চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে দ্বন্দ্ব যেন কাটছেই না

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ১০:৫৯ অপরাহ্ণ

 চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও-পাঁচলাইশ) আসনে উপ-নির্বাচন আগামী ১৩ জানুয়ারি। এবার ভোট হবে ইভিএমে। স্থানীয় সাংসদ জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদলের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়েছে। জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা বাদল জোটের সমীকরণে এই আসনটিতে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। নৌকা প্রতীক নিয়ে টানা তিনবার নির্বাচিতও হয়েছেন। যদিও এখানে তার দলের সাংগঠনিক অবস্থান বলতে গেলে শূন্যের কোটায়। ৭ নভেম্বর তিনি ভারতের ব্যাঙ্গালোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার পর থেকে কে হচ্ছেন এই আসনে তার উত্তরসূরি সেই আলোচনাই এখন তুঙ্গে। তথ্যসূত্র : সময়ের আলো।

আ. লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আজ ৫ ডিসেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে ফরম সংগ্রহ ও জমা দেয়ার জন্য। মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা বেড়েছে অনেক। মনোনয়ন পেলেই নিশ্চিত জয় এমন ধারণা থেকে সবাই মরিয়া মনোনয়ন পেতে।

আসনটিতে ১৯৭৩ সালে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম কফিল উদ্দীন জিতেছিলেন। এরপর থেকেই আসনটি আ. লীগের হাতছাড়া। এবার যেন আসনটি আর হাতছাড়া না করা হয় সেই আওয়াজটি দলের সর্বস্তরে উঠেছে জোরেশোরে। অনেকে আশায় বুকও বেঁধেছিলেন। কিন্তু তারপরেও মনের ভেতরের খচখচানি যেন দূর হচ্ছে না। দ্বিধা-দ্বন্দ্বের দোলাচলে দোদুল্যমান নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে জাতীয় পার্টি আগেভাগে এই আসনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দীন বাবলুর নাম তাদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করায় মেরুকরণ হচ্ছে কি না তা নিয়ে দ্বন্দ্বে ভুগছেন আ. লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।

জিয়া উদ্দীন বাবলু চট্টগ্রাম-৯ (কোতয়ালি-বাকলিয়া) আসনে সংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন ২০১৪ সালে। সেবার আ. লীগের সংসদ নুরুল ইসলাম বিএসসিকে অফ রেখে তার আসনটিই বাবলুকে দেয়া হয়েছিল জোটের স্বার্থে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বাবলুকে আর ছেড়ে দেয়া হয়নি আসনটি। সেখানে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ হন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এবার জোট প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টি বাবলুর জন্য চট্টগ্রাম-৮ আসনটি পেতে ব্যাপক দেনদরবার শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি কোনো কারণে তাকে আসনটি ছেড়ে দেন তাহলে এবারও আ.লীগের ঘরে আসছে না আসনটি এমন শঙ্কায় পেয়ে বসেছে নেতাকর্মীদের।

আসনটিতে প্রয়াত বাদলের স্ত্রী সেলিনা খানের মনোনয়ন প্রাপ্তির সম্ভাবনার কথাটিও আলোচিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। বাদলের পরিবারের প্রতি সহানুভূতির দান হিসেবে মনোনয়ন সেলিনা খানও পেতে পারেন এমন আলাপও আছে।

তারপরও আ. লীগ চায় আসনটি যেন এবার নিজেদের কাছে আসে। ঘরের ছেলেই পাক মনোনয়ন। এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন দলের দক্ষিণ জেলা সভাপতি মোসলেম উদ্দীন আহমদ। তার বাড়ি বোয়ালখালীতে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দীর্ঘদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসলেও কখনও সংসদে যাননি। কোনো সরকারি দায়িত্ব পালন করেননি। জীবন সায়াহ্নে এসে এবার যেন মনোনয়নটি তাকে দেয়া হয় সেই আর্জি তিনি জানিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আরও আছেন সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, নগর আ. লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী, বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহসভাপতি এসএম আবু তৈয়ব, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদসহ অনেকেই। বিএনএফ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদও তৎপর হয়ে উঠেছেন জোটের মনোনয়ন প্রাপ্তির আশায়। ২০১৪ সালে তিনি ঢাকা মহানগরীর গুলশান আসনে জোট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার বাড়ি বোয়ালখালী সে বিবেচনায় তিনি মনোনয়ন চাইলেও এখানে তার দলের নামগন্ধও নেই। শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্যে জুটছে আ. লীগের মনোনয়ন তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আর কয়েকটি দিন।

অন্যদিকে বিএনপি তাদের গতবারের প্রার্থী দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানকেই এবারও প্রার্থী করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে দলীয় নেতা এরশাদ উল্লাহও এখানে মনোনয়ন প্রত্যাশী।

 

পূর্বকোণ-রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট