চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অতিরিক্ত পিপি ও সন্তানকে মারধর, ফ্ল্যাট ভাঙচুর ৫ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

আদালত প্রতিবেদক

১১ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ২:৫৫ পূর্বাহ্ণ

ফ্ল্যাটবাড়ির ছাদে মদের আসরে বাধা দেয়ায় অতিরিক্ত মহানগর পিপির ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাংচুর, দস্যুতা ও মারধরের অভিযোগে ৫ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সিনিয়র মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। অভিযুক্তরা হলো নগরীর কোতোয়ালী থানার লালদিঘি ১১ নবগ্রহ বাড়ির এক্সকøুসিভ ব্লূ বেরি ১ নম্বর ফ্ল্যাটের বাবুল দে’র ছেলে রণি দে (৩৭), নবগ্রহ মন্দিরের বিপরীত পাশের বাড়ির তপন বিশ্বাসের ছেলে রাকেশ বিশ্বাস (৩৫), রতন বিশ্বাসের ছেলে গুল্লু বিশ্বাস প্রকাশ রুশো (২৬), মন্দির সংলগ্ন ৫ তলা ভবনের মৃত উদয়ন আচার্যের ছেলে পিয়াল আচার্য (২৫) ও

নবগ্রহ বাড়ির বেবী মল্লিক (৪৫)। অতিরিক্ত মহানগর পিপি পংকজ কুমার চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার আদালতে মামলাটি দায়ের করলে শুনানিশেষে আদালত এ আদেশ দেয়। শুনানিতে ঘটনার ভিডিও এবং অডিও ফুটেজ আদালতে উপস্থাপন করা হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. আইয়ুব খান, সাবেক সভাপতি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বাদিপক্ষে শুনানি করেন। এসময় আরো ১০/১৫ আইনজীবী বাদিপক্ষে উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়- রাকেশ, গুল্লু ও পিয়াল একই ভবনের বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে ভবনের নিরাপত্তাকর্মীদের বাধা উপেক্ষা করে বহিরাগত কতিপয় যুবকসহ ভবনের ছাদে প্রায়ই মদপান করে। সম্প্রতি ভবনের শিশু-কিশোররা ছাদে ব্যাডমিন্টন খেলা শুরু করলে অভিযুক্তরা তাতে বাধা দেয়। ৬ ডিসেম্বর রাত ৯টায় বাদির ছেলে ও অপ্রাপ্তবয়স্ক আরো কয়েকজন ছেলে ছাদে ব্যাডমিন্টন খেলতে গেলে অভিযুক্ত রনি শাটল কক কেড়ে নিয়ে ছাদের বাইরে ফেলে দেয়। এতে শিশু-কিশোররা প্রতিবাদ করলে বাদির ১১ বছর বয়সী ছেলেকে অভিযুক্ত রনি, রাকেশ, গুল্লু ও পিয়াল আচার্য বেদম মারধর করে। এসময় খেলতে আসা অন্যান্য কিশোররা প্রতিবাদ করলে তাদেরকেও মারধর করে। অভিযুক্তরা বাদির ছেলেকে কিল-ঘুষি মেরে মুখে মারাত্মক জখম করে।

এসময় ঘটনাস্থলে থাকা ভুক্তভোগীর ছোটবোন বাসায় এসে তার ভাইকে প্রহার করার খবর দিলে বাদি ও কয়েকজন প্রতিবেশী ছাদে গিয়ে ভুক্তভোগীকে অভিযুক্তদের কবল থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। এসময় অভিযুক্তরা বাদিকেও মারধর করে। অভিযুক্তরা ছাদ থেকে বাদিকে নিচে ফেলে দিতে উদ্যত হয়। আত্মরক্ষার্থে বাদি পালিয়ে বাসায় চলে আসেন। এরপর অভিযুক্তদের হুমকির কারণে ফ্ল্যাটের দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। এ ঘটনার ৩০ মিনিট পর অভিযুক্তরা অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ যুবকসহ বাসার সামনে এসে দরজায় আঘাত করতে থাকে। দরজা না খোলায় অভিযুক্তরা দরজার দুইটি তালা ভেঙে ঘরের ড্রয়িং রুমে ঢুকলে বাদি ও তার পরিবারের সদস্যরা ভেতরের কক্ষে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা আটকিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এসময় অভিযুক্তরা ড্রয়িং রুমের আসবাবপত্র ভাংচুর করে প্রায় ৩০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে। একপর্যায়ে বাদি পুলিশের সাহায্য চেয়ে কোতোয়ালী থানায় ফোন করেন। প্রায় ১৫/২০ মিনিট তা-ব চালানোর পর পুলিশ আসার খবর পেয়ে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পর অসুস্থ এডভোকেট পংকজ ও তার ছেলের চিকিৎসার কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। বাদি ঘটনার ভিডিও এবং অডিও আদালতে উপস্থাপন করেন। শুনানিশেষে আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ-বিধির ৩৯২, ৩০৭, ৪২৭, ৪৪৮ ধারার অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। মামলায় ভবনের ৬ প্রতিবেশীকে সাক্ষী করা হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসার প্রেসক্রিপশনও দাখিল করা হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট