চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

অফিস আছে, নেই চিকিৎসক-ওষুধ চন্দনাইশ

প্রাণিসম্পদ কার্যালয়

নিজস্ব সংবাদদাতা হ চন্দনাইশ

৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ

উপজেলার দু’টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের ৩ লক্ষাধিক জনসাধারণের সুষম খাদ্য সরবরাহের জন্য এলাকার কিছু উদ্যোগী যুবক পোল্ট্রি, ডেইরি ফার্ম করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পশু-পাখিদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতাল হিসেবে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে যথাযথ চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে শূন্যতা, প্রয়োজনীয় উপকরণ, ওষুধ সংকটের কারণে দিন দিন স্থবির হয়ে পড়ছে কার্যালয়টি। যুবকের হাতকে কর্মীর হাতে রূপান্তরিত করতে সরকার বিভিন্ন রকম আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি সহজ শর্তে যুব ঋণ বিতরণ করে যাচ্ছে। সে সাথে এ সকল উদ্যোগী যুবক ও খামারিদের বিনা খরচে প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে। এ সকল প্রশিক্ষিত যুবকদের অভিযোগ সরকারিভাবে পাওয়া পশুর ওষুধ ও ভ্যাকসিন বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে পাওয়ার কথা থাকলেও চন্দনাইশ প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এসব ওষুধ বা ভ্যাকসিন দেয়া হয় না। তাছাড়া সরকারি সরবরাহকৃত ভ্যাক্সিন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে না থাকার কথা বললেও উপজেলা সদরের বিভিন্ন মেডিসিনের দোকানে অনায়াসে এ সকল ভ্যাক্সিন পাওয়া যায়। খামারিদের চড়া দামে ওষুধ কিনতে হয়। ফলে তারা সেবা নিতে আসে না সরকারি হাসপাতালে। অসুস্থ গরু, মহিষ, ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ গৃহপালিত প্রাণিদের চিকিৎসকেরা নিজের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা না দিয়ে সহকারি ও ড্রেসার দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকেই। এতে করে সাধারণ মানুষ ও

খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চন্দনাইশে দ্বিতল বিশিষ্ট কার্যালয়ের ৮জন জনবল নিয়ে অফিসটি পরিচালিত হচ্ছে। চন্দনাইশ উপজেলায় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পদটি খালি থাকার কারণে ভেটেনারি সার্জন ডা. মো. আরিফ উদ্দীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার ১টি পদও খালি রয়েছে। চন্দনাইশে ডেইরি খামার ৬১টি, ব্রয়লার ৮৩, লেয়ার মুরগি ফার্ম ৮টি, সোনালী মুরগি ফার্ম ৪টি, ছাগলের ডেইরি ফার্ম ১৬টি, ভেড়ার ফার্ম ২টি রয়েছে বলে জানা যায়। এসব ফার্ম পরিচালনা করে এলাকার একটি বিশাল যুবগোষ্ঠি তাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে চলেছেন। এ সকল যুবকদের অভিযোগ সরকারিভাবে আসা ভ্যাক্সিন ও সরবরাহকৃত ঔষধ তারা যথাযথভাবে পাচ্ছেন না। ফলে চড়া দামে মেডিসিনের দোকান থেকে ক্রয় করতে হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এ এলাকার খামারীরা। মুরগীর খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় ফার্ম মালিকগণ তাদের পালিত মুরগী বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন না। সে সাথে অনেকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ না থাকাকে দায়ী করেছেন। বর্তমান সরকার দেশকে দারিদ্রমুক্ত করতে ছাগল পালন, হাঁস মুরগির খামার, গবাদি পশু পালনে জনগণকে আগ্রহী করছেন এবং প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। কিন্তু সরকারি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অসচেতনতা ও অবহেলার কারণে পশু পালনে আগ্রহ হারাচ্ছে অনেকে। উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে প্রাণিসম্পদের। জানা যায়, এলএসপি প্রকল্পের আওতায় পৌরসভা ব্যতিত প্রতিটি ইউনিয়নে সরকার জনবল নিয়োগ করেছেন। তারা খামারীদের উদ্বুদ্ধকরণ, পশু-পাখি রোগবালাই প্রতিরোধে পরামর্শ দেয়াসহ নানা রকম সহযোগিতা দেয়ার কথা থাকলেও চন্দনাইশে যথাযথভাবে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ খামারীদের। স্থানীয়দের দাবি এ সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সঠিকভাবে কাজ করলে, সরকারের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করলে বেকারত্ব কমার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুবকেরা কার্যকরি ভূমিকা রাখতে পারত। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আরিফ উদ্দীনের সাথে তার মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট