডবাসীর কাছ থেকে কখনো দূরে সরে যাননি। দলীয় সমর্থন পেলেও তিনি এবার এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচন করতে চান। এ রকম ছাত্রলীগের অসংখ্য সাবেক নেতা আছেন যারা নির্বাচন করতে আগ্রহী।

জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ পূর্বকোণকে বলেন, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদেরকে দল থেকে সমর্থন দেয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আছেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও একইভাবে কাউন্সিলরদের দলীয় সমর্থন দেয়া হতে পারে। যদি দল থেকে কাউন্সিলর প্রার্থীদের নাম চাওয়া হয়, তাহলে অবশ্যই প্রার্থীর ইমেজ, পরিচিতি, সাংগঠনিক কর্মকা- বিবেচনা করা হবে। কোন সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজকে দলের সমর্থন দেয়া হবে না।

 

 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট