চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

সর্বশেষ:

সয়াবিন তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও বাড়ছে দেশে, বন্ধ সরবরাহও

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ

গেল ডিসেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতায় ফিরেছে ভোজ্য তেলের দাম। তবে উল্টোচিত্র দেশের বাজারে। সরবরাহ সংকটের পাশাপাশি পণ্যটির দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি বাজারে প্রতিযোগিতা না থাকায় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পণ্যটির দাম বৃদ্ধি করছে আমদানিকারকরা।

 

বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক পণ্যবাজারে মাসভিত্তিক মূল্যতালিকা পিংক শিট অনুযায়ী, ডিসেম্বর থেকে পরের দুই মাসে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে টনপ্রতি ৮৪ ডলার। সেই হিসেবে লিটার প্রতি দাম কমেছে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ টাকার বেশি। জানুয়ারিতে পণ্যটির টনপ্রতি গড় মূল্য ছিল ১ হাজার ৬১ ডলার যা পূর্ববর্তী দুই মাসের চেয়ে ৮৪ ডলার কম।

 

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নগরীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। প্রতি ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ৯৭০ টাকা। যা গেল সপ্তাহের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা পণ্যটির পর্যাপ্ত সরবরাহ পাচ্ছেন না। বোতলজাত সয়াবিন পেতে হলে নানা শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন বিপণন প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধিরা।

 

নগরীর ২ নম্বর গেট এলাকার কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী মো. মাহবুব আলম বলেন, যে কয়টা প্রতিষ্ঠান তেল আমদানি ও পরিশোধন করে, মূলত তাদের হাতে সবাই জিম্মি। তারা বোতলজাত সয়াবিন সরবরাহ করছে না। মাঝেমধ্যে যে পরিমাণ তেল সরবরাহ করছে, তাতে অদ্ভুত সব শর্ত জুড়ে দিচ্ছে। দিনভর ক্রেতারা তেল চায়, কিন্তু সরবরাহ না পাওয়ায় ক্রেতাদের দিতে পারি না।

 

দেশে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই বাজারে খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি (৩৭.৩২০ লিটার) ৬ হাজার ৯০০ থেকে ৭ হাজার টাকায়। তবে বিক্রয় আদেশ (ডিউ) বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬ হাজার টাকায়। ডিউ কেনার ২০ থেকে ২৫ দিন পর খোলা তেলের সরবরাহ পাচ্ছেন ক্রেতারা। তবে বন্ধ রয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ।

 

এই বিষয়ে জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের তেল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আবু বক্কর বলেন, বাজারে প্রতিযোগিতা নেই। ছোট ব্যবসায়ীদের আমদানির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। অল্প কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তেল আমদানি করার সুযোগ পায়, তাদের হাতে জিম্মি সবাই। তেলের সরবরাহ নেই বললেই চলে এখন।

 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বর্তমানে দেশে ভোজ্যতেল আমদানি ও পরিশোধন করে বিপণন করছে শীর্ষ কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে এস আলমের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সীমিত করায় বর্তমানে প্রথম সারিতে আছে সিটিসহ চারটা গ্রুপ। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই চার প্রতিষ্ঠানই নিয়ন্ত্রণ করছে ভোজ্য তেলের বাজার। এই বিষয়ে জানতে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট