চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

বোয়ালখালীতে ৬ জনকে আসামি করে মামলা, গ্রেপ্তার ২

ভাতিজাদের হাতে চাচা খুন

নিজস্ব সংবাদদাতা হ বোয়ালখালী

১৭ নভেম্বর, ২০১৯ | ৩:৫০ পূর্বাহ্ণ

উপজেলার পোপাদিয়া ইউনিয়নের আকুবদ-ী গ্রামে ভাতিজাদের মারধরে মো. বাদশা মিয়া (৪৫) নামের এক দিনমজুর খুন হয়েছেন। তিনি এলাকায় মৃত মানুষের কবর খুঁড়তেন বলে সকলের কাছে খুব প্রিয় ছিলেন। গতকাল (শনিবার) সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. বাদশা মিয়া আকুদ-ী গ্রামের মোহাম্মদ হোসেন ফকির বাড়ির মৃত আবদুস ছালামের ছেলে। তিনি ২ মেয়ে ও ১ ছেলের জনক। এ ব্যাপারে থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের স্ত্রী শাহেদা বেগম। তবে এদের মধ্যে এজাহার নামীয় দুইজন ইউছুপ ও আরমানকে মামলা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তবে ফাঁসানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছের মামলার বাদি।

থানার পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ফারুকি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে বাদশা মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। তৎক্ষণাৎ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এতে এজাহার নামীয় দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন, ফাহিমা আকতার রিমা (২০) ও জান্নাতুল ফেরদৌস (৪৪)। ১মজন হত্যা মামলার প্রধান আসামি বখতিয়ার হোসেনের স্ত্রী, দ্বিতীয়জন তাঁর মা। অভিযান অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, ‘যে দু’জন নিয়ে কথা উঠছে তা তদন্তের বিষয়। বাদি এজাহারে উল্লেখ করেছেন তাদের নাম, তদন্তে যদি প্রমাণ হয় তারা নিরাপরাধী, তবে খালাস পেয়ে যাবেন’।
নিহতের বোন হোসনে আরা বেগম জানান, সকাল ১১টার দিকে ভাতিজা বখতেয়ার হোসেন (২৬), মো. মিজান (১৬) ও ভাইঝি ফেরদৌস বেগমের সাথে তার সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে ঝগড়া হয়। এসময় বাদশা মিয়া ভাতিজাদের ঝগড়া করতে নিষেধ করলে তারা বাদশার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের মারধরে বাদশা নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

নিহতের স্ত্রী শাহেদা বেগম বলেন, ‘জমি বিরোধে এ হত্যাকা-। জমি বিক্রির জন্য তিন লক্ষ টাকা নিয়ে এখনও জমি রেজিস্ট্রি দেয়নি আমার স্বামীর ভাই ইউনুছ মিয়া। উল্টো শনিবার (গতকাল) টিনের চাল বাড়িয়ে আমার ঘর দখল করার জন্য কাজ করেন তিনি। এতে বাধা দিলে আমার ননদ হোসনে আরার সাথে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এসময় আমার স্বামী নুরুল হকের দোকান এলাকা থেকে এসে ঘটনা জানতে চাইলে তাকে উপর্যুপরি ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে ইটের আঘাতে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এতেই তাঁর মৃত্যু হয়’।

স্থানীয়রা জানায়, বাদশারা ৩ ভাই ও দুই বোন। তাদের মধ্যে হোসনে আরা বেগম বাপের বাড়িতে ভাইদের সাথে বসবাস করেন। তারা বলেন, শুনেছি ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে ঘটনায় ইউছুপ ও আরমান নামের দু’জন ছিল না। তাদের সাথে পূর্ব শত্রুতা রয়েছে নিহতের পরিবারের। এ কারণে তারা মামলায় আসামি হতে পারে।

স্থানীয় চেয়ারম্যান এস এম জসিম উদ্দিন জানান, ঘটনানাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এর পূর্বে জমি বিরোধ নিয়ে পরস্পরের মামলা রয়েছে। একাধিকবার তা নিরসন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইউনুছ মিয়ার পরিবারের বিরুদ্ধে নিহতের পরিবারের অভিযোগ যথাযথ। তবে ইউছুপ ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মনে হচ্ছে। আমি ঘটনায় সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি ফের নিশ্চিত হয়েছি। পূর্ব শত্রুতা থাকলেও তাদের হত্যা মামলায় জড়ানোর বিষয়টি তদন্তের দাবি করছি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট