চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সিভাসুর ১৬তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন

ম্যাজিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ : তথ্যমন্ত্রী

‘কৃষি বিজ্ঞান বিষয়ে সিভাসু হবে সেরা বিশ^বিদ্যালয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ অক্টোবর, ২০১৯ | ৩:০১ পূর্বাহ্ণ

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের সুনাম ও মর্যাদা নির্ভর করে গুণগত শিক্ষা ও গবেষণা কর্মের উপর।

বিশ^বিদ্যালয় কত বড় সেটার উপর বিশ^বিদ্যালয়ের সুনাম ও মর্যাদা নির্ভর করে না। পৃথিবীতে অনেক ছোট ছোট বিশ^বিদ্যালয় আছে যেগুলো শিক্ষা ও গবেষণা কর্মে খুবই ভালো। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে সিভাসু একটি ‘সেন্টার অব এক্সেলেন্স’ হবে এবং কৃষি বিজ্ঞান বিষয়ে এটি হবে সেরা বিশ^বিদ্যালয়।’ চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) অডিটরিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল শনিবার সকালে দুইদিনব্যাপী ১৬তম আর্ন্তজাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সিভাসুর প্রশংসা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় টিচিং এন্ড ট্রেনিং পেট হসপিটাল ও রিসার্চ সেন্টার স্থাপন, রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে ভ্রাম্যমান গবেষণা তরী নির্মাণ, হাটহাজারীতে রিসার্চ এন্ড ফার্ম বেইজড ক্যাম্পাস ও কক্সবাজারে গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনসহ সিভাসু অনেক উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিয়েছে যা দেখে আমি মুগ্ধ।

মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনসংখ্যা অনেক বেড়েছে, কমেছে আবাদি জমির পরিমাণ। তারপরও বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশ আজ বিদেশে খাদ্য রপ্তানি করছে। উন্নয়নের অনেক সূচকে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে পাকিস্তানকে এবং কিছু কিছু সূচকে ভারতকেও অতিক্রম করেছে। আর এগুলোর সবই সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ম্যাজিক নেতৃত্বের কারণে।
কোনরানির পশু উৎপাদনে বাংলাদেশ সয়ংসম্পূর্ণ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগে আমরা ঈদ-উল-আযহার সময় কোরবানির প্রাণীর জন্য পাশর্^বর্তী দেশের উপর নির্ভর করতে হতো। এখন আমাদের পর্যাপ্ত প্রাণিসম্পদ রয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে গবেষণা এবং নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে। আর এর পিছনে অবদান রয়েছে সিভাসু’র মতো বিশেষায়িত বিশ^বিদ্যালয় এবং গবেষকদের।

তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, সিভাসুর শিক্ষার্থীরা বিদেশে যাচ্ছে এবং বিদেশের বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখানে আসছে। বিশ^বিদ্যালয় এবং গবেষণা কর্মকে সমৃদ্ধ করার জন্য এধরণের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষাবিদ এবং পেশাজীবীদের এ সম্মেলন জ্ঞান ও গবেষণার নতুন ক্ষেত্র তৈরি করবে বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ভবিষ্যতে পুরোদমে শিক্ষকতায় যোগ দিবে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পূর্বে আমি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলাম। শিক্ষকতায় যুক্ত থাকতে এখনো চেষ্টা করি কিন্তু বর্তমানে এটা আমার জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। তবু বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে আমি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে একটি করে ক্লাস নিই। বিভিন্ন সরকারি কাজের জন্য অনেক সময় আমাকে ক্লাস স্থগিত করতে হয়। ভবিষ্যতে পুরোপুরি শিক্ষকতা পেশায় যোগ দিব।’

দুইদিনব্যাপী এবারের সম্মেলনের প্রতিপ্রাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘ইন্টেন্সিফিকেশন অব লাইভস্টক এন্ড ফিশারিজ ফর এচিভিং ফুড সেইফটি এন্ড নিউট্রিশনাল সিকিউরিটি: চ্যালেঞ্জেস এন্ড অপরচুনিটিস’। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিভাসু’র ওয়ান হেল্্থ ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. শারমীন চৌধুরী।

বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গুণগত শিক্ষা ও গবেষণা ছাড়া দেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে গবেষণার সুদূর প্রসারী ভূমিকা রয়েছে। সিভাসুকে গবেষণার উন্নত প্লাটফর্ম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পেট্রোনাইজ করলে দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে।

সম্মেলনে মোট ৭টি টেকনিক্যাল সেশনে ৪টি মূল প্রবন্ধ এবং ৫২টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। সম্মেলনে বিষয়সংশ্লিষ্ট ৫২টি পোস্টার প্রদর্শিত হয়। আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ভারতসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রায় ৩০০ জন বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, পরিবেশবিদ, পেশাজীবী, এনজিও কর্মী, উন্নয়ন সহযোগী ও দাতা সংস্থার প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট