চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

বিশ^ ডায়াবেটিস দিবসে চিকিৎসকরা

সচেতনতায় পারে বাঁচাতে

প্রতিটি পরিবার রয়েছে ডায়াবেটিস ঝুঁকিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:০৯ পূর্বাহ্ণ

বর্তমানে খাদ্যাভ্যাসের কারণে প্রতিটি পরিবারই ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। ডায়াবেটিস যে পরিবারে রয়েছে তাদেরও উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাতে হয়। এর থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুরাও। বর্তমানে শিশুরাও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে একমাত্র সচেতনতায় পারে এ রোগ থেকে বাঁচাতে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ^ ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে এসব তথ্য জানায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা জানান, বাংলাদেশে ১০ মিলিয়ন ডায়াবেটিস রোগী আছে। প্রতি ১০ জনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রতি বছর বাংলাদেশের ৬.৪ শতাংশ রোগী ডায়াবেটিসে মারা যায়। তবে একমাত্র সচেতনতার মাধ্যমে ৫০ ভাগ ডায়াবেটিস

প্রতিরোধ করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে শুধু ডায়াবেটিস রোগী নয়, পরিবারের সবাইকে ডায়াবেটিসের বিষয়ে জানতে হবে। বিশেষ করে ডায়াবেটিসের লক্ষন, চিকিৎসা বিষয়ে সঠিক জ্ঞান, ও জটিলতা নিরসনের উপায়গুলো। বিশেষ করে শিশুদের অধিক স্থূলতা এখন শিশুদের ডায়াবেটিস অন্যতম কারণ। শুধুমাত্র ফাস্ট ফুড নয়, শারীরিক ব্যায়ামের ঘাটতি কারণ বলেও উল্লেখ করেন চিকিৎসকরা।

চমেক হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ : বিশ^ ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজী বিভাগের উদ্যেগে সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মজিবুল হক খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. শামীম হাসান, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মহসিন উদ্দিন আহমেদ।

‘আসুন পরিবারকে ডায়াবেটিস মুক্ত রাখি’ প্রতিপাদ্যের উপর মূল প্রবন্ধ আলোচনা করেন এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. ফারহানা আক্তার। ডায়াবেটিস ভবিষ্যতে মহামারী আকার ধারণ করতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বর্তমানে পৃথিবীতে ৪২৫ মিলিয়ন ডায়াবেটিস রোগী আছে। যা ২০৩০ সাল নাগাদ ৫২২ মিলিয়নে উন্নত হবে এবং প্রতি ১১ জনে একজন ডায়াবেটিস রোগী পাওয়া যাবে। এর মধ্যে ১ মিলিয়ন এর উপর আছে শিশুর ডায়াবেটিস রোগী। প্রতি ছয় জনের মধ্যে একজন গর্ভবতী ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অন্যদিকে শিশুরাও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে শিশুরা স্মার্ট ফোনে আসক্ত হয়ে পড়েছে। যার কারণে তাদের ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে। একসময় খেলার মাঠে খেলাধুলায় থাকলেও তারা এখন বাসা বন্দী হয়ে পড়াও এর অন্যতম কারণ। তাই এ বিষয়ে পরিবারের পাশাপাশি সবাইকে সচেতন হতে হবে।

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস জেনারেল হাসপাতাল : চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস জেনারেল হাসপাতালের উদ্যোগে পালন করা হয়েছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য এক র‌্যালী বের করা হয়। পরে প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক পুষ্টিবিদ হাসিনা আকতার লিপি এবং সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন রহমান চৌধুরী। এসময় তারা বলেন, খাদ্যাভ্যাসের কারণে প্রতিটি পরিবারই রয়েছে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে। যেসব পরিবারে ডায়াবেটিস আছে তাদেরও উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাতে হয়। নগরায়ন ও পরিবর্তিত জীবনধারণের কারণে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একইভাবে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য সকলকে সচেতন হতে হবে।

সমিতির নির্বাহী সদস্য কর আইনজীবি জয়শান্ত বিকাশ বড়–য়া বলেন, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয় এবং এই সেবার মান ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডায়াবেটিস সমিতির অন্য ৪টি শাখা হাসপাতালেও বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়েছে।
যুব রেড ক্রিসেন্ট সরকারি সিটি কলেজ : যুব রেড ক্রিসেন্ট সরকাার সিটি কলেজ ইউনিটের উদ্যোগেও পালিত হয়েছে দিবসটি। এসময় কলেজের ডায়বেটিস আক্রান্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের বিনামূল্যে রক্তের শর্করার পরিমাণ নির্ণয় ও করণীয়তা সম্পর্কে ডাক্তারের পরামর্শ প্রদান করা হয়। এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মঞ্জুর আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক আহমেদ ছোবহান, হোছাইনুল আবেদীন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট