চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

লোহাগাড়ার টঙ্কাবতী চরাঞ্চল

আদারচরে এখন আখের রাজত্ব

এম এম আহমদ মনির, লোহাগাড়া

১১ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:১১ পূর্বাহ্ণ

টঙ্কাবতীর খাল ঘেঁষে জেগে উঠেছে বালুচর। একদা আদাচাষের জন্য বিখ্যাত ছিল এ চর। যে কারণে এ চরের নামকরণ হয়েছে আদারচর। বিশাল আয়তনবিশিষ্ট এ চর বর্তমানে শাক-সবজি উৎপাদনের উর্বর ভূমি। উপজেলার কলাউজান ইউনিয়নের পূর্ব সীমানায় এ আদারচর। চরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে স্রােতস্বিনী টঙ্কাবতী খাল। খালের গতির পরিবর্তনের কারণে চরাঞ্চলের উপকারভোগী কৃষকেরা সারা বছর কর্মব্যস্ত থাকেন চাষাবাদ নিয়ে।

সাম্প্রতিককালে এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, এ চরাঞ্চলে শাক-সবজির ক্ষেতের পাশাপাশি সারি-সারি আখ ক্ষেত। প্রচুর চাহিদা আছে এ আখের। দূর-দূরান্তের পাইকারি ক্রেতারা এলাকায় এসে ক্ষেতের মালিকদের কাছ থেকে ক্রয় করে নিজেদের পছন্দের এলাকায় নিয়ে বিক্রি করেন। আবার, ক্ষেতের মালিকেরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় ভ্যানগাড়ি যোগে স্থানীয় বিভিন্ন হাট-বাজারেও বিক্রি করেন। বর্তমান মৌসুমে আখের উৎপাদন, চাহিদা ও সরবরাহ প্রচুর। উপজেলার আরো বিভিন্ন এলাকায় আখ উৎপাদন হয় বলে জানা গেছে। তাই এ আখ অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে বিবেচিত। এলাকা পরিদর্শনকালে আদারচরের আখচাষী রেখা বড়ুয়া জানান, চরের প্রায় ৪০ শতক জায়গায় চুক্তি করে অপরজন থেকে নিয়ে তিনি আখ চাষ শুরু করেন কয়েক বছর পূর্ব হতে। আখ চাষে লাভবান হওয়ায় তিনিসহ এলাকার রানু বড়–য়া, স্বপন বড়ুয়া প্রমুখ আখ চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েন।

আখ চাষ সম্পর্কে তিনি বলেন, বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে আবাদি জায়গায় সারি-সারি গর্ত করে ভাল জাতের আখের ডগা রোপণ করেন। প্রয়োজনমতো গোবরসহ নানা ধরনের সার প্রয়োগ করে পানি দেন। ডগা বড় হতে থাকলে সময়মতো কীটনাশক ঔষধ ছিটিয়ে পোকা-মাকড় ধ্বংস করেন এবং ক্ষেত সবসময় আগাছামুক্ত রাখেন। প্রতিনিয়ত ক্ষেতের পরিচর্যা করেন। রোপণ থেকে কাটা পর্যন্ত তার ২৫-৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয় বলে উল্লেখ করেন। পুরো একবছর পর পরবর্তী আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে আখ বড় হলে কেটে বিক্রি করেন পাইকারি ও খুচরা মূল্যে। বর্তমান মৌসুমে আখ বিক্রি করে কত পেতে পারেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, বাজার দর ভাল থাকলে আখ বিক্রি বাবদ তার লক্ষাধিক টাকা উপার্জন হতে পারে।

বাজারজাতকরণ সম্পর্কে তিনি জানান, কোন কোন সময় দূর-দূরান্তের পাইকারি ক্রেতারা এসে ক্ষেতে থাকা অবস্থায় ক্রয় করেন। আবার, তারা ভ্যানগাড়ি যোগে প্রতিটি ৬০/৫০/৩০ টাকা দরে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করেন।

উল্লেখ্য, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আখ উৎপাদন, চাহিদা ও সরবরাহ খুবই সন্তোষজনক। এ কারণে আদার চরের আখচাষীরা স্বাবলম্বী।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট