সীতাকু-ের উত্তর সলিমপুর মৌজায় উপকূলীয় বনাঞ্চলের মধ্যে বিবিসি স্টিল নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে শিপইয়ার্ড নির্মাণের জন্য দেওয়া একসনা লিজ ৬ মাসের জন্য বাতিল করেছে হাইকোর্ট। একই সাথে সেখানে শিপইয়ার্ড নির্মাণের কাজও বন্ধের নির্দেশ দেন আদালত। পাশাপাশি এই লিজ কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উপর রুল জারি করে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৩-৮৪ অর্থ বছরে সীতাকু-ের উত্তর সলিমপুর মৌজায় বন বিভাগ ৪০০ একর ম্যানগ্রোভ বাগান গড়ে তোলে। সেখানে বর্তমানে ১৫-২০ হাজার গাছের ঘন বন আছে। কিন্তু এই জায়গার মধ্যে ৭.১০ একর বনভূমিকে সমুদ্র সিকস্তি ভূমি দেখিয়ে উপজেলা ভূমি অফিস বিবিসি স্টিল লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মো. কাশেম রাজা প্রকাশ এম.এ কাসেম রাজা প্রকাশ রাজা কাসেমকে এক সনা লিজ প্রদান করে। ১৪২৬ সালের ৩০ চৈত্র এই লিজের মেয়াদ শেষ হবার কথা। এদিকে এই লিজটি পেয়ে বিবিসি স্টিলের মালিক মো. আবুল কাসেম প্রকাশ রাজা কাসেম বনের সরকারি গাছপালা কেটে ও ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে সেখানে শিপইয়ার্ড নির্মাণ শুরু করেন। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল।
স্থানীয় এমপি আলহাজ দিদারুল আলম সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে ডিও লেটার দিয়ে লিজ বাতিলের অনুরোধ জানান। একই দাবিতে সীতাকু- ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন, মেম্বার মাইন উদ্দিনসহ এলাকাবাসী দফায় দফায় সংবাদ সম্মেলন করেন। কিন্তু বিবিসি স্টিল বনের স্বার্থ, গেজেটের নিষেধাজ্ঞা কিছুই না মানার কারণে চট্টগ্রামের উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. গোলাম মাওলা বাদি হয়ে আদালতে বিবিসি স্টিলের স্বত্বাধিকারী মো. আবুল কাসেমকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন। গতকাল সোমবার হাইকোর্টে এই রিটের শুনানি করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের যৌথ বেঞ্চ। এতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ও সাঈদ আহমেদ কবীর (সৌরভ)। আইনজীবী সাঈদ আহমেদ কবীর সাংবাদিকদের বলেন, শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিবিসি স্টিলের লিজ আগামী ৬ মাসের জন্য বাতিল করেন। পাশাপাশি এই লিজ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উপকূলীয়) মো. গোলাম মাওলা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সলিমপুর সাগর পাড়ে বন বিভাগের জায়গা ও হাজার হাজার গাছের মধ্যে বিবিসি স্টিল নামক প্রতিষ্ঠানটি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড নির্মাণের চেষ্টা করায় আমি নিজেও এই প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছি এবং লিজ বাতিলের জন্য আবেদন করেছি।