চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ভারী যান চলাচল বন্ধ দেড়যুগ ধরে, পণ্য পরিবহনে ভোগান্তি

ঝুঁকিতে পরাণকৃষ্ণ হাটখোলা ব্রিজ

বোয়ালখালী

সেকান্দর আলম বাবর, বোয়ালখালী

১৩ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:২৫ পূর্বাহ্ণ

উপজেলার পূর্ব কধুরখীল আর পশ্চিম চরণদ্বীপের যোগাযোগের সহজ মাধ্যম পরাণকৃষ্ণ হাটখোলা ব্রিজ। চৌধুরীহাট হয়ে পূর্ব কধুরখীল না এসে এ পথ ব্যবহার করলে পূর্ব কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয় কিংবা জলিল আম্বিয়া কলেজে যাতায়াত সহজতর হয়।

অর্ধশত বছর আগে স্থানীয়দের সহজ যাতায়াতের চিন্তা থেকেই খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল বাঁশের সেতু। সময়ের পরিক্রমায় তৎকালীন সাংসদ সিরাজুল ইসলামের সময়কালে এটি ইট পাথরের করা হয়। সেই থেকে আজ অবধি দাঁড়িয়ে আছে ব্রিজটি। খালের ভাঙনে আর নি¤œমানের কাজের কারণে স্বল্প সময়ে ব্রিজটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। দু’ পাশে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কিছু কিছু বরাদ্দ দিয়ে নতুন করে ঢালাই করা হলেও তা প্রবল স্রােতের কারণে ভাঙে সর্বদা। এ কারণে ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে দীর্ঘ দেড়যুগ। মানুষের পণ্য আনা নেয়াতে দুর্ভোগের শেষ নেই। অভিযোগেরও শেষ নেই। কিন্তু কে শোনে কার কথা ? মামলা জটিলতায় কধুরখীলে নির্বাচন বন্ধ ছিল ১৭ বছর। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি একটিবারের জন্য এলাকা পরিদর্শনে আসেননি, এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। অপরদিকে চরণদ্বীপ ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধির চেষ্টা থাকলেও অপরপক্ষের অসহযোগিতার বিষয়টি তুলে আনেন তিনি অকপটে। এতে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। ব্রিজটিই অকেজো দীর্ঘ সময়।

সরেজমিনে দেখা যায়, কধুরখীল-চরণদ্বীপ দু’ পাড়ের শতশত মানুষ নিত্য চলাচলে ব্রিজটি ব্যবহার করছে। তবে সাইকেল, মোটর সাইকেল, সিএনজিচালিত ট্যাক্সি ব্যতীত ভারী যানবাহন পার হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। ব্রিজের পিলারগুলো ক্ষয়ে গিয়ে নির্বাক দাঁড়িয়ে রয়েছে বছরের পর বছর। উপরে পুনঃঢালাই একাধিক স্থানে করা হলেও অনেক স্থানেই উঠে গেছে। রেলিং ভঙ্গুর দশায়, পশ্চিম অংশে ভেঙে খালে বিলীন হয়েছে এক দশক আগে। দু’ পাড়ে খালের পানির স্রােতে মাটি সরে গিয়ে কোনো রকমে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রয়েছে বড় ধরনের দুর্ঘটনার অপেক্ষায় যেন।

কথা হয় স্থানীয় কৃষক মো. ইউছুপ ও শিক্ষার্থী মোক্তার হোসাইন শরীফের সাথে। তারা বলেন, ব্রিজটি অকেজো দীর্ঘ সময় ধরে। এটি উভয় ইউনিয়নের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কধুরখীলের ১৭ বছরের চেয়ারম্যান ভুলেও এ এলাকায় এসেছেন বলে মনে পড়ছে না। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকাবাসীকে পণ্য আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে। তারা বলেন, সরকারের এত উন্নয়নে কধুরখীলের মতো একটি সমৃদ্ধ জায়গা দীর্ঘ সময় উন্নয়নবঞ্চিত।

জানতে চাইলে কধুরখীল ইউপির সদস্য মো. ছরওয়ার বলেন, আমার জানামতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ব্রিজটি নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তাই এ অবস্থা। তিনি বলেন, ব্রিজটির কারণে স্থানীয়দের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

চরণদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান মো. শামসুল আলম বলেন, উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় আমি বিষয়টি একাধিকবার তুলেছি। দুভার্গ্য আমার, কধুরখীলের চেয়ারম্যান থেকে সমর্থন পাইনি। ইতোমধ্যে এলজিইডি, পিআইও অফিসের নজরে আনতে পেরেছি। আশা করি, অচিরেই এটির বাস্তবায়ন দেখতে পাব।

উপজেলা এলজিইডি অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আ.স.ম রাশেদুল আহসান বলেন, ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ। যথাযথ তদারকির অভাবে এটি পশ্চাৎপদ রয়ে যায়। বর্তমানে সাংসদ মহোদয়ের প্রজেক্টে দেয়া হয়েছে। সুফল তাড়াতাড়ি আসবে বলে আশা করি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট