চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সাতবাড়িয়া অলি আহমদ কলেজে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন

১৪ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:০৮ পূর্বাহ্ণ

উপজেলার সাতবাড়িয়া অলি আহমদ বীর বিক্রম কলেজে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, ১৯৮৪ সালে এলাকার শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে তৎকালীন সরকার সাতবাড়িয়া-বৈলতলী দায়েমিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীতে বিএনপি সরকারের শাসনামলে কর্নেল অলি নাম পরিবর্তন করে তার নিজ নামে সাতবাড়িয়া অলি আহমদ বীর বিক্রম কলেজ হিসেবে নামকরণ করেন। শুরু থেকে কলেজে শিক্ষার্থী সংকট ছিল। গত বছর ১ ডিসেম্বর কলেজ অধ্যক্ষ সুজিত ঘোষ পদত্যাগ করার পর জ্যেষ্ঠতা লংঘন করে সিনিয়র ৩ শিক্ষককে বাদ দিয়ে

জীববিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। ৭ ডিসেম্বর কলেজ পরিচালনা পরিষদের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠতা লংঘনের অভিযোগ আনেন বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শিখা রানী দে। গত ১৬ এপ্রিল কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, ৩ জুলাই শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক বরাবরে বিধি মোতাবেক জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দায়িত্ব প্রদানের আবেদন জানান তিনি। আবেদনের প্রেক্ষিতে বোর্ড কর্তৃপক্ষ কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ করেন এবং তারা শোকজের জবাবও দিয়েছেন। কিন্তু সভাপতির জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় পুনরায় সভাপতি বরাবরে চিঠি প্রেরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক শিখা রানী দে।

এ কলেজে চলতি শিক্ষাবর্ষে মানবিকে ৬৪, ব্যবসায় শিক্ষায় ১৮, বিজ্ঞানে ২ জনসহ ৮৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অন্যদিকে ২য় বর্ষে মানবিকে ৪৫, ব্যবসা শিক্ষায় ১৪, বিজ্ঞানে ২ জনসহ ৬১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এসকল শিক্ষার্থীর জন্য ১৪ জন শিক্ষক, ২ জন প্রদর্শক, ২য়, ৩য়, ৪র্থ শ্রেণির ৪ জন কর্মচারীসহ ২০ জনের বেতন-ভাতা ৫ লক্ষ ১৩ হাজার ১ শ’ টাকা। বিজ্ঞান বিভাগে ২টি বর্র্ষে ৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য গণিত, জীববিদ্যা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বিভাগে ৪ জন শিক্ষক ও ২ জন প্রদর্শক রয়েছেন। এসকল শিক্ষক ও প্রদর্শকদের বেতনভাতা ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৪ শ’ টাকা সরকারকে প্রদান করতে হয়।

২০০৬ সালের ১৯ অক্টোবর বোর্ড কর্তৃপক্ষ ৩০ জুন ২০০৮ পর্যন্ত কলেজের অস্থায়ী স্বীকৃতি নবায়ন করে। দীর্ঘ ১১ বছর কলেজের স্বীকৃতি নবায়ন করা হয়নি বলে জানা যায়। এ সকল ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত কলেজ অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম বলেছেন, পূর্বের অধ্যক্ষ মহোদয় স্বীকৃতির জন্য আবেদন না করায় তিনি দায়িত্ব পেয়ে ৪ মাস আগে স্বীকৃতি নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন। বোর্ড কর্তৃপক্ষ কলেজ পরিদর্শন করে কিছু শর্ত দিয়েছে। তা ইতিমধ্যে পুরণ করে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তাছাড়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের ব্যাপারে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের বিষয়ে তিনি বলেন, পরিচালনা পরিষদ তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন এবং তিনি তা পালন করছেন। শিক্ষার্থী সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, সারাদেশে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীর সংকট রয়েছে। কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কর আইনজীবী আসহাব উদ্দিন বলেছেন, পূর্বের অধ্যক্ষ বিভিন্ন সময়ে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সহকারী অধ্যাপক নুরুল ইসলামকে প্রয়োজনে দায়িত্ব দিতেন। সে হিসেবে তার পদত্যাগের পর কলেজ পরিচালনা পরিষদ অধ্যাপক নুরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছে। তাছাড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলে বিধি মোতাবেক অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হবে, বলেছেন কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট