চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মানসম্পন্ন শিক্ষার সুফল

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমেছে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার

সীতাকু- স্কুলমুখী হচ্ছে শিক্ষার্থীরা

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকু-

১০ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৩:৪৭ পূর্বাহ্ণ

সীতাকু-ে প্রাথমিক স্কুলগুলোতে বদলে যাচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। বেশিরভাগ স্কুলেই উন্নত ভবন, সুদৃশ্য ফুলের বাগান, খেলার মাঠসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এতে পূর্বের তুলনায় আরো বেশি স্কুলমুখী হয়েছে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। যার ফলে এ উপজেলায় এখন ঝরেপড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। যা অভিভাবক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের আশাবাদী করে তুলেছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, সীতাকু-ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৯৮টি। এর মধ্যে ২৯টি বিদ্যালয়ে ৬৫টি নতুন কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। একসময় এসব বিদ্যালয়ে জায়গার অভাবে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসতে পারত না। এখন তারা স্বাচ্ছন্দ্যে ক্লাস করছে। এতে খুশি অভিভাবকরাও। সীতাকু- পৌরসদরের উন্নয়ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী স্বপ্নার অভিভাবক মো. আবুল কালাম বলেন, একসময় সরকারি স্কুলগুলোর পড়াশুনার মান ছিলো যাচ্ছেতাই। কিন্তু এখন আর সেকথা বলা যাবে না। সরকার এ বিদ্যালয়গুলোকে বদলে ফেলেছে। উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর থেকে এ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে ঢেলে সাজানোর কাজ করছেন। এর ফলে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে সব স্কুলে। যার সুফল আসছে পড়াশুনাতেও। তিনি এভাবে সবসময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নজরে রাখার জন্য অনুরোধ জানান উপজেলা চেয়ারম্যান ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রতি। তাহলে স্কুলগুলো আরো এগিয়ে যাবে, শিক্ষার্থীরাও ভালো ফলাফল ধরে রাখতে পারবে বলে মনে করছেন তিনি। এ অভিভাবকের কথা যে একেবারে সত্যি সেকথা বলতে গিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুচ্ছোফা বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন আমাদেরকে সবসময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে সহযোগিতা করছেন। এ কারণে প্রতিটি স্কুলের পরিবেশে ইতিবাচক পরিবর্তন আসায় সবাই সুফল পাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা উৎসাহী হচ্ছে। শিক্ষকরাও আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। এ কারণে একসময় অনেক শিক্ষার্থী মাঝপথে পড়াশুনা বন্ধ করে ঝরে পড়লেও বর্তমানে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক চতুর্থাংশে নেমে এসেছে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী এবং শিক্ষার প্রসার করার জন্য উঠান বৈঠক, মা সমাবেশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য বিদ্যালয় স্থাপন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন, সোলার লাইট স্থাপন, পানীয়জলের ব্যবস্থা এবং লাঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতভাগ শিক্ষার্থীর মাঝে পোশাক বিতরণ করা হয়েছে। ২০ হাজারের অধিক বৃক্ষরোপণ, বিদ্যালয়ের আঙিনায় ফুলের বাগান, ছাদ ও ঝুলন্ত বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া খেলাধুলার চর্চাসহ নানাভাবে উৎসাহ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর সুফল মিলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সাফল্য বা বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ঝরে না পড়া কোন ম্যাজিক নয়। শিক্ষক, শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই সার্বিকভাবে কাজ করার ফলেই এমন সাফল্য এসেছে। তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদের বরাদ্দের ১ শতাংশ টাকা দিয়ে ৯৮টি বিদ্যালয়ের ১৯ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে মিড-ডে মিল বিতরণ করা হয়েছে। ব্যক্তিগত অনুদানে আমেনা বিদ্যা নিকেতনের ৮টি শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ ও গৃহ নির্মাণের জন্য জমি, বেঞ্চ প্রভৃতি দান করেছি নানা স্কুলে। ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা থাকবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিকতার কারণেই আজকের সাফল্য সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে। এজন্য তারা অবশ্যই ধন্যবাদ পেতে পারেন। এই ধারা অব্যাহত রাখলে আরো সাফল্য আসবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট