চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

চবির অগ্রণী ব্যংক ডিজিটাল যুগে এনালগ কারবারে ভর্তিচ্ছুদের দুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, চবি

১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৩:৩৭ পূর্বাহ্ণ

ঘড়িতে সময় ঠিক ১২টা। দীর্ঘ লাইন আর হুড়মুড়ের মধ্যে দিয়ে চলছে টাকা প্রদান। লাইনে দাঁড়িয়ে কেউ দুই ঘণ্টা কেউবা তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরেও কুলকিনারা পাচ্ছে না। অথচ হঠাৎ করেই দেখা গেল পেছন থেকে একজন এসে টাকা প্রদান করে চলে গেল।

গত ১২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অবস্থিত অগ্রণী ব্যাংক শাখায় স্মাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি ফি জমা দেওয়ার দৃশ্য এটি। তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ঘটলেও এনালগ পদ্ধতিতেই দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফি জমা দিতে হচ্ছে এসব শিক্ষার্থীদের। এর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্যও। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ভর্তিচ্ছু কয়েক হাজার শিক্ষার্থীদের। এক্ষেত্রে তারা বিশ^বিদ্যালয়ের ব্যাংকিং কার্যক্রমকে অনলাইনের আওতায় আনার দাবি করেন। সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ মিনার সংলগ্ন অগ্রণী ব্যাংকের নিচতলায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষা ফি জমা দেয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। দুটি বুথে টাকা জমা নিচ্ছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। আবার অনেকেই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মানছে না লাইন। একজনেই ১০-১৫ জনের টাকা একসাথে জমা দিতেও দেখা যায়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিয়ম মেনে টাকা প্রদানের কথা বললে উল্টো তাদের ওপর চড়াও হয় তারা। অনেক সময় ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথেও বাক-বিত-ায় জড়াচ্ছে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তি হতে খুলনা থেকে এসেছেন আয়েশা আক্তার। তিনি দুর্ভোগের কথা জানিয়ে পূর্বকোণকে বলেন, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখন বেলা ১২টা হলেও টাকা জমা দিতে পারিনি। আবার অনেকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একাই ১০-১৫ জনের ফি জমা দিচ্ছে। সীতাকু- থেকে আসা আরেক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম না থাকায় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।

এতে করে আমার মতো হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। অথচ উচ্চ শিক্ষার পর্যায়ে এ ধরনের ব্যবস্থা ভাবা যায় না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের বিশ^বিদ্যালয় শাখার প্রধান শিশির কান্তি দাস পূর্বকোণকে বলেন, আমরা চাই এ পদ্ধতিটা ডিজিটাল হোক। এক্ষেত্রে আমাদের ইচ্ছা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতা ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। মাত্র দুটি বুথে টাকা জমা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আজকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের চাপ বেশি দেখা যাচ্ছে। আগামী রোববার (আজ) থেকে আরো তিনটি বুথ যোগ করা হবে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্যের বিষয়ে জানতে চাইলে শিশির কান্তি দাস বলেন, আমরা এ বিষয়টি প্রক্টরিয়াল বডিকে জানিয়েছি। তারা রোববার থেকে পুলিশসহ ব্যাংকের সামনে অবস্থান করবে বলে আমাদের জানিয়েছে। বিশ^বিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। ভর্তি পরীক্ষার পরেই কীভাবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনা যায়, সে বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় আইসিটি সেলের সাথে আলোচনা করবো।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট