চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

এবার ফিটনেসবিহীন গাড়ি

সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযান ২৭ অক্টোবর থেকে

আল-আমিন সিকদার

২৪ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:৩৪ পূর্বাহ্ণ

নগরীর সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে সপ্তাহব্যাপী অভিযান পরিচালনা করতে যাচ্ছে নগর ট্রাফিক বিভাগ। আগামী ২৭ অক্টোবর রবিবার থেকে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সপ্তাহব্যাপী এ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান নগর ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মোস্তাক আহমেদ। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘গত কয়েক দিন আগে আমরা মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট ও লাইসেন্স নিশ্চিত করতে সপ্তাহব্যাপী অভিযান পরিচালনা করি। এ অভিযানের ফলশ্রুতিতে সড়কে এখন হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী দেখা যায় না। এটি সত্যিই ইতিবাচক। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা সড়কে চলাচলকারি ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবো। আগামী ২৭ অক্টোবর রবিবার থেকে এ বিশেষ অভিযান শুরু হবে। অভিযানে সিএনজি ট্যাক্সি, বাস, থ্রিহুইলার, হিউম্যান হলার ও প্রাইভেট কারের ফিটনেস চেক করা হবে বলে জানান তিনি।’

এর আগে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে রাস্তায় ফিটনেসবিহীন যান চলাচল এবং ওভারটেকিংয়ের মতো অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কেউ যদি অহেতুক নিয়মের বাইরে গিয়ে গাড়ি বা ট্রাকের আকার পরিবর্তন করে, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের ট্রাফিক পুলিশকেও এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এছাড়া সড়ক নিরাপদ করতে গেলে সবার মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০১৯’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অন্যদিকে ফিটনেস নবায়ন না করা কোনো গাড়িকে সিএনজি গ্যাস স্টেশন বা পেট্রল পাম্প থেকে চলাচলের জন্য জ্বালানি না দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ২ মাস বা ফিটনেস নবায়ন না করা পর্যন্ত যেটি আগে হয়, সেই সময় পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ফিটনেসবিহীন যানগুলো যাতে জ্বালানি না নিতে পারে, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রধানসহ বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের ইতিপূর্বের নির্দেশ অনুসারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে রেজিস্ট্রেশনের পর ফিটনেস নবায়ন না করা ৮৯ হাজার ২৬৯টি গাড়ি গত দুই মাসে ফিটনেস নবায়ন করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি নিয়ে আদালত ওই আদেশ দেন। আদালতে বিআরটিএর পক্সে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী ও মো. রাফিউল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক।

চট্টগ্রাম বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক পূর্বকোণকে বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার। এখন থেকে পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো হালনাগাদকৃত ফিটনেস সার্টিফিকেটবিহীন কোন যানবাহনকে তেল ও গ্যাস দিতে পারবে না। পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোকে উচ্চ আদালতের এ নির্দেশ কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য অনুরোধ করছি। তারা এ নির্দেশ মেনে চলছে কি না তা নিশ্চিত করার জন্য যেকোন পাম্পে যেকোন সময় ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করবো। ব্যত্যয় পাওয়া গেলে সরকারি আদেশ অমান্যের দায়ে অভিযুক্ত পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

যানবাহন মালিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন ‘শুধু হালনাগাদকৃত ফিটনেস সার্টিফিকেট থাকলেই হবে না, যানবাহনের বডি ফিটনেসও ঠিক থাকতে হবে। ত্রুটিপূর্ণ ও ভাঙাচোরা যানবাহন কোনভাবেই সড়কে নামানো যাবে না। নামালে এর দায়ভার মালিক, চালক ও হেলপার সকলকে বহন করতে হবে। জনগণকে জিম্মি করে ভোগান্তির মধ্যে না ফেলে বরং নিজেদের ত্রুটিগুলো কিভাবে দূর করা যায়, কিভাবে নিয়ম-কানুন মেনে ব্যবসা করা যায় সে চিন্তা করুন। নিজেদের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আনুন। কিভাবে পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা যায় তা নিয়ে নিজেরা বসে ভাবুন। প্রয়োজনে সরকারের সহযোগিতা নিন। জনগণকে জিম্মি করার ধারা থেকে বেরিয়ে আসুন। ভবিষ্যতে জনগণকে দুর্ভোগে ফেলার চেষ্টা করা হলে তা আর সহ্য করা হবে না। গণপরিবহন বন্ধ রাখা একটি জঘন্য অন্যায় কাজ। এটা আইনের প্রতি এবং জনগণের অধিকারের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের সমান বলে মন্তব্য করেন তিনি।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট