চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

চলতি মৌসুমেও বাম্পার ফলনের আশা

একমণ ধানেও মেলে না কামলা দুঃখ গেলো না কৃষকের

ফটিকছড়ি আমন ধান কাটা শুরু আসন্ন বোরো’র আবাদ নিয়ে নাভিশ^াস

বিশ্বজিৎ রাহা, ফটিকছড়ি

৯ নভেম্বর, ২০১৯ | ৪:১১ পূর্বাহ্ণ

ফটিকছড়িতে চলতি আমনেও বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। কিন্তু ধানের উপযুক্ত বাজারমূল্য না থাকায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে ফটিকছড়ির কৃষকেরা। বর্তমানে একমণ ধান বিক্রি করে একজন কৃষি শ্রমিক বা কামলার একদিনের বেতন হচ্ছে না বলে জানান অনেক কৃষক। এ কারণে অনেকেই আসন্ন বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ না করার কথা ভাবছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে ফটিকছড়ির বিভিন্ন বিলে কিছু কিছু আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লিটন দেবনাথ বলেন, এ বছর চলতি আমন মৌসুমে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। তার বিপরীতে আমন চাষাবাদ হয়েছে ২১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার ছেয়ে ৫শ হেক্টর কম। আবাদ কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, ধানের দাম বর্তমানে যা আছে তাতে কৃষকের লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচও উঠে আসছে না। তাই কৃষকরা দিনে দিনে ধান আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

উপজেলার পাইন্দং এলাকার কৃষক মো. সেকান্দর, ফরিদ মিয়া বাবুল, আবুল কাসেম, উত্তর ধুরুং এলাকার কৃষক জানে আলম, শাহ আলম, মো. নুরুচ্ছাফা কৃষক বলেন, গত বোরো মৌসুমে কৃষকের ঘরে তোলা বোরো ধান (বি আর ৫৮, বিআর ১৭, বিআর ২৯ প্রভৃতি জাতের ধান) বর্তমানে সাড়ে ৫শ থেকে ৬শ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ একজন কৃষি শ্রমিকের বর্তমান একদিনের বেতন ৬ থেকে ৭শ টাকা। ফলে একজন কৃষককে তার একজন শ্রমিকের বেতন দিতে এক মণেরও অধিক ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। তাদের আশঙ্কা বর্তমানে ঘরে তোলা আমন ধান বাজারে এলে ধানের দাম আরো কমে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে উল্লেখিত কৃষকরা আসন্ন বোরো মৌসুমে তাদের জমি আবাদ না করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে পাইন্দং এলাকার কৃষক মো. সেকান্দার বলেন, জমি আবাদ করে লাভ না হতে পারে কিন্তু লোকসান কোত্থেকে দেবো ? কাজেই আবাদ না করে জমি খালি রেখে দিলে লোকসানের হাত থেকে তো বাঁচা যাবে। এটা যেন এ এলাকার অনেক কৃষকের মনের কথা।

এদিকে ফটিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লিটন দেবনাথ বলেন, এবছর বন্যায় আমন চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, এছাড়া পোকা মাকড়ের উৎপাতও কম থাকার কারণে এ বছরও ধানের বাম্পার ফলন হতে যাচ্ছে। তিনি চলতি মৌসুমে ফটিকছড়িতে ৯২ হাজার মেট্রিকটন আমন ধান উৎপাদন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে ধানের দাম কম হওয়ার ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি। সরকার যদি ধানের দাম নিয়ে জরুরি পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আসন্ন বোরো মৌসুমে অনেক কৃষক বোরো আবাদের মাঠে নামবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট