চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

চকরিয়ার সিংহভাগ দোকান এখন পেঁয়াজশূন্য

এম. জাহেদ চৌধুরী, চকরিয়া-পেকুয়া

১৮ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:০৬ পূর্বাহ্ণ

সিন্ডিকেট ও কমিশন এজেন্টের কারসাজিতে মফস্বলের উপজেলাতেও পেঁয়াজের বাজার এখন অস্থির। বেশিরভাগ বাজার এখন পেঁয়াজ শূন্য। গুটিকয়েক দোকানে নামমাত্র পেঁয়াজ থাকলেও ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৮৫-৯০ টাকা ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ কেজি ৭০ টাকা করে বিক্রয় হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন পেঁয়াজের মূল্য কমাতে নানা নির্দেশনার পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতে অভিযান পরিচালনা করলেও হচ্ছে হিতে বিপরীত। অনেক ব্যবসায়ী বেশি দামে কিনে আনা পেঁয়াজ অতিরিক্ত লোকসান দিয়ে বিক্রয় করতে নারাজ। ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে বাকবিত-া হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

গত ১৫ অক্টোবর চকরিয়া পৌরশহরের বিভিন্ন দোকানে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ছোট-বড় সিংগভাগ দোকানেই পেঁয়াজ নেই। কয়েকটিতে নামমাত্র পেঁয়াজ থাকলেও বিক্রি করছে না। ক্রেতাদের দাবির মুখে কয়েকটি দোকনে পেঁয়াজ বিক্রি করলেও ভারতীয় পেঁয়াজ ৮৫-৯০ টাকা এবং মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি ধরে চাওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে বাগবিত-া হয়।
কাঁচাবাজার সড়কের পাইকারী ব্যবসায়ী রিয়াদ উদ্দিন বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জ থেকে কেজি ৮৫ টাকা মূল্যে কিনতে হচ্ছে বিধায় পেঁয়াজ বিক্রয় বন্ধ করে দিয়েছি। একই সড়কের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম কয়েকদিন আগে ৮০ টাকা দরে কিনে আনা পেঁয়াজ ৮৪ টাকা মূল্যে বিক্রয় করায় ক্রেতার গালিগালাজ শুনতে হয়েছে। অনুরূপভাবে হক এন্ড ব্রাদার্সে কেজি প্রতি ৮৪ টাকা দরে কিনে ৮৬ টাকা মূল্যে বিক্রয় করায় নাজেহাল হতে হয়েছে। এ অবস্থায় স্বল্প পরিমাণ পেঁয়াজ থাকা দোকান মালিকরাও পেঁয়াজ বিক্রি করছে না।

উপজেলার গ্রামীণ এলাকার দোকানগুলোতে সপ্তাহখানেক পূর্বে ক্রয় করা পেঁয়াজ ৮৫-৯০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করছে। মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি পেঁয়াজ সংকটের কারণে অনেকে পেঁয়াজ খাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে গত পনের দিনে ৮ হাজার ৪৯৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। এই নি¤œমানের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা মিয়ানমান থেকে আমদানি করে টেকনাফ স্থলবন্দরে পৌঁছাতে ১০দিন সময় লাগে। ওইসময় এক-তৃতীয়াংশ পেঁয়াজ পচে যায়। ফলে পঁচে যাওয়া পেয়াজের দামসহ বিক্রয়যোগ্য পেঁয়াজের সাথে সামঞ্জস্য করতে গিয়ে বাড়ছে দাম। এছাড়াও মিয়ানমার থেকে আনা পেঁয়াজ চট্টগ্রাম হয়ে ফের চকরিয়ায় আনাতে পরিবহন খরচও বাড়ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ মোটা হওয়ায় মেজবান ও হোটেল কেন্দ্রিক বিক্রয় হলেও গৃহস্থলীতে বিক্রয় হচ্ছে না। ওই পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জ থেকেই কিনতে হচ্ছে ৮৫ টাকা মূল্যে। ফলে পরিবহন খরচসহ যোগ করে বিক্রয় করতে হচ্ছে অধিক মূল্যে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, মিয়ানমারের পেঁয়াজ চট্টগ্রামে না নিয়ে কক্সবাজারের বিপণন করলে সর্বোচ্চ ৫০-৫৫ টাকা মূল্যেই প্রতি কেজি বিক্রয় করা যেত। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসন পেঁয়াজের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল। বর্তমানে পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের মূল্য কতটুকু উঠানামা করেছে খোঁজ নিয়ে জেলা প্রশাসনের পরামর্শক্রমে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নতুন নির্দেশনা দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, পেঁয়াজ সংকট কাটাকে সহসা উদ্যোগ নেয়া হবে। কোন ব্যবসায়ী ও ক্রেতা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় উভয়দিক বিবেচনাপূর্বক আলোচনা সাপেক্ষে ত্বরিত ব্যবস্থা নেব।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট