চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

নির্ধারিত আয় নেই, তাও তিনি কোটিপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ নভেম্বর, ২০১৯ | ৮:৪০ অপরাহ্ণ

রোকসানা খানের নেই কোনো চাকরি কিংবা ব্যবসা বা নেই কোনো ভালো আয়ের উৎস। তবুও তিনি কোটিপতি। তিনি আলাদিনের এই চেরাগ পান তাঁর প্রয়াত স্বামী মো. হাবিবুর রহমান খানের মাধ্যমে। তাঁর স্বামী ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চিফ হাইড্রোগ্রাফার। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাড়ে ১১ বছর তদন্ত শেষে আদালতে দেয়া অভিযোগপত্রে বলেছে, স্বামীর উপার্জিত অবৈধ টাকায় ফ্ল্যাট, গাড়ি, জমি ও নগদ টাকার মালিক হয়েছেন রোকসানা।

নগরীর ডবলমুরিং থানায় রোকসানা খানকে আসামি করে একটি মামলায় গত বুধবার (১৩ নভেম্বর) আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। বন্দরের সাবেক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান খান মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক হুমায়ুন কবীর জানান, তদন্তে রোকসানা খান টিউশনি, ডিশ ব্যবসা ও বুটিকের দোকান থেকে আয়ের কথা বললেও দালিলিক কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি । স্বামী হাবিবুর রহমানের মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ আয়ের মাধ্যমে  ১ কোটি ৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকার ফ্ল্যাট, গাড়িসহ বিভিন্ন সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি।

দুদক চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ ২০০৮ সালের ২৯ জানুয়ারি বাদি হয়ে ডবলমুরিং থানায় দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় রোকসানা খান ও তাঁর স্বামী হাবিবুর রহমান খানকে আসামি করা হয়। এরপর দুজনে গ্রেপ্তার হন। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। মামলা হওয়ার পর উচ্চ আদালত থেকে আসামিরা স্থগিতাদেশ নেন। ২০১৩ সালে এটি প্রত্যাহার হলে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। ওই বছরের ৯ মে মারা যান হাবিবুর রহমান। দুদকের মোট তিনজন কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত করেন।

দুদকের অভিযোগপত্রে  উল্লেখ করা হয়, রোকসানা তাঁর নামে ঢাকায় ৪ কাঠা জমি, ৬৪ লাখ টাকা মূল্যের ১ হাজার ৪৫৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট এবং ২ হাজার ২শ বর্গফুটের ঢাকায় আরেকটি ফ্ল্যাট, ৮ বছর মেয়াদি সাড়ে ৭ লাখ টাকার প্রতিরক্ষা সঞ্চয়পত্র, ৯ লাখ টাকা দামের সঞ্চয়পত্র, ১৩ লাখ টাকা দামের একটি ব্যক্তিগত গাড়ি, ৬ লাখ ৮৭ হাজার নগদ টাকা ও অন্যান্য জায়গায় বিনিয়োগ করা ৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা সন্ধান পাওয়া যায় বলে জানান দুদক।

এ সম্পদগুলো যাতে হস্তান্তর করা না যায় আদালতের নির্দেশে জব্দ রাখা হয়েছে। তদন্তে রোকসানার নামে থাকা ৬৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার স্থাবর ও ৩৯ লাখ ৯৩ হাজার অস্থাবর সম্পত্তিসহ মোট ১ কোটি ৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকার সম্পদ পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি।

পূর্বকোণ-রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট