চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

সর্বশেষ:

ভোটার তালিকা হালনাগাদ : ভোটার হতে পদে পদে ভোগান্তি

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১:৩১ অপরাহ্ণ

নগরের বহদ্দারহাট এখলাছুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য দীর্ঘ লাইন। যারা নতুন ভোটার হচ্ছেন তাদের এ নিবন্ধন করতে হচ্ছে। কথা হয়, দুজনের সঙ্গে। তারা বললেন, বায়োমেট্রিকে ধীরগতির কারণে ভোটার নিবন্ধনকারীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

 

গত ২০ জানুয়ারি থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়। ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্য নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে নিবন্ধনকেন্দ্রে বায়োমেট্রিক কার্যক্রম শুরু হয়। বায়োমেট্রিকে ভোটার ইচ্ছুক নাগরিকদের ১০ আঙ্গুলের ছাপ, চোখের আইরিশ ও ছবি তোলা হয়। এ কার্যক্রমে অন্তত ১০ মিনিট সময় লাগছে। এক কেন্দ্রে কয়েক শ মানুষের বায়োমেট্রিক গ্রহণে দীর্ঘ সময় লাগছে।

 

কথা হয় বহদ্দারহাট শাহ আমানত সোসাইটির বাসিন্দা আবদুর রহিম ও মাহমুদুল হকের সঙ্গে। তারা বললেন, স্কুল মাঠে কয়েক শ মানুষ একসঙ্গে লাইনে ছিল। কিন্তু বায়োমেট্রিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। নিবন্ধনকারীদের দক্ষতা-প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

 

ওই নিবন্ধনকেন্দ্রে দুজনের সঙ্গে কথা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বললেন, চোখের আইরিশ, আঙ্গুলের ছাপ নিতে একটু সময় লাগছে। কারণ অনেকের আঙ্গুলের রেখা মুছে যাওয়ায় মেশিনে ভালোভাবে নেয় না। এজন্য একটু সময় লাগছে।

 

বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন, ছেলের নিবন্ধন ফরম পূরণে কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পদে পদে বেগ পেতে হয়েছে। নানা ঝামেলা শেষে ছেলের ভোটার ফরম পূরণ করেছি। তবে ইসির চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্র জোগাড় করতে না পেরে ছেলের দুই বন্ধু ভোটার ফরম পূরণ করতে পারেনি।

 

সকাল ৮টা থেকে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয়। সকাল ৯টায় নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন করিম নামে এক ভুক্তভোগী।

 

বায়োমেট্রিকে ধীরগতির কারণে জনভোগান্তির বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির উদ্দিন বলেন, একসঙ্গে চার উপজেলায় ভোটার রেজিস্ট্রেশন চলছে। ভিড় সামলাতে এক জায়গায় রাত-দিন কাজ চলছে।

 

নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করতে ও নাগরিকদের ভোগান্তি এড়াতে তথ্য সংগ্রহকারীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইসি। এরপর প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়। ইসির নির্দেশনা ছিল, ভোটার তালিকা হালনাগাদে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য। কিন্তু নগর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে সেই নির্দেশনা মানেনি তথ্য সংগ্রহকারীরা। স্কুল বা কোন জায়গায় বসেই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমদ বলেন, গত বছর হালনাগাদ কার্যক্রম না হওয়ায় এবার চাপ বেড়েছে।

 

ইসির তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে দুই লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

 

চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমদ পূর্বকোণ বলেন, হালনাগাদে তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলেও অনলাইনে প্রতিদিন কয়েক শ আবেদন জমা হচ্ছে। ভোটার হওয়া নিয়ে চিন্তার কিছুই নেই। কারণ এটা চলমান প্রক্রিয়া।

 

প্রসঙ্গত, নাগরিক সেবা পেতে এনআইডি অপরিহার্য। এমনকি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এজন্য নাগরিকদের মধ্যে ভোটার হওয়ার সচেতনতা অনেক বেড়েছে।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট