চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নিমতলায় নিজ ঘরেই খুন বাবা-মেয়ে

হ স্ত্রী আটক, রক্তমাখা ওড়না-ছুরি উদ্ধার হ পুলিশের ধারণা পরকীয়ার জের

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ অক্টোবর, ২০১৯ | ৩:০২ পূর্বাহ্ণ

নগরীর একটি বাসায় বাবা ও সাড়ে তিনবছরের শিশু কন্যা খুন হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে নগরের বন্দর থানার অদূরে নিমতলা এলাকার শাহ আলমের ভবনের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-আবু তাহের ও তার মেয়ে ফাতেমা নুর। তাদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার চর পাবর্তী গ্রামে। তবে তাহের যে বাসায় ভাড়া থাকতো সেই ঠিকানায় ২০১৭ সালে ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছেন। পুলিশের ধারণা স্ত্রীর পরকীয়ার ঘটনার জের ধরে তাহের ও তার শিশু কন্যা হত্যার শিকার হয়েছে।

প্রতিবেশী বিলকিছ বেগম জানান, দীর্ঘদিন ধরে শাহ আলমের ভবনের তিনতলায় থাকেন হাছিনা আক্তারের বোন ও বোন জামাই। এখানেই আবু তাহেরের সঙ্গে হাছিনা আক্তারের বিয়ে হয়। গত বৃহস্পতিবার গোসল করতে গেলে হাছিনার সঙ্গে দেখা হয়। এসময় বাসা থেকে আবু তাহেরের গালিগালাজ শুনতে পাই। তার স্ত্রীও সমানে স্বামীর গালিগালাজের জবাব দিচ্ছিলেন। কেন গালি দিচ্ছে জানতে চাইলে হাছিনা জানান, যেখানে কাজ করেন সেখানে একটা লাল শাড়ি দিয়েছে। সেটা পরে বাসা থেকে বের হওয়ায় গালিগালাজ করছে। তাকে সেই শাড়িটি পাল্টে ফেলতে বলেন বিলকিছ।

আবু তাহের বন্দর এলাকায় একটা গোডাউনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। স্ত্রী ও মেয়ে নিয়ে শাহ আলমের ভবনের নিচতলায় একটি কক্ষে ভাড়া থাকতেন। এ ঘটনায় আবু তাহেরের স্ত্রী হাছিনা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। এছাড়াও আবু তাহেরের শ্যালিকা ও শ্যালিকার স্বামীকেও থানায় আনা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। বাবা ও মেয়ে খুনে হাছিনা আক্তার জড়িত বলে সন্দেহ করছে তারা। তার একটি রক্তমাখা ওড়না উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী মো.ফৌজুল আজিম জানান, তাহের পেশায় শ্রমিক। তার স্ত্রী বাসা-বাড়িতে কাজ করে। শনিবার সকালে সাড়ে আটটার দিকে তার স্ত্রী কাজে চলে যায়। নয়টার দিকে বাসায় এসে দেখে ভেতর থেকে দরজা ভেজানো। দরজা খুলে দেখেন তার স্বামীর লাশ বাসার মেঝেতে ও মেয়ের লাশ খাটের ওপর পড়ে আছে। তার চিৎকার-চেঁচামেচিতে লোকজন জড়ো হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বাবা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করে। মেয়েটির গলা কাটা। বাবার মাথায়, গলায় ও পেটে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাসার এক কোণ থেকে রক্তমাখা ছুরিটি উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবু তাহেরের স্ত্রী, তার ভাই, বোন ও ভগ্নিপতিকে থানায় আনা হয়েছে। বাবা ও মেয়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট