চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

রাউজানে ৩ বসতঘরে আগুন, পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা হ রাউজান

৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

রাউজানে এবার ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকিয়ে আগুন লাগিয়ে তিন পরিবারের সদস্যদের পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারের লোকজন অন্য দরজা দিয়ে বের হয়ে বাঁচতে পারলেও তিনটি বসতঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিবারগুলোর পাকা ঘরটিও। গতকাল (শুক্রবার) ভোরে এ ঘটনাটি ঘটে উপজেলা সদরের (৭ নম্বর) রাউজান ইউনিয়নের পশ্চিম রাউজান গ্রামের মাঝিপাড়া এলাকায়। দাহ্য পদার্থ (গান পাউডার) দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়ার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে গত একসপ্তাহেরও কম ব্যবধানে এই ইউনিয়নে এক কিলোমিটারের মধ্যে চারটি দোকান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের বাড়িসহ চারস্থানে আগুন ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগে থানায় অভিযোগ হলো। একের পর এক এ আগুনের ঘটনাকে স্থানীয় থানা পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যানসহ ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন নাশকতা এবং আগুন সন্ত্রাস বলে অভিযোগ তুলেছেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বি এম জসিম উদ্দিন হিরু বলেন, ‘শুক্রবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে মাঝিপাড়ার হযরত মৌলানা আমীর হোসেন শাহ (র.)’র বাড়ির জানে আলম, জাহাঙ্গীর আলম ও মো. আলমগীরের পাকা ঘরের মূল দরজায় বাইরে থেকে আটকে দিয়ে একইসঙ্গে লাগানো রান্নাঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে তাদের দুটি থাকার বেড়া, টিনের ঘরসহ সেমিপাকা বসতঘর ও একটি রান্নাঘর সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। তাদের এক গৃহবধূ আগুন জ্বলতে দেখে ঘরের বিকল্প দরজা দিয়ে বের হয়ে অন্য সদস্যদের ঘর থেকে বের করেন। আগুনে তাদের পাকা ঘরটিরও বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এলাকার লোকজন ও রাউজান ফায়ার সার্ভিস এন্ড ডিফেন্স সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলে অন্য বসতঘরগুলো রক্ষা পায়।

ক্ষতিগ্রস্ত জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী সাবরিনা সুলতানা জেকি বলেন, ‘আমি পাকা ঘরের পাশে বেড়া ও বাঁশের রুমে রাত যাপন করছিলাম। পৌনে ৪টার দিকে হঠাৎ কেউ বাইরে হাঁটার আওয়াজ শুনি। এক পর্যায়ে গান পাউডার বা অন্যকিছু দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া মাত্রই ওই অজ্ঞাতব্যক্তি দৌড়ে পালাচ্ছিল। এ সময় আমি ঘর থেকে বের হয়ে দেখি পাকা ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। এক পর্যায়ে পাকা ঘরে থাকা পরিবারের অন্য সদস্যদের ডেকে তুলি। ততক্ষণে জ্বলছিল আমার থাকার ঘর, রান্নাঘরসহ তিনটি বসতঘর। এসময় মসজিদের মাইক দিয়ে আগুন লাগার সংবাদ দিলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলে মূল পাকাঘরসহ অন্য ঘরগুলো রক্ষা পায়’।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন ‘আগুনে আমরা তিন ভাইয়ের কমপক্ষে নগদ টাকাসহ ১৫ লাখ টাকার সম্পদ ভস্মীভূত হয়ে গেছে। পাকা ঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় আমি বাদি হয়ে চিহ্নিত ১৫ জন ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছি’।
থানার এস.আই সাইমুল ইসলাম আগুন লাগার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু জাফর চৌধুরীর বসতঘর ও দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়। এর আগে ৩০ নভেম্বর ভোরে রমজান আলী হাটে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু জাফর চৌধুরীর মালিকানাধীন আরো দুটি দোকান এবং গাউছিয়া ডেকোরেটার্সে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট