চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

শুধু পাঞ্জাবিওয়ালাদের মোবাইল চুরি করে আলম

নাজিম মুহাম্মদ

১৭ মে, ২০১৯ | ৪:৪৭ অপরাহ্ণ

চোখের পলকেই মোবাইল সেট চুরি করতে পারে মোহাম্মদ আলম। শুধু পাঞ্জাবির পকেট থেকেই অতি সহজে এ কাজটি করতে পারে সে। সাধারণত বড় সমাবেশ, বিয়ে, মাহফিল এসব অনুষ্ঠান টার্গেট করে আলম। পত্রিকা দেখে অধিকাংশ অনুষ্ঠানের সময়সূচি জেনে নেয়।

শহরের আবাসিক হোটেলেই আলমের বসবাস। চলাফেরাও বেশ পরিপাটি। দেখলে বোঝার উপায় নেই তিনি একজন পেশাদার চোর। ছয় বছর ধরে মোবাইল ফোন চুরির কাজে জড়িত আলম। কখনো ধরা পড়ে মার খেয়ে পার পেয়েছে, আবার কখনো মারধর করার পর লোকজন থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে। কিন্তু মোবাইল ফোন চুরির পেশা ছাড়েনি সে। এবার রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে লাখ টাকারও বেশি দামের আইফোন চুরি করে ধরা পড়েছে আলম।

তার দাবি, মন্ত্রী আর বড় কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোন সে চুরি করে না। দামি মোবাইলের প্রতিও তেমন লোভ নেই তার। দুই-চার হাজার টাকা দামের চুরি করা মোবাইল সেট বিক্রি করে ইয়াবা কেনার টাকা জোগাড় হলেই হলো।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগে গত ১৪ মে কাজির দেউড়ি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সরকারি-বেসরকারি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন। এ ইফতার মাহফিলে ঢুকে পড়েছিলেন মোবাইল চোর আলম (২৬)। ভিড়ের মধ্যে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে আইফোন টেন মডেলের একটি সেট চুরি করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে ওই কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
থানার পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন জানান, ঘটনাস্থলের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে আলমকে সনাক্ত করা হয়। শুক্রবার (১৭ মে) সকালে তাকে নগরীর পুরাতন গীর্জা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে চুরি হওয়া ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলম জানান, ছয় বছর ধরে মোবাইল সেট চুরির কাজে জড়িত। সেদিনের ইফতার পার্টিতে প্রবেশের সময় তাকে কেউ বাধা দেয়নি। ইফতার পার্টিতে বিভিন্ন কর্মকর্তার গা ঘেঁষে ঘেঁষে হেঁটে একপর্যায়ে কর্মকর্তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে আইফোনটি চুরি করে সটকে পড়েন। আলম বলেন, বড় কর্মকর্তা জানলে কখনো উনার পকেটে হাত দিতাম না। সাধারণত মন্ত্রী, পুলিশের কোন কর্মকর্তা এদের পকেট থেকে মোবাইল সেট চুরি করি না। তিন-চার হাজার টাকা দামের মোবাইল চুরি করতে পারলে আমার জন্য সুবিধা। বিক্রি করে হাজার দুয়েক টাকা পেলেই তা দিয়ে ইয়াবা কিনে খেতে পারলেই হলো। সমস্যা হলো, পকেটের ভেতরে থাকা মোবাইল সেটটি কমদামি না বেশি দামের, তা চুরি করার আগে বুঝতে পারি না।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট