চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সীতাকু- সিলিমপুর সিডিএ সড়ক

বৃষ্টি ঝরে দুর্ভোগ বাড়ে

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকু-

২০ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:০১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীন সিলিমপুর আবাসিক এলাকার সড়কটি খানাখন্দে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়লেও এ নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই। অথচ এই সড়ক দিয়ে স্থানীয় হাজারো মানুষ, স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ আশপাশের ৫ গ্রামের ট্রেনযাত্রীরা স্টেশনে আসা-যাওয়া করেন।

সিলিমপুর সিডিএ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সড়কটি সংস্কারের দাবি নিয়ে বহুবার সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যানের কাছে ধরনা দিয়েও কোন ফল পাইনি। এতে আমরা হতাশ। তিনি আরো বলেন, সড়কটি সংস্কার খুবই জরুরি। যার কারণে সিডিএর সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এই সড়ক সিডিএর জন্য লজ্জাজনক। আমরা বর্তমান সিডিএ চেয়ারম্যানের কাছেও সড়কটি সংস্কারের জন্য আবেদন করেছি। তিনি এটি পরিদর্শনের পর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখনো পরিদর্শন করেননি। একইভাবে সড়কটি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে স্থানীয় জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে সমস্যায় পড়তে হয় নামায পড়তে আসা মুসল্লিদের। একটু বৃষ্টি হলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

জানা যায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন সীতাকু-ের অভিজাত সিলিমপুর সিডিএ সড়কটি সংস্কার হয়নি তিন যুগেও। এতে সড়কজুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। গাড়ি চলে হেলে-দুলে। কিছু কিছু স্থানের অবস্থা এত করুণ যে পায়ে হেঁটে চলাচল করাও সম্ভব নয়। এ কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সীতাকু-ের ভাটিয়ারি ও জঙ্গল ভাটিয়ারি মৌজায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এর সিলিমপুর আবাসিক প্রকল্প অবস্থিত। ১৯৬০-৬১ এবং ১৯৮০-৮১ সালে দুই দফায় সিলিমপুর প্রকল্পের জন্য ১৯৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ দেয়া শুরু হয় আশির দশকে। দু’ দফায় প্রায় এক হাজার ২০০ প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০১৩ সালে বাড়ানো হয় আরও ৭০টি প্লট। আবাসিক এলাকায় প্লট বাড়লেও বাড়েনি কোন সুযোগ-সুবিধা। সরেজমিনে এই এলাকা পরিদর্শনকালে দেখা যায়, মহাসড়ক থেকে সিডিএর ভেতরে যাবার প্রায় ৩০ ফুট চওড়া ও এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই সড়কের পুরোটাই খানাখন্দে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে খুবই ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। সিলিমপুর সিডিএ আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আরজু খান বলেন, আশির দশকে প্লট বরাদ্দ দেয়ার পর রাস্তাগুলো নির্মাণ করা হয়। সেই থেকে প্রচুর ব্যবহারে রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়ে। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে বারবার রাস্তাটি সংস্কার দাবি জানালেও কোন প্রতিকার হয়নি। তিনি আরো বলেন, সিডিএ আবাসিক এলাকায় অসংখ্য বাড়ি-ঘর ছাড়াও স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। বেহাল সড়কের কারণে শিক্ষার্থীরাও চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এছাড়া নামে সিডিএ এলাকা হলেও এখানে সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও করেনি কর্তৃপক্ষ। এ কারণে সন্ধ্যা হলেই রাস্তাটি অন্ধকার হয়ে যায়। এতে ওইসব খানাখন্দে যানবাহন পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান সিডিএ কর্তৃপক্ষের কাছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, বিষয়টি আমাকে স্থানীয় আবাসিক এলাকার বসবাসকারীরা জানিয়েছে। ওই প্রকল্পের পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট