চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ক্লাব থেকে কিশোর গ্যাং তৈরির অভিযোগ

ওয়ার্ড ৬ পূর্ব ষোলশহর

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:২১ পূর্বাহ্ণ

সামাজিক সংগঠনের নামে প্রতিষ্ঠিত একটি ক্লাবের মাধ্যমে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছে এলাকার কিশোররা। যেখানে ১৩ থেকে ১৭ বছরের শিশুদের নিয়েই তৈরি করা হয়েছে ‘শিশু কিশোর বয়েজ ক্লাব’ নামে একটি সেবামূলক সংগঠন।

নগরীর ৬ নং ওয়ার্ড এলাকায় হাজী আরবান আলী সড়কের পাশে অবস্থিত কাউন্সিলর এম আশরাফুল আলমের কার্যালয়েই ‘শিশু কিশোর বয়েজ ক্লাব’ নামে এ সংগঠনটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিদিন এখানে এলাকার কিশোরদের নিয়ে চলে মিটিং। এই কিশোরদের মধ্যে অষ্টম শ্রেণি থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করে কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীও আছে। কিন্তু এই কিশোরদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে ঝরে পড়েছে পড়াশোনা থেকে। যে সময় তাদের হাতে থাকার কথা বই খাতা আর কলম। সেখানে এই কিশোররা জড়িয়ে পড়ছে নানারকম অপকর্মে। এক শ্রেণির রাজনৈতিক ব্যক্তি এই কিশোরদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে তৈরি করছে ক্ষমতার লোভ। আর নিয়ে যাচ্ছে রাজনীতির জগতে। এভাবেই অনেক কিশোর মাধ্যমিকের গন্ডি পার হলেও উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পার হতে পারছে না। ঝরে পড়ছে ১৫ থেকে ১৮ বছরের এ কিশোররা। তৈরি হচ্ছে কিশোর গ্যাং। এতে কিশোরদের অভিভাবকগণ উদ্বিগ্ন এবং তাদের নানারকম অপকর্মে অতিষ্ঠ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকানীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কিশোরের অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে এবছর আবদুল হামিদ সওদাগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেছে, পরে তাকে নগরীর একটি কলেজে ভর্তি করেছি। কিন্তু এলাকায় অবস্থিত ‘শিশু কিশোর বয়েজ ক্লাব’ নামে এ সংগঠনটির মাধ্যমে ছেলেদের রাজনীতিতে টেনে নেয়া হচ্ছে। এ ক্লাবের ছেলেদের সাথে মিশে আমার ছেলেটাও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আগের মত কলেজে যায় না। ঠিকমত ঘরে আসে না। গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তায় এদের সাথে আড্ডা দেয়। না খাবারের ঠিক আছে, না ঘুমের। কিছু বললে কথাও শুনে না। সারাক্ষণ অমুক ভাই তমুক ভাইয়ের পেছনে থাকে। এতো কষ্ট করে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছি। এখন সেই ছেলে বখে যেতে বসেছে।

এলাকার এক দোকানদার বলেন, এই ছেলেগুলোকে আমাদের সামনে বড় হতে দেখেছি। আর এখন তারা আমাদের সাথে বেয়াদবি করছে। কিছু বলতেও পারি না। তারা অমুক ভাই তমুক ভাইয়ের ভয় দেখায়। আর চাঁদা দাবি করে। দিতে রাজি না হলে দোকানে তালা মারার হুমকি দেয়। এ ক্লাবের নাম বলে আমাদের থেকে চাঁদা দাবি করে। শুধু তাই নয়, তারা এখানে উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়–য়া মেয়ে শিক্ষার্থীদের নানাভাবে উত্যক্ত করে। বিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেয় আর মেয়েদের দেখলে নানারকম বাজে মন্তব্য করে। তাই প্রশাসনকে এ এলাকায় কিশোর গ্যাং তৈরির বিষয়ে নজর দেয়া দরকার।

কাউন্সিলর এম আশরাফুল আলম এ ব্যাপারে বলেন, ক্লাব নিয়ে যা বলা হচ্ছে তা সত্যি নয়। ‘শিশু কিশোর বয়েজ ক্লাবটির’ কাজ হচ্ছে এলাকার ছেলেদের জন্য বিভিন্ন সংগঠনের সাথে খেলাধূলায় অংশগ্রহণের কাজ করা। এখানে কোনো রাজনৈতিক কাজ বা কিশোর গ্যাং তৈরি হয় না। এই ছেলেদের দিয়ে কোনরকম রাজনৈতিক মিটিং মিছিলও করা হয় না। ক্লাবের মাধ্যমে গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা করা হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট