চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

গত সাড়ে ১০ বছরে পৃথিবীতে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৯:৩৫ অপরাহ্ণ

বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের অবদানের প্রশংসা করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা যে শুধু দেশে মেধার স্বাক্ষর রেখেছে তা নয়, মেধার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছে তারা সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। গত অর্ধশতাব্দী ধরে চুয়েট যাদের প্রকৌশলী হিসেবে তৈরি করেছে, তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সমৃদ্ধিতে ভূমিকার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে সুরম্য অট্টালিকা ও অবকাঠামো নির্মাণে অবদান রেখে চলেছে। আজ শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন।

দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে প্রকৌশলীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপুরণের পথে বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত নয়, মধ্যম আয়ের দেশ। পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এদেশে মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ সর্বনিম্ন। এরপরও বাংলাদেশ আজ পৃথিবীকে অবাক করে খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। গত সাড়ে দশ বছরে পৃথিবীতে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ। প্রকৌশলীদের অবদান ও ভূমিকা ব্যতিরেকে এই উন্নয়ন অগ্রগতি কখনো সম্ভবপর হত না।

তিনি বলেন, বৈশ্বিকভাবে আমরা বাঙালিরা হয়তো ধনী নই, কিন্তু আমরা মেধার দিক দিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশ ও জাতি থেকে আমরা ধনী। পৃথিবীর অনেক দেশ ও জাতিগোষ্ঠীর তুলনায় আমরা মেধাবী। ইউরোপের বাইরে প্রথম যিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গাছের প্রাণ প্রথম আবিষ্কার করেন স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু। আজ থেকে বিশ বছর আগে পৃথিবীর সর্বোচ্চ ভবন শিকাগোর সিয়ার্স টাওয়ার এর স্থপতি বাঙালি ড. এফ আর খান। বর্তমানেও পৃথিবীর অনেক সুরম্য অট্টালিকা ও নানা স্থাপনা নির্মাণে যুক্ত আছেন বাংলাদেশ থেকে পাস করা প্রকৌশলীরা।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরের স্বপ্নের কথা বলেছেন। আমাদের সাম্মিলিত প্রচেষ্টা হবে দেশকে সেই স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছানো শুধু নয়, দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও আত্মিকভাবে উন্নত জাতি গঠনের ক্ষেত্রেও স্বপ্নের ঠিকানাকে অতিক্রম করা।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইউরোপে গত একশ বছরে অনেক উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু সেখানে প্রতি একশটির মধ্যে পঞ্চাশটি ভেঙে যাচ্ছে। ইউরোপের কোনো মহাসড়কে যখন দুর্ঘটনা ঘটে, পাশ দিয়ে শতশত গাড়ি চলে যায়, কেউ একপলক তাকায় না। তাদের অনেক মেধাবী সন্তান-সন্ততিরা ভালো স্কুলে পড়ে, তারা অনেক ভালো শিক্ষা পায়, কিন্তু তারা যখন বড় হয় তখন মা-বাবাকে বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে দিয়ে দেয়।

ড. হাছান বলেন, আমরা উন্নয়ন চাই, তবে সমাজকে ইউরোপের মতো সেই জায়গায় নিয়ে যেতে চাই না। ইউরোপে আজকে এগুলোই হচ্ছে মাথাব্যথা। মানুষ প্রচণ্ড আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবে। তার পরিবারকে নিয়েও ভাবে না। এই আত্মকেন্দ্রিকতা আমাদের সমাজ যেন এই অন্ধ অনুকরণের দিকে অগ্রসর না হই এই লক্ষ্যে আমাদের সবার সম্মিলিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন।

পূর্বকোণ/রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট