চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

শপিংমলে কাস্টমার সেজে চুরি

অধরা ‘ভিআইপি মোবাইল চোর’ সিন্ডিকেট

বেশ কয়েকটি চুরির ভিডিও ভাইরাল নিজ জেলার বাইরে সক্রিয় তারা তাদের বসবাস কক্সবাজার শহরে

আরফাতুল মজিদ, কক্সবাজার

৮ নভেম্বর, ২০১৯ | ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শপিংমলে মোবাইল চুরি করে কক্সবাজার শহরে বসবাস করছে একটি ‘ভিআইপি সিন্ডিকেট’। সিন্ডিকেটের প্রতিটি সদস্যের বাসা কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন জায়গায় হলেও তারা মোবাইল চুরি করে কক্সবাজার জেলার বাইরে। নির্দিষ্ট অভিযোগ বা সঠিক নজরদারি না থাকায় এই সিন্ডিকেটটি আইনের আওতায়ও আসছে না। বরাবরের মতো তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। দেশের বিভিন্ন শপিংমল থেকে মোবাইল চুরির ভিডিওতে সিন্ডিকেটের সদস্যদের সনাক্ত করা হয়েছে। ওই সিন্ডিকেটে প্রায় ৮ থেকে ১০ জন সদস্য রয়েছে। তাদের বাড়ি কক্সবাজার শহরে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোবাইল চুরির সিন্ডিকেটের সদস্যরা যেকোন মোবাইল মার্কেটে হানা দেয় ৮ থেকে ১০ জন মিলে। তারা প্রথমে একটি দোকানকে টার্গেট করে। এরপর মোবাইল কেনার কথা বলে প্রথমে দুইজন সদস্য একটি দোকানে ঢুকে। দোকানদার তাদের বিভিন্ন মডেলের মোবাইল দেখাতে থাকে। ওই সময়ে বাকি কয়েকজন সদস্য ক্রেতা সেজে দোকানের সামনে ঘুরাঘুরি করতে থাকে। আর কয়েকজন একবার দোকানে ঢুকে আবার বের হয়। তারা দোকানদারকে বিভিন্নভাবে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করে। যাতে অন্য কোন কাস্টমার ওই দোকানে ঢুকতে না পারে। তারা দোকানের সামনে বা ভিতরে একজন আরেকজনকে অপরিচিত ভাব দেখায়। ওই সময় যদি দোকানদার কোন কারণে মোবাইল বা অন্য কোনো মালামাল দেখাতে ব্যস্ত থাকে-ঠিক তখনিই কৌশলে একটি মোবাইল নিয়ে একজন সটকে পড়ে। এরপর মোবাইল পছন্দ হয়নি বা দাম বেশি কিংবা কোন অজুহাত দিয়ে বাকি সদস্যরা আস্তে আস্তে ওই মার্কেট ত্যাগ করে। পরে দোকানদার যদি মোবাইল খোঁজে না পায় তাহলে সিসিটিভি ক্যামরা চেকিং করে। তাতেই দেখা যায় ক্রেতা সেজে মোবাইল চুরি করেছে চক্রটি। তাদের প্রতিজনের বাড়ি কক্সবাজর শহরের বিভিন্ন এলাকায়।

ভিডিও ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা হলো- কক্সবাজার বাস টার্মিনালের পশ্চিম পাশে লারপাড়া এলাকার মৃত সোনা আলীর ছেলে ইমরান, শহরের ঘোনার পাড়া এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ইমন, আব্দুল্লাহ, আব্দুস সোবাহান, বাংলা বাজার এলাকার আমান উল্লাহর ছেলে জাহাঙ্গীর, কলাতলী হাইওয়ে রেষ্ট হাউজের সামনে মৃত আব্দুল গফফারের ছেলে আব্দুর রহিম, খুরুশকুলের বদিউল আলমের ছেলে সাদ্দাম, কলাতলী চন্দ্রিমার মাঠ এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে মো. নেজাম উদ্দিন ও টেকনাফ হ্নীলা জাদিরাম এলাকার মো. সোনা আলীর ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিক। সম্প্রতি একটি অস্ত্র মামলায় কারাগারে রয়েছেন নেজাম উদ্দিন ও রফিকুল ইসলাম। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকলেও অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, তারা সংঘবদ্ধ মোবাইল চোর। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। হয়ত কক্সবাজারের বাইরে মোবাইল চুরি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দোকানদাররা তাদের পরিচয়ের বিষয়ে অবগত নন। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে খুব শীঘ্রই। কক্সবাজার ডিবি পুলিশের ইন্সেপেক্টর মানস বড়–য়া বলেন, এই সিন্ডিকেটটি খুব কৌশলি। তারা জেলার বাইরে বড় বড় শপিংমলে গিয়ে কাস্টমার সেজে নতুন মোবাইল চুরি করে। সবাইকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট