চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ওরা চায় মাদকমুক্ত ঝর্ণাপাড়া

১২ নং সরাইপাড়া ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

৮ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:৫৩ পূর্বাহ্ণ

‘দীর্ঘদিন থেকে এই এলাকাতে মাদক কেনা-বেচা হচ্ছে। মাঝেমধ্যে প্রশাসনের লোকজন এসে অভিযান চালালেও তার ফল ভালো ছিল না। তাছাড়া এলাকার অলিগলিতে যেভাবে মাদকের ছড়াছড়ি তাতে কিছুদিন পর এলাকার শিশু থেকে বৃদ্ধরাও এতে আসক্ত হয়ে পড়বে। অন্য দশটি এলাকার মতো এ এলাকাটিও যাতে সুন্দর থাকে সে চিন্তা নিয়ে ফেসবুক গ্রুপ খুলে এলাকার যুবকদের এড করি। তারপর থেকে মাদক বিরোধী বিভিন্ন কর্মসূচি শুরু। আমরা চাই মাদকমুক্ত একটি সুন্দর ঝর্ণাপাড়া’।
মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে যুবকদের নিয়ে এমন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার এ গল্প বলছিলেন নগরীর ১২ নং ওয়ার্ড সরাইপাড়ার ঝর্ণাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. সেলিম উল্যাহ। যিনি ফেসবুক গ্রুপ ‘ঝর্ণাপাড়া সচেতন যুব সমাজ’ এর এডমিন।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদকমুক্ত সমাজ মানে অপরাধমুক্ত একটি সমাজ। এ সমাজ বির্নিমাণে কাউকে না কাউকে এগিয়ে আসতে হবে। চোখের সামনে একটি সমাজ নষ্ট হয়ে যাবে, তা আমাদের কষ্ট দিবে। তাছাড়া সংবাদকর্মী হিসেবেও আমার দায়িত্ব আছে। সে দায়িত্ব থেকে এই উদ্যোগ।
উদ্যোগ গ্রহণ করলেও এর পৃষ্ঠপোষকতা করছেন এলাকার ব্যবসায়ী মমিনুল আলম শাহিন। তিনি এসব বিষয়ে দেখভাল করছেন। ইতোমধ্যে এলাকার যুবকরা প্রতিটি বাসা-বাড়িতে মাদকবিরোধী বিভিন্ন লিফলেট বিতরণসহ অভিভাবকদের সচেতন করছে। যাতে কোন সন্তান এই ফাঁদে পা না দেয়’।
খোঁজ নিয়ে যানা যায়, ঝর্ণাপাড়া এলাকাটি ডবলমুরিং থানার আওতায় পড়েছে। থানা পুলিশও বিভিন্ন সময় এলাকায় অভিযান চালিয়ে একাধিক মাদক বিক্রেতা ও ক্রেতাদের গ্রেপ্তার করলেও জামিনে বের হয়ে তারা আবার এসব কাজে জড়িয়ে পড়ে। তবে যুব সমাজের বিভিন্ন কর্মসূচির পর এলাকার চিহ্নিত এক নারী মাদক ব্যবসায়ী ইতোমধ্যে সংগঠনটির সাথে যোগাযোগ করেছেন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতেও চেয়েছেন ওই নারী।
এ বিষয়ে সেলিম উল্যাহ পূর্বকোণকে বলেন, তার দেখাদেখি অনেকেই যোগাযোগ করছে। তবে যারা স্বাভাবিক জীবনের ফিরতে চাইছে, আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করবো। প্রশাসনের সহযোগিতা পেলে আমরা মাদকমুক্ত সুন্দর ঝর্ণাপাড়া উপহার দিতে চাই।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ডবলমুরিং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সদীপ কুমার পূর্বকোণকে বলেন, এটা অত্যন্ত ভালো একটি কাজ। চাইলে পুলিশের পক্ষ থেকে সকল বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে। একটা এলাকা আসলেই পুরোপুরিভাবে পুলিশের পক্ষে মাদকমুক্ত করা বা ব্যবসায়ী-ক্রেতাদের চিহ্নিত করা কঠিন। তারা যে কাজটি করছে, অবশ্যই প্রশংসনীয় একটি কাজ।
এদিকে আগামী শুক্রবার (১১ অক্টোবর) এলাকায় মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে সংগঠনটি। ওই দিন এলাকার প্রতিটি বাসায় গিয়ে গণস্বাক্ষর সংগ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট