চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

রেলের জমিতে সিএনজি স্টেশন নয়

সংসদীয় কমিটির বৈঠক তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়

১২ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:০৮ পূর্বাহ্ণ

সিএনজি ফিলিং স্টেশনের জন্য নতুন করে জমি লিজ দেওয়া হবে না। জমি উদ্ধাদের ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয় দেখে এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের জমিতে স্থাপিত সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও রূপান্তর কারখানার লাইসেন্স মেয়াদ উত্তীর্ণের পর করণীয় নিয়ে গঠিত এক কমিটির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গত বছরের জুলাই মাসে এই কমিটি গঠন করা হয়। বৃহস্পতিবার রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ওই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। লিজ নিয়ে সিএনজি স্টেশন চালানোর লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ওই কমিটি গঠন করা হয়। রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে রেলওয়ের জমিতে মোট ১০টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন আছে।-বিডিনিউজ

বর্তমানে রেলওয়ের জমি বিঘা প্রতি মাসিক ইজারা মূল্য ঢাকার মহানগরীর জন্য ১৫ হাজার টাকা, চট্টগ্রাম মহানগরী/নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা/ টঙ্গী পৌরসভার জন্য ১০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য মেট্রোপলিটন শহরের জন্য ৫ হাজার টাকা। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ওই কমিটি ইজারা মূল্য বাড়ানোর পাশাপশি ভবিষ্যতে জমি লিজ না দেওয়ার সুপারিশ করে।
ওই কমিটির পর্যবেক্ষণে বলেছে, রেলওয়েল প্রধান কাজ রেল পরিচালনা করা। জমি লিজ দেওয়া না। তবে বাড়তি আয়ের জন্য নন কোর ব্যবসা হিসেবে জমি লিজ দেওয়া হয়। জমি লিজ দিলে তা উদ্ধারের ক্ষেত্রে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় নতুন করে জমি লিজ না দেওয়াই সমীচীন। কমিটির আহ্বায়ক রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (আইন) বলেন, গত বছরই আমরা কমিটির সুপারিশ দিয়েছি। সে অনুযায়ী নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সংসদীয় কমিটি ওই খসড়া পর্যালোচনা করে সুপারিশ করবে। মন্ত্রণালয়ের ওই কমিটি বিদ্যমান ১০টি সিএনজি স্টেশনের ইজারা মূল্য প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে বাড়ানোরও সুপারিশ করেছে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল : ৩ চ্যালেঞ্জ
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এগুলো হলো- কক্সবাজার জেলার ভারুয়াখালী আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমিতে বসবাসকারীদের ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ ওই জমি প্রকল্প কাজে ব্যবহার, চট্টগ্রাম জেলার ৪২ দশমিক ০২ একর ও কক্সবাজার জেলার ১৬৫ দশমিক ১১ একর বনভূমির গাছ কাটার অনুমতি পাওয়া এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের আওতাভূক্ত ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতকরণ।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৈঠকে জানানো হয়- চট্টগ্রামের দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে মিয়ানমারে নিকট ঘুমদুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেট ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন হবে। দোহাজারী হতে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার এবং রাম হতে ঘুমদুম পর্যন্ত ২৮ দশমিক ৭২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ হবে। দুটি প্রকল্পে মোট ভূমি অধিগ্রহণ ১ হাজার ৭৪ একর ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে।
প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- সেপেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ২২ দশমিক ৩০ শতাংশ। ভৌত অগ্রগতি ৩০ শতাংশ।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে জানানো হয়েছে- চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার অধিগ্রহণকৃত ১০ দশমিক ১৭ একর জমির ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ, সাতনানিয়া উপজেলার ১৭৬ দশমিক ৩৫ একর জমির ৭২ শতাংশ, লোহাগড়া উপজেলার ১৭৭ দশমিক ৯১ একর জমির ৬৮ শতাংশ, কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলার ২১০ দশমিক ৪২ একর জমির ৬৮ শতাংশ, রামু উপজেলার ২৭৮ দশমিক ৪৯ একর জমির ৬৫ শতাংশ এবং চকরিয়া উপজেলার ৫১৪ দশমিক একর জমির ৪৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে।

বৈঠকে আরও জানানো হয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইস্পিড ট্রেন চলাচলের জন্য গৃহীত সমীক্ষা প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৪৮ শতাংশ ও আর্থিক অগ্রগতি ৩৬ দশমিক ১৩ শতাংশ।
বৈঠকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে- বৈঠকে কমিটি প্রকল্পের কাজের মান যথাযথ রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার সুপারিশ করেছে।

কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য রেল মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, শফিকুল আজম খাঁন, সাইফুজ্জামান, এইচ এম ইব্রাহিম এবং গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট