চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ওষুধের পাশর্^প্রতিক্রিয়ায় মৃত্যুমুখে শিশু ইয়ামিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

৮ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:৫১ পূর্বাহ্ণ

ওষুধের পাশর্^প্রতিক্রিয়ায় নগরীর ছোটপুল সিটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্র মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তার নাম ইয়ামিন। বর্তমানে সে ঢাকার এপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। ইয়ামিন ছোটপুল ব্রিকফিল্ড রোড এলাকার ইয়াকুবের পুত্র। ইয়ামিনের চাচা এম রহমান বাবুল পূর্বকোণকে

জানান, গত ৩১ অক্টোবর স্কুলে ছিলো ইয়ামিন। হঠাৎ চোখে যন্ত্রণা শুরু করলে বাসায় চলে আসে। ওইদিন স্থানীয় ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ জাফর হোসাইনকে দেখানো হয়। তিনি পবভধপষধা ৫০০সম, ংড়ষরাড়, ীুৎবষ এবং হধঢ়ধ টেবলেট দেন। অভিযোগ, কোন রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই চিকিৎসক ইয়ামিনকে এন্টবায়োটিক প্রয়োগ করেন। ওষুধ সেবনের পর পুরো শরীরে লাল র‌্যাশ দেখা দেয়। অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হলে প্রথমে ইসলামিক ব্যাংক হাসপাতাল পরে ২ নভেম্বর আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে ৪ নভেম্বর ঢাকা এপোলো হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। তার কিডনি এবং লিভার অকেজো হয়ে গেছে। শরীরের সমস্ত চামড়া পুড়ে গেছে। এপোলো হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ঔষধের পার্শ¦প্রতিক্রিয়ায় ইয়ামিনের এই অবস্থা। প্রস্রাবের সাথেও রক্ত বের হচ্ছে। আল্লাহর উপর ভরসা করা ছাড়া কোন উপায় নেই। এমন খবরে ইয়ামিনের পরিবার, স্বজন এবং এলাবাসীর মাঝে হতাশা এবং ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

অপরদিকে, চিকিৎসা খরচ চালাতেও হিমশিম খাচ্ছে তার পরিবার।

ইয়ামিনের চাচা জানান, নিয়মিত স্কুল, কোচিং যাওয়ার পাশাপাশি আসন্ন পরীক্ষা নিয়ে ভালভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইয়ামিন। অজানা রোগে কাল বৈশাখী ঝড়ের মত ল-ভ- হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার।

এদিকে, জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, বিশে^ প্রতিবছর ১০ থেকে ৫০ জন এই ধরনের রোগী পাওয়া যায়। তবে কোনও চিকিৎসকের পক্ষেই বোঝা সম্ভব নয় কী কারণে এমন মেডিকেল ইমারজেন্সি তৈরি হয়ে যায়। সাধারণ এন্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে সবার এলার্জি প্রোফাইল টেস্টের পরিকাঠামো এখনও দেশে গড়ে ওঠেনি। ফাস্টফুড খাওয়ার কারণে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াই স্টিভেন জনসন সিন্ড্রোমের একটি কারণ হতে পারে। এই রোগ এত দ্রুত ত্বক ও শরীরের ভিতরকার মিউকাস পুড়িয়ে দেয় যে শুরুতেই দমন করা না-গেলে মাল্টি-অর্গ্যান ফেলিওরে মৃত্যু অনিবার্য। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ২০১২ সালে এই ধরনের একটি রোগী পাওয়া গিয়েছিল। পরে আরো একটি রোগী পাওয়া যায়। অবশ্য বিরল রোগে আক্রান্ত দুই রোগী ত্বরিত চিকিৎসা পান এবং প্রাণে বেঁচে যান।

এদিকে, ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ জাফর হোসাইনের বিরুদ্ধে হালিশহর থানায় ইয়ামিনের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওবায়দুল হক জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে ডা. জাফরের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট