চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

পুলিশকে ৩ বার পিটিয়ে পালানো আনোয়ার ধরা ছোঁয়ার বাইরে

আতংকিত কক্সবাজার উপকূলের মানুষ ষ খুন, ডাকাতি-দস্যুতা অস্ত্রসহ ১৭ মামলায় পরোয়ানা জারি

এম জাহেদ চৌধুরী হ চকরিয়া

১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ার হোসেন। বয়স ৪২। তার নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে একাধিক সন্ত্রাসী ডাকাত দল। এহেন কোন অপকর্ম নেই আনোয়ার বাহিনী করেনি। বাহিনী প্রধান আনোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেসুৃমার। অভিযোগের তুলনায় মামলা রয়েছে কম। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে মামলা হয় ১৭টি। কক্সবাজার উপকূলের অন্তত ৫ লাখ মানুষ আনোয়ারকে জমদূতের মতো ভয় পায়। তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তিন দফায় ঘেরাও করে। প্রতিবারেই পুলিশকে পিটিয়ে পালিয়ে যায় আনোয়ার। তার বিরুদ্ধে খুনসহ ডাকাতি, অস্ত্র আইন, পুলিশ এসল্ট, ডাকাতির প্রস্তুতি, দস্যুতার ধারায় মামলাগুলো হয়।

কক্সবাজার জেলার অপরাধী তালিকার অন্যতম আনোয়ার হোসেন চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের লাল মোহাম্মদ পাড়া ঘিলাতলীর মুজিবউল্লাহ প্রকাশ কিনাইয়ার ছেলে। একাধিক সূত্র জানায়, আনোয়ারের বয়স ৪২ হলেও কিশোর বয়সেই অপরাধ জগতে প্রবেশ তার। একের পর এক অপরাধ করলেও তার বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম মামলা হয় দস্যুতার অভিযোগে ১৯৯৫ সালের ৬ মার্চ। এই মামলার পর থেকে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে আনোয়ার। প্রথমে অন্যের নেতৃত্বে অপরাধ দলের সদস্য হলেও পরে নিজেই গড়ে তুলে একাধিক অপরাধ বাহিনী।

সূত্রমতে, চিংড়িজোনে চাঁদাবাজি, ডাকাতি, ভাড়াটিয়া অস্ত্রবাজ, খুনসহ এমন কোন অপকর্ম নেই আনোয়ার করেনি। তার বেপরোয়া অপরাধে আতংক ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে উপকূলীয় জনগণ। ফলে তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম নানাভাবে চেষ্টা চালায়। তিনবার ঘেরাও করলেও প্রতিবারই পুলিশকে পিটিয়ে পালিয়ে যায় আনোয়ার। ফলে তার বিরুদ্ধে তিনটি পুলিশ এসল্ট মামলা হয় ২০১১ সালের ২৮ মার্চ, একই বছরের ৩০ এপ্রিল ও ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি ডাকাতির মামলা দায়ের হয় ২০০৬ সালের ২৪ মাচর্, ২০০২ সালের ২ ডিসেম্বর, ২০০৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগে ৬টি মামলা দায়ের হয়, ২০১১ সালের ২৮ মার্চ, একই বছরের ৪ এপ্রিল, ৩০ এপ্রিল, ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট, একই বছরের ১২ অক্টোবর, ২০১৪ সালের ১৫ মার্চ। পৃথক তিনটি অস্ত্র মামলা দায়ের হয় ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর, ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। পরোয়ানা জারি করা ১৭টি মামলার মধ্যে ১৬টি চকরিয়া থানায় ও একটি মহেশখালী থানায় দায়ের হয়।
অপরাধ জগতের কিং হয়ে উঠা কয়েকটি বাহিনী প্রধান আনোয়ারকে গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় আনতে উপকূলবাসীর দাবি ক্রমশ জোরালো হয়ে উঠছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো, হাবিবুর রহমান বলেন, ‘১৭টি মামলার আসামি আনোয়ারকে ধরে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে পুলিশের একাধিক টিম প্রতিনিয়ত মাঠে রয়েছে। তার খোঁজ পেতে বিভিন্ন পেশার অসংখ্য লোককে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আশা করছি অচিরেই কুখ্যাত সন্ত্রাসী আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব’।
কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘চকরিয়া, মহেশখালীসহ জেলার একাধিক থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে আনোয়ারকে যেকোন উপায়ে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে। পাশাপাশি তাকে গ্রেপ্তার করতে জেলা ও গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে রয়েছে’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট