চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

দ্বিগুণ উৎসাহে জেলেরা সাগরে

২২দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলো গত রাত ১২টায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ অক্টোবর, ২০১৯ | ৩:২৮ পূর্বাহ্ণ

গতকাল ছিল জেলেদের আনন্দের দিন। ২২ দিনের আড়মোড়া ভেঙে ব্যস্ত তারা। বোটগুলো ধুয়ে-মুছে জাল, বয়া, বরফ ও খাদ্যসামগ্রী তোলেন জেলে ও শ্রমিকেরা। দিনে সাগরে নামার পূর্ণ-প্রস্তুতি সেরে আর রাত ১২টার পর ইলিশ আহরণে বোট ভাসায় সাগরের পানে। ইলিশের ভরা প্রজনন মৌসুমে সাগরে ২২দিন মাছ ধরা বন্ধ ছিল। গত রাত ১২টায় সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। সোনালী যান্ত্রিক মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির আহ্বায়ক মো. শামসুল আলম জানান, চট্টগ্রাম মহানগর ও উপকূলীয় এলাকায় ১০ হাজার মতো বোট রয়েছে। সাগরে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বোট মালিক ও জেলেরা। রাত ১২টার পর থেকে জেলেরা সাগরে নামতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, ইলিশ আহরণে ১৪-১৫ দিনের প্রস্তুতি নিয়ে গভীর সমুদ্রে যেতে হয়। ফিশারিঘাট এলাকায় দেখা যায়, শত শত জেলে বোটে ইলিশ জাল, বরফ, তেল ও মাছ ধরার সামগ্রী মজুদ করায় ব্যস্ত ছিল। একই সঙ্গে জেলেরা নিজেদের খাবারসামগ্রীও তুলে নিচ্ছেন।

সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে ২২ দিন ধরে বেকার ছিল জেলে ও মাছ ধরার শ্রমিকেরা। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় অলস সময় কাটান তারা। ভোলা, মনপুরা ও বরিশালের জেলেদের ইলিশের মৌসুমে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি যাওয়া হয়নি। এই ফাঁকে বেশিরভাগ জেলে-শ্রমিক বাড়ি থেকে ঘুরে এসেছেন। সোনালি যান্ত্রিক মৎস্যযান সমবায় সমিতির সামশুল আলম জানান, ‘৪-৫দিন পর পূর্ণিমার জো শুরু হবে। এই

জোতে প্রচুর ইলিশ পাওয়ার আশা করছি। এছাড়াও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় আশানুরূপ মাছ পাওয়া যাবে। অন্যান্য বছরও একইভাবে ভালো মাছ পাওয়া গিয়েছিল।’ ২২ দিন ধরে মাছ বন্ধ থাকায় জেলেদের প্রণোদনা হিসেবে ২০ কেজি করে চাল দিয়েছে সরকার।

মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন পূর্বকোণকে বলেন, ১৫ নং জেটিঘাট এলাকায় কোস্টগার্ড সতর্ক রয়েছে। ১২টার পর থেকে মাছ ধরার বোট সাগরে যেতে পারবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর ছাড়া ৫ উপকূলীয় এলাকা সন্দ্বীপ, সীতাকু-, মিরসরাই, আনোয়ারা ও বাঁশখালী এলাকায় ১৭ হাজার ৫শ জেলেকে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সাগর উপকূলীয় জেলেরা মাছ আহরণের জন্য রাতেই সাগরে নেমে যাবে। ছোট বোটে উপকূলীয় এলাকার জেলেরা একদিনেই মাছ আহরণ করে তীরে ফিরে আসবে।

জেলেরা জানায়, কর্ণফুলী নদীর তীরে রাজাখালী ও চাক্তাই খালের মোহনায় অবস্থিত মৎস্য অবতরণকেন্দ্র ঘিরে রয়েছে শত শত জেলে। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় অবসর সময়ে বোট, মাছ ধরার সরঞ্জাম জাল, টুকরি মেরামত করে সময় কাটিয়েছেন।

মৎস্য বিভাগ জানায়, গত ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা, বিক্রয়, মজুদ, সংরক্ষণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এই সময় মাছ ধরার সকল নৌযান সাগর তীরে নোঙর করা ছিল।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট