চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

এলজিইডির টেন্ডার পছন্দের ঠিকাদারকে দেয়ার পাঁয়তারা

অকেজো যন্ত্রাংশের নিলাম

ইফতেখারুল ইসলাম

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:৩১ পূর্বাহ্ণ

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) চট্টগ্রাম অফিসের অকেজো এবং মেরামত অযোগ্য যন্ত্রাংশের নিলাম কারসাজির মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারকে পাইয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এবিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঠিকাদারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও কোন প্রতিকার মিলেনি। ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খাজা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জিল্লুর রহমান পূর্বকোণকে জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় গত ১৯ আগস্ট তাদের অকেজো ও মেরামত অযোগ্য যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ নিলামে বিক্রির দরপত্র আহ্বান করে। গত ১২ সেপ্টেম্বর ছিল দরপত্র খোলার তারিখ। ষোলশহর এলাকায় এলজিইডি অফিসে দরপত্রের একটি বাক্স বসানো হয়। আরেকটি বাক্স বসানো হয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে। দরপত্র খোলার সময় ছিল বিকাল ৩টা।

নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর নির্বাহী প্রকৌশলীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে বসানো বাক্সে কোন দরপত্র পড়ছে কিনা খোঁজ নেয়া হয়। তখন সেখান থেকে জানানো হয় ওই বাক্সে কোন দরপত্র জমা পড়েনি। সেই খবর পাওয়ার পর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে বসানো বাক্সটি সবার সামনে খুলে দেখা যায়, খাজা এন্টারপ্রাইজ প্রথম হয়েছে। তাদের দর ছিল ৯ লাখ ৬৮ হাজার ৩৬৮ টাকা। খাজা এন্টারপ্রাইজকে প্রথম ঘোষণা করার প্রায় আধা ঘণ্টা পর আবার বলা হয়, জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের বাক্সে আরো দুইটি দরপত্র পড়েছে। সেইগুলো আনা হচ্ছে। সাড়ে চারটার দিকে একজন অফিস পিয়ন হাতে করে দুইটি খোলা দরপত্র নিয়ে এসে জমা দেন প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের কাছে। তিনি দরপত্র দুইটি নিয়ে ঘোষণা দেন আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে। ওই প্রতিষ্ঠান ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকা দর দিয়েছে বলে উপস্থিত ঠিকাদারদের জানানো হয়। এসময় প্রথমবার ঘোষণা পাওয়া ঠিকাদার প্রতিবাদ করে বলেন, প্রথমে ঘোষণা দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসন অফিসে কোন দরপত্র পড়েনি। এখন দুইটি খোলা দরপত্র এনে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে কাজটি দেয়া হচ্ছে। যা পুরো অনিয়ম। কারণ একটি কাজের জন্য যতগুলি বাক্স যত জায়গায় বসানো হোক না কেন, সব বাক্স এক জায়গায় এনে একসাথে খুলতে হবে। এখানে তা মানা হয়নি। এলজিইডি অফিসের বাক্সটি খোলার পর সেখানে সর্বোচ্চ দর কত তা জেনে তড়িঘড়ি করে একটি ফরম পূরণ করে নির্ধারিত সময়ের পর জমা দেয়া হয়েছে। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে দরপত্রের ৫নং শর্ত ভঙ্গ করেছে। ৫নং শর্তে লেখা আছে, প্রতিটি আইটেমওয়ারি দর দিতে হবে। কিন্তু যাকে এখন কাজটি দেয়া হচ্ছে সেই প্রতিষ্ঠান সেই শর্ত মানেনি। তিনি এই ঘটনাকে এলজিইডি’র অফিসের কারসাজি বলে দাবি করেন।

জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জামান পূর্বকোণকে বলেন, বাক্সটি ডিসি অফিস খুলে লিখে দেয় কয়টি দরপত্র পেয়েছে। সব জায়গায় একই সময়ে বাক্স বন্ধ করা হয়েছে। এটি মূল্যায়ন কমিটি দেখবে। এখানে সরকারি স্বার্থটা আগে দেখা হবে। আইটেমওয়ারি দর দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইটেমওয়ারি দর না দিলে যে বাতিল হবে তাও শর্তে লেখা নাই। এটা অভিজ্ঞতা হল ভবিষ্যতে হয়তো এই ধরনের শর্ত দেয়া হবে না। তবে কেউ এলজিইডি অফিসের কেউ এখানে দর দেখে কাউকে বলে দেয়ার কথাটা সত্য নয়। তারপরও মূল্যায়ন কমিটি তাদের প্রতিবেদন প্রধান প্রকৌশলীর কাছে পাঠাবে। তিনিই সিদ্ধান্ত দেবেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট