চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

মহানগর বিএনপির সমাবেশে আমির খসরু

দেশপ্রেমিক নাগরিককে যারা হত্যা করে তারা দেশদ্রোহী

১৩ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:৪২ পূর্বাহ্ণ

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গুম, খুন হত্যার বিরুদ্ধে দেশের মানুষ অবস্থান নিয়েছে। প্রতিবাদের এই জোয়ারকে ভয়ভীতির মাধ্যমে থামিয়ে দেয়া সম্ভব না। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ দেশবিরোধী চুক্তির বিরোধিতা করেছে, সেইজন্য তাকে সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের হাতে জীবন দিতে হয়েছে। দেশপ্রেমিক নাগরিককে যারা হত্যা করে তারা দেশদ্রোহী। তিনি গতকাল (শনিবার) বিকালে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, দেশবিরোধী চুক্তি ও আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে একথা

বলেন। মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ. এম নাজিম উদ্দিন। অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুর হাশেম বক্কর, সিনিয়র সহ সভাপতি আবু সুফিয়ান।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, সমাবেশে আসতে দেখলাম, পুলিশ যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, মনে হচ্ছে দেশে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। শান্তিপূর্ণ এই জনসভায় কেন এই যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব। এখানে এত পুলিশ কেন? দেশের সংবিধান কি বাতিল হয়ে গেল? যারা জনগণের পাশে দাঁড়ানোর কথা, যারা দেশবিরোধী চুক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কথা, যারা দেশপ্রেমিক নাগরিকদের পক্ষে থাকার কথা তাদের এই অবস্থা কেন?

প্রশাসনের উদ্দেশ্যে আমির খসরু আরো বলেন, যারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে খুন করে, অবৈধ ব্যবসা করে, জনগণের অধিকার কেড়ে নেয় তাদের পাশে আপনাদের থাকার কথা নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করার কথা, শ্রদ্ধা করার কথা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে নাগরিকদের একটি সুসম্পর্ক থাকার সময় এসেছে, এটা বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেন, বুয়েটের ভিসি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ও পুলিশ সাথে নিয়ে আবরার ফাহাদের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের অপদস্ত করতে সাহস পায় কিভাবে? যে স্ট্যাটাসের কারণে আবরার ফাহাদকে জীবন দিতে হয়েছে, সেই স্ট্যাটাস সারাদেশের মানুষকে বারবার দিতে হবে। এই স্ট্যাটাস ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। শেয়ার বাজার, ব্যাংক লুট, বিশ্বজিত হত্যা, আবিদ হত্যার বিচার হয়নি, আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারও হবে কি না সন্দেহ।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশবিরোধী চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছে এই সরকার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও অবৈধভাবে আটকে রেখেছে সরকার। কিন্তু ক্ষমতার মালিক দেশের জনগণ।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ভারতের সাথে দেশবিরোধী চুক্তি করে দেশকে করদ রাজ্যে পরিণত করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এই অবৈধ সরকার। এই অসম চুক্তি দেশের মানুষ মেনে নেবে না। প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি আলোচনার টেবিলে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে, এটা শুধু প্রধানমন্ত্রীর লজ্জা না, বাংলাদেশের মানুষের লজ্জা।
তিনি বলেন, ক্যাসিনো দুর্নীতির মাধ্যমে যুবলীগ ছাত্রলীগ থেকে এখন দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। সম্রাটকে জিজ্ঞাসাবাদে যখন দেশের রাঘব বোয়ালদের নাম বেরিয়ে আসছিল ঠিক তখনি দেশপ্রেমিক বুয়েট মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করলো। দেশের মানুষ একদিন এ হত্যাকারীদের জনতার আদালতে বিচার করবে।

প্রধান বক্তা মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, সরকারের শত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আজকে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশ জনতার দখলে। চট্টগ্রামের জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আবরার হত্যার প্রতিবাদে রাজপথ আজ উত্তাল।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের মানুষকে ক্ষমতাসীনরা হত্যা করছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ২৯ তারিখ রাতে করেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশবিরোধী চুক্তি করা হয়েছে। সেই চুক্তির প্রতিবাদ করায় আবরারকে প্রাণ দিতে হয়েছে।

এ. এম নাজিম উদ্দিন বলেন, আবরার হত্যার বিচারের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কথা বিশ্বাস করা যায় না। কারণ সাগর-রুনি, বিশ্বজিত ও চট্টগ্রামের আবিদ হত্যার বিচার এ পর্যন্ত হয়নি।

আবু সুফিয়ান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মা হিসেবে আবরার হত্যার বিচার করবেন বলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী হিসেবে তা জাতির সাথে প্রতারণা। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিচার হয় না। খুনিদের রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দেন।

মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন চৌধুরী লিটন ও সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সামশুল আলম, হাজি মোহাম্মদ আলী, জয়নাল আবেদীন জিয়া, নাজিমুর রহমান, আশরাফ চৌধুরী, মাহবুবুল আলম, এডভোকেট মফিজুল হক ভুঁইয়া, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, অধ্যাপক নুরুল আমিন রাজু, কাজী বেলাল উদ্দিন, শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আবদুল মান্নান, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গির আলম দুলাল, কাউন্সিলর আবুল হাসেম, মনজুর আলম মঞ্জু, আনোয়ার হোসেন লিপু, শাহেদ বক্স, সামশুল হক, মো. সালাহ উদ্দিন, সামশুল আলম, ইসহাক চৌধুরী আলিম প্রমুখ।-বিজ্ঞপ্তি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট