চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

পরস্পর যোগসাজশে যুবককে সাজা

পাঁচলাইশ থানার সাবেক ওসিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আদালত প্রতিবেদক

১৮ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:৩৭ পূর্বাহ্ণ

এক যুবককে পুলিশ হেফাজতে থাকাবস্থায় ইভটিজিংয়ের ‘দায়ে’ ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা দেয়ার অভিযোগে পাঁচলাইশ থানার সাবেক ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ, এসআই আবু তালেবসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম সিনিয়র মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন -এর আদালতে অভিযোগটি দায়ের করেন নগরীর রাহাত্তার পুল এলাকার জনৈক নাছির উদ্দিনের ছেলে রুবাইয়াত সাইয়েম (২৬)। অপর দুই অভিযুক্ত হলেন, নগরীর হিলভিউ হাউজিং সোসাইটির ১ নম্বর রোডের বাসিন্দা শাহানা ইয়াসমিন সুমী (২৫) ও তাঁর বড় ভাই মো. কামরুল ইসলাম।

দ-বিধির ১১৪, ১২০(খ), ২১১, ১৬২, ১৬৬, ১৬৭, ২২০ ও ৫০০ ধারায় অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করা হয় বলে জানালেন বাদির আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য নগর গোয়েন্দা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রুবাইয়েত ও সুমী একই কলেজে পড়ার সুবাদে বন্ধুত্ব এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে দুজনেই প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াকালীন তাদের সম্পর্কের বিষয়টি জেনে যায় সুমীর পরিবার। এ সম্পর্ক মেনে না নিয়ে রুবাইয়েতকে হুমকি দেয়া হয় সুমীর পরিবার। ফলে ২০১৬ সালের ১৯ নভেম্বর রুবাইয়েত ও সুমীর মধ্যে সম্পর্ক ছিণœ হয়। এর কয়েকদিন পর সুমীর বড়বোন আরো কয়েক যুবকসহ প্রবর্তক এলাকায় গিয়ে রুবাইয়েতকে হুমকি দেয়। হুমকির বিষয়টি রুবাইয়েত তার মাকে জানানোর পর রুবাইয়েত ও তার মা সুমীদের বাসায় গিয়ে সুমীর মাকে অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় প্রবাসী কামরুল ইসলাম বিদেশ থেকে ফোন করে হুমকি দেয় রুবাইয়েতকে। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল সকাল ১১ টায় নগরীর কেবিআমান আলী রোডস্থ অঙ্গমণি জুয়েলার্সের সামনে কামরুল ইসলাম ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। এসময় রুবাইয়েত বাসা থেকে বের হলে তাকে আটক করে র‌্যাবকে ফোন করে। র‌্যাব এসে রুবাইয়েতকে নিয়ে দুপুরে পাঁচলাইশ থানায় হস্তান্তর করে। পাঁচলাইশ থানার তৎকালীন ওসি ও এস আই তাকে বিনা ওয়ারেন্টে থানাহাজতে রেখে দেয়। পরদিন সকাল ১০ টায় তাকে পুলিশের গাড়িতে করে প্রবর্তক ও সংলগড়ব এলাকায় ঘুরিয়ে বদনাশাহ মাজারের সামনে গাড়িটি থামানো হয়। এসময় সেখানে কামরুল, সুমী ও তাদের একবোন উপস্থিত ছিলেন। এর দুপুর ১২টার দিকে সেখানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ সরকারি গাড়িয়েযোগে এসে রুবাইয়েতকে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেয়া হয়। এরপর ১৮ দিন হাজতবাস শেষে তিনি জামিনে মুক্ত হন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে তিনি খালাস পান বলে জানান বাদির আইনজীবী ।

তিনি বলেন, পুলিশের হেফাজতে থাকাবস্থায় কীভাবে বাদি ইভটিজিং করলো। অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ এনে সাজা দেয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টি পরিকল্পিত ঘটনা। তিনি বলেন, অর্থবিত্তশালী কামরুলের পরিবারের রোষানলে পড়ে মিথ্যে অভিযোগে হাজতবাস করেছে এ মামলার বাদি। শুনানিশেষে আদালত অভিযোগটি নগর গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট