চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সৌদি আরবে নারীকর্মী না পাঠানোর দাবি উঠল সংসদে, তোপের মুখে মন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

১২ নভেম্বর, ২০১৯ | ১০:১৬ অপরাহ্ণ

সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মীদের শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে সাংসদদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। একইসঙ্গে সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী পাঠানো বন্ধ করার দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। আজ মঙ্গলবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনজন সাংসদ এই দাবি তোলেন।

সাংসদদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মীদের সমস্যার বিষয়টি নিয়ে সরকারও চিন্তিত। তাঁদের প্রশিক্ষণসহ নানা সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর একেবারেই সম্ভব না হলে তখন নারী কর্মী না পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

সম্পূরক প্রশ্নে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বলা হচ্ছে রিক্রুটিং এজেন্সি বিদেশে কর্মী পাঠায়। তাহলে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বটা কী? মা-বোনদের আমরা পাঠিয়ে দিচ্ছি। ওখান থেকে যৌন নির্যাতনসহ নানা রকম অন্যায়-অত্যাচারের শিকার হয়ে অবশেষে লাশ হয়ে ফিরে আসেন। তাঁদের সবারই পোস্টমর্টেমে লেখা থাকে স্বাভাবিক মৃত্যু। সবাই একই রকম রিপোর্ট। এটা তারা (সৌদি আরব) করে। ওখানে পোস্টমর্টেম যে হয়, সেটাও বাংলাদেশ দূতাবাস দেখে না। মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ নেয় না। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো পাঠিয়েই খালাস।

ফিরোজ রশীদ বলেন, এভাবে আমাদের মা-বোনদের নিয়ে কি ব্যবসা করতে পারি? স্বাধীন দেশ হিসেবে আমাদের সম্মান আছে, ইজ্জত আছে। আমরা তো এখন তলাবিহীন ঝুড়ি নই। কেন কয়েকটি টাকার জন্য তাঁদের পাঠাতে হবে? অবিলম্বে এটা বন্ধ করতে হবে।

জবাবে মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন,  গত কয়েক মাসে ১৬০টি ট্রাভেল এজেন্সির লাইসেন্স স্থগিত, তিনটি লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। দোষীদের জরিমানা করা হয়েছে। সরকার জিরো টলারেন্সে আছে। তিনি বলেন, আমরা আইন করে দিচ্ছি, যারা বিদেশ পাঠাবে, সৌদি আরবে ওদের কাউন্টার পার্ট রিক্রুটিং এজেন্সির সম্পূর্ণ ডিটেইলস আমাদের দিতে হবে, যাতে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারি।

মন্ত্রী বলেন, গৃহকর্মীর বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ে বেশি সরকার চিহ্নিত। এ ব্যাপারে অনেক পদক্ষেপ ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে। কয়েক দিন আগে ঢাকাস্থ সৌদি আরব দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে ডেকে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সৌদি আরবে রাষ্ট্রদূতকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ওই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এগুলো তোলার জন্য। ২৬ থেকে ২৭ নভেম্বর জয়েন্ট টেকনিক্যাল গ্রুপের বৈঠকেও এই প্রশ্নগুলো তোলা হবে।

মন্ত্রী বলেন, নারী কর্মীদের কোনো ব্রিফিং, প্রশিক্ষণ না দিয়ে পাঠানো হয়, সেটা দেখতে হবে। এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে, গৃহকর্মী পাঠাতে হলে ন্যূনতম এক মাসের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থাসহ তাঁদের অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়ে অবহিত করার কাজ শুরু হয়েছে। তিনি আশা করেন, এই সমস্যার সমাধান হবে।

পূর্বকোণ/ এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট