চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

চন্দনাইশ এক্সচেঞ্জে গ্রাহক নেমে এসেছে ৬১ তে

বিটিসিএলের সেবাবঞ্চিত দোহাজারীবাসী

নষ্ট লাইন সংস্কার না করায় দেড় বছর ধরে সেবা পাচ্ছে না বিজিসি ট্রাস্ট ও ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশ

১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৩:৩৭ পূর্বাহ্ণ

চন্দনাইশ উপজেলায় একসময় টিএন্ডটির গ্রাহক ছিল পাঁচশ। ২০০৫ সালে দোহাজারী ও চন্দনাইশ টিএন্ডটিকে ডিজিটাল টেলিফোনে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়া শুরু করার কথা বলে দোহাজারী এক্সচেঞ্জ বন্ধ করে দেয়া হয়। যা অদ্যাবধি চালু করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে দোহাজারীতে থাকা ২শ গ্রাহক সেবাবঞ্চিত হয়ে পড়ে। ২০০৮ সালে টিএন্ডটি হস্তান্তরিত হওয়ার পর বিটিসিএল নামকরণ করা হলে চন্দনাইশ এক্সচেঞ্জের ৩শ গ্রাহকের মধ্যে মাত্র ৬১ জন বর্তমানে বিটিসিএল’র ফোন ব্যবহার করছে। এর মধ্যে সাব-মেরিন ক্যাবল ও মহাসড়ক সংস্কার করার সময় বিটিসিএল’র লাইন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গত দেড় বছর ধরে বিজিসি ট্রাস্ট ও ইসলামী ব্যাংকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তা আর সংস্কার করা হয়নি। এতে প্রতিষ্ঠান দুটির আগ্রহ থাকলেও সেবাবঞ্চিত তারা।

চন্দনাইশে জনসংখ্যা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাহিদার প্রেক্ষিতে ১৯৬৮ সালে ১০টি টেলিফোন লাইন নিয়ে দোহাজারীতে টিএন্ডটি’র কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে চন্দনাইশ সদর এলাকায় টিএন্ডটি’র কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হয়। ১৯৯২ সালে টিএন্ডটি থেকে সিবিএ তে রূপান্তরিত হয়। ২০০০ সালে দোহাজারীতে ২শ লাইন নিয়ে এক্সচেঞ্জ অফিসের কার্যক্রম শুরু হয় একটি ভাড়া ঘরে। ২০০৫ সালে দোহাজারী ও চন্দনাইশ টিএন্ডটিকে ডিজিটাল টেলিফোনে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়া শুরু করার কথা বলে দোহাজারী এক্সচেঞ্জ বন্ধ করে দেয়া হয়। যা অদ্যাবধি চালু করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

২০০৮ সালে টিএন্ডটি হস্তান্তরিত হওয়ার পর বিটিসিএল নামকরণ করা হলেও দোহাজারী ও চন্দনাইশের গ্রাহকদের সেবার মান বাড়েনি। বর্তমানে মোবাইল কোম্পানির ছড়াছড়িতে টিএন্ডটির সেবা না পাওয়ায় দিন দিন বিটিসিএল’র গ্রাহক কমে ৬১ তে এসে দাঁড়িয়েছে।

চন্দনাইশ সদর এলাকায় প্রায় ৮৭ শতক জমির ওপর ১৯৯৪ সালে চন্দনাইশ টেলিফোন এক্সচেঞ্জ দ্বিতলবিশিষ্ট কার্যালয়টি নির্মাণ করা হয়। সেই থেকে অদ্যাবধি কোন ধরনের মেরামত করা হয়নি বলে জানা যায়। গত দেড় বছর ধরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সংস্কার কাজ, সাব-মেরিন ক্যাবল লাইনে কাজ করার কারণে বিটিসিএল’র ল্যান্ড ফোনের ক্যাবল নষ্ট হয়ে যায়। সেই থেকে অদ্যাবধি বিজিসি ট্রাস্টের মতো প্রতিষ্ঠানের ৯টি লাইন বন্ধ রয়েছে।

এ ব্যাপারে বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আকতারুজ্জামান বলেছেন, তিনি একাধিকবার লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করার পরেও তাদের লাইনগুলো সংস্কার করা হয়নি এবং লাইন চালু করা হয়নি। এতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। কমে যাচ্ছে বিটিসিএল’র গ্রাহক। চন্দনাইশ টেলিফোন এক্সচেঞ্জে বর্তমানে একজন কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক, টেলিফোন টেকনেশিয়ান, একজন অস্থায়ী নাইট গার্ড দায়িত্ব পালন করছেন। একাধিকবার চন্দনাইশ বিটিসিএল কার্যালয়ে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। একইভাবে বিভিন্ন গ্রাহকেরাও অফিসে কাউকে না পেয়ে তাদের কোন অভিযোগ উপস্থাপন করতে পারছে না। অথচ একসময় এ এক্সচেঞ্জ অফিসে ৫ জন, দোহাজারীতে ৫ জনসহ ১০ জনের কর্মক্ষেত্র ছিল। এখন বিটিসিএল’র সেই জৌলুস নেই। হারিয়েছে বিটিসিএল তার কর্মময় গৌরব।

এ ব্যাপারে কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক নাছির উদ্দীন বলেন, তিনি ২০১৬ সালে চন্দনাইশে যোগদান করার পর থেকে পটিয়া বিটিসিএল’র দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। দুটি অফিসে জনবল সংকট রয়েছে। দুজন করে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। গত ১ বছর ধরে বিজিসি ট্রাস্ট ও ইসলামী ব্যাংকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সাব-মেরিন ক্যাবল ও মহাসড়ক সংস্কার করার সময় বিটিসিএল’র লাইন নষ্ট হয়ে যায়। তা আর সংস্কার করা হয়নি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট