চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

খাতুনগঞ্জ

ফেলে দেয়া হচ্ছে পচা পেঁয়াজ

মিয়ানমারের পেঁয়াজে অধিকাংশই পচা

নিজস্ব প্রতিবেদক

৮ অক্টোবর, ২০১৯ | ৩:০৭ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারের আমদানি করা পেঁয়াজ নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন আমদানিকারক ও আড়তদাররা। বাজারে আসা অধিকাংশ পেঁয়াজের বস্তায় পচন ধরেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীরাও।
খাতুনগঞ্জ হামিদ উল্লাহ মার্কেটের আড়তদার মো. জাবেদ ইকবাল পূর্বকোণকে বলেন, ‘মিয়ানমারের পেঁয়াজে এখন বেশি পচন ধরছে। নি¤œমানের এসব পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছে। এছাড়াও প্রচুর পেঁয়াজ ফেলে দিতে হচ্ছে।’ ব্যবসায়ীরা জানায়, মিয়ানমার থেকে নৌপথে আসা পেঁয়াজবাহী ট্রলারে পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও আমদানিকারকেরা দেশীয় বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার লক্ষ্যে আমদানি করা পেঁয়াজ মজুদ করেছিল। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিক্রি করতে না পারায় পেঁয়াজের এখন পচন ধরেছে।
আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা আরও জানান, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ছাড়াও ভারত আমদানি করা পেঁয়াজেও পচন ধরেছে। পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ও পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য ৮৫০ ডলারে উন্নীত করার পর পেঁয়াজের সরবরাহ অনেকটা বন্ধ করে দিয়েছিল আমদানিকারকেরা। বাজারে পেঁয়াজের সংকট সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করা হয়েছিল। কিন্তু ভারতের বিকল্প হিসেবে মিয়ানমার, তুরস্ক ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হলে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানিকারকেরা মজুদ করা পেঁয়াজ বাজারে সরবরাহ শুরু করে। বেশিদিন ধরে মজুদ করা ভারতীয় পেঁয়াজেও পচন ধরেছে বলে জানায় ব্যবসায়ীরা।
আড়তদার জাবেদ ইকবাল বলেন, ভারতীয় নি¤œমানের পেঁয়াজ ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অনেক পেঁয়াজ ফেলে দিতে হচ্ছে।
পেঁয়াজের পাইকারি মোকাম চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে এখন পেঁয়াজের সরবরাহ অনেক বেড়েছে। সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দামও ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের উর্ধ্বগতি ফের দ্রুত নেমে এসেছে।
মজুদ করা পেঁয়াজে পচন ধরায় এখন বিপাকে পড়েছে আমদানিকারক, আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা। পচে যাওয়া পেঁয়াজ অস্বাভাবিক কম দাম বিক্রি বা ফেলে দিতে হচ্ছে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাজারে সংকট সৃষ্টি ও অস্থির করে অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় কিছু অসাধু আমদানিকারক ও আড়তদার পেঁয়াজ মজুদ করেছিল। তারা এখন বিপাকে পড়েছেন। লাভের বদলে এখন লোকসান গুনতে হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর ব্যবসায়ীরা অতিলাভের আশায় মিয়ানমার, তুরস্ক ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছিল। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় বাজার এখন নি¤œমুখী হয়ে গেছে।
খাতুনগঞ্জ হামিদ উল্লাহ মার্কেটের আড়তদার মো. জাবেদ ইকবাল পূর্বকোণকে বলেন, ‘গতকাল মিয়ানমারের আমদানিকারকেরা একট্রাক (৩শ বস্তা) পেঁয়াজ পাঠিয়েছেন। ৩শ বস্তা পেঁয়াজের প্রায় আড়াইশ বস্তা পচা পড়েছে। এসব পেঁয়াজের অধিকাংশই ফেলে দেওয়া ছাড়াও উপায় নেই। তবে পচা পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বিক্রি করতে হলেও উন্নতমানের পেঁয়াজের দাম তেমন একটা কমেনি বলে জানান তিনি।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় উন্নতমানের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৫৫-৬০ টাকা এবং মিয়ানমারের পেঁয়াজ মানভেদে ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে পচা পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে রয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরাও। ২নং গেট ষোলশহর কর্ণফুলী কমপ্লেক্স কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক আলহাজ এয়াকুব চৌধুরী বলেন, এক বস্তা পেঁয়াজে ৩ কেজির বেশি পচা যাচ্ছে। তাই পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা বিপাকে রয়েছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট