সিটি মেয়র আলহাজ আ জ ম নাছির উদ্দীনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হেরি ভারুইজ। গতকাল বুধবার দুপুরে টাইগারপাসে সিটি মেয়রের কার্যালয়ে সাক্ষাতকালে তাঁরা উভয় দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, বিনিয়োগ এবং ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারসহ বিবিধ বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে নগরীর ভৌগলিক অবস্থান, সিটি কর্পোরেশনের কর্মকা- সম্পর্কে চসিকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ একেএম রেজাউল করিম এবং জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে চলমান কাজ সম্পর্কে ডেপুটি টিম লিডার মেজর জেড জিয়া প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। বৈঠকে সিটি মেয়র নেদারল্যান্ড রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, নগরীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, আলোকায়ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ৯০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৬০টি দাতব্য চিকিৎসালয়, ৪টি মাতৃসদন, হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়, হেলথ টেকনোলজি, মিডওয়াইফ ইনস্টিটিউট পরিচালনা করছে। নগরীর শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড, জাহাজ তৈরি, বৃহৎ শিল্প কারখানা এবং পোষক শিল্প কারখানা, স্টীল মিলস স্থাপনা এবং বিশেষ শিল্পাঞ্চল স্থাপন এবং নগরকে একটি

বাসযোগ্য, নিরাপদ, পরিবেশ বান্ধব ও সবুজায়ন কার্যক্রম সম্পর্কে সিটি মেয়র রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন। মেয়র আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নেদারল্যান্ড বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী এবং বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। এই দেশের সার্বিক উন্নয়নে নেদারল্যান্ড রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে সেই দেশের সরকার ও ব্যবসায়ী মহলের সহযোগিতা কামনা করেন মেয়র।

নেদারল্যান্ড রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে কথা উল্লেখ করে বলেন, এই শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আমি মুগ¦ হই। তাই ঘুরে-ফিরে এ শহরে বারংবার আসতে ইচ্ছা হয়। তিনি সিটি মেয়র আলহাজ আ জ ম নাছির উদ্দীনের প্রশংসা করেন। নেদারল্যান্ড রাষ্ট্রদূত সিটি মেয়রের কাছে বর্তমান নগরীর চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে সিটি মেয়র বলেন, বর্ষা মওসুমে জলাবদ্ধতা, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও যোগাযোগব্যবস্থা বর্তমান নগরের বড় সমস্যা। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বর্যার মৌসুমে নগরীর নিম্নাঞ্চলসমূহ প্লাবিত হয়। এই জলবাযুর পরিবর্তন শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী। প্রতিদিনই এই জলাবদ্ধতা বাড়ছে। এই প্রসঙ্গে তিনি নেদারল্যান্ড রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বলেন, বন্ধু রাষ্ট্রের সমস্যা বিশেষ করে জলাবদ্ধতা কিভাবে লাঘব করা যায়, সেই বিষয়ে নেদারল্যান্ড সরকাররের যথেষ্ঠ অভিজ্ঞতা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, পানি ব্যবস্থাপনায় নেদারল্যান্ড পৃথিবীর একটি অন্যতম দেশ। তাদের এয়ারপোর্ট সিপুল সমুদ্র পৃষ্ট থেকে ২৪ ফুট নিচে এবং তারা তাদের যুগান্তকারী পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এখানে জলবায়ু পরিবর্তনের সকল ঝুঁকি সফলতার সাথে তারা মোকাবেলা করে আসছে বলে রাষ্ট্রদূত সিটি মেয়রকে অবহিত করেন। দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, বিশেষজ্ঞ বিনিময়ের মাধ্যমে এই অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। তাই তিনি শীঘ্রই একটি প্রতিনিধি দল নেদারল্যান্ড সফরের কথা বলেন এবং এ ব্যাপারে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন মেয়র। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমদ, সচিব মো. আবু শাহেদ চৌধুরী, ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ সিরাজদৌল্লাহ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী কাদের নেওয়াজ, সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেম। মেয়র আলহাজ আ জ ম নাছির উদ্দীন নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতকে ক্রেস্ট প্রদান করেন।-বিজ্ঞপ্তি