চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

হবে হচ্ছে করে পেছাচ্ছে সম্মেলন

মহানগর আওয়ামী লীগ নেপথ্যে চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় এক নেতার অনাগ্রহ!

ইফতেখারুল ইসলাম

২২ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:০৩ পূর্বাহ্ণ

অদৃশ্য শক্তির কারণে আটকে যাচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। অপরদিকে, দক্ষিণ জেলার সম্মেলন নিয়েও এখনো কেন্দ্র থেকে কোন গাইড লাইন আসেনি। তাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে আওয়ামী লীগের এই দুই সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বৈঠকশেষে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৩০ অক্টোবরের মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন সম্পন্ন করতে হবে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নগর এবং জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করতে হবে। কিন্তু ২০ সেপ্টেম্বরের আগেই নগর আওয়ামী লীগ সম্মেলন করার লক্ষ্যে তৃণমূলের সম্মেলন করার উদ্যোগ নেয়। এলক্ষ্যে তারা তৃণমূলের সম্মেলনের তারিখও ঘোষণা করেছিল। কিন্তু কেন্দ্র থেকে স্থগিত রাখতে বলায় তা আর করতে পারেনি। নগর ও জেলার একাধিক নেতার সাথে আলাপকালে তারা বলেন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ যেহেতু সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছে তাই তাদের সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তারা বিভিন্ন উপজেলার সম্মেলন করে দৃশ্যমান প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু দক্ষিণ জেলায় সেরকম দৃশ্যমান কার্যক্রম নেই। তৃণমূলের সম্মেলন হচ্ছে না চট্টগ্রাম মহানগরেও। তাই এই দুই সাংগঠনিক জেলায় সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাদের ধারণা চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় এক নেতার অনাগ্রহের কারণেই দক্ষিণ জেলা ও চট্টগ্রাম মহানগরে সম্মেলন না হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আলাপকালে জেলা ও নগরের এসব নেতা বলেন, আগামী ২৭ তারিখ যে প্রতিনিধি সভার আয়োজন করা হচ্ছে তাতে দলের নেতাদের কিংবা সংগঠনের কোন লাভ হবে না। কারণ একসাথে ছয়টি সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের নেতারা এই ধরনের প্রতিনিধি সভায় এসে কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য শুনে এক বেলা ভাত খেয়ে চলে যান। তারা তাদের মনের ভাব, অভিযোগ এবং সমস্যার কথা তুলে ধরতে পারেন না। কেন্দ্রীয় নেতাদেরও তা শোনার সময় থাকে না। প্রতিনিধি সভায় যদি তৃণমূলের নেতাদের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় এবং সেসব সিদ্ধান্ত কার্যকর করা না হয়, তাহলে এই ধরনের সভা মূল্যহীন। কেউ কেউ একে গেট টুগেদার বলেও আখ্যা দিয়েছেন।

জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন পূর্বকোণকে বলেন, সম্মেলন করার ব্যাপারে নগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটি একমত। আলহাজ এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেন নেত্রী। এরপর থেকে নগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধভাবে সব ধরনের কর্মসুচি পালন করছে। নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি বা অন্য কোন সমস্যা নেই। যেহেতু নগর আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই সম্মেলন করার জন্য নির্বাহী কমিটি সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউনিট এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলন করার উদ্যোগ নিয়েছিল। এমনকি কিছু কিছু ইউনিট ও ওয়ার্ডে সম্মেলনের তারিখও ঘোষণা করা হয়েছিল।

কিন্তু চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষ থেকে তৃণমূলের সম্মেলন স্থগিত রাখার কথা বলায় তা আর হয়নি। পরবর্তীতে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে তৃণমূলের কমিটি সম্পন্ন করার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা দেয়া হলেও নগরের বর্ধিতসভার তারিখের বিষয়ে চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতার কাছ থেকে এখনো কোন নির্দেশনা আসেনি। যখন নির্দেশনা আসবেই তখন থেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করা হবে। সম্মেলন করার জন্য নগর আওয়ামী লীগ সবসময় প্রস্তুত।
এদিকে, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সম্মেলন হবে। অপরদিকে, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, সম্মেলনের জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে সম্মেলনের জন্য চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছ থেকে এখনো কোন গাইড লাইন আসেনি। এখনো চারটি উপজেলায় সম্মেলন বাকি আছে। সেসব উপজেলার কমিটি করেই জেলা সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট