লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের গভীর অরণ্য, পাহাড়-টিলা বেষ্টিত পানত্রিশা গ্রাম। এই গ্রামের সহজ-সরল মানুষগুলোর সিংহভাগ শ্রমপ্রিয় ও বনজ সম্পদের উপর নির্ভরশীল।
অনেকের বসবাস পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে উঠা লোকালয়ের জীর্ণশীর্ণ কুটিরে। রোগ-শোক ও আর্থিক অভাব-অনটনে অনেকে দিশেহারা। পাহাড়ের ঢালুস্থানে বা সমতল ভূমিতে চাষাবাদ করতেন এলাকার কৃষকেরা। গ্রামের মূল ভুখ-ের উপর দিয়ে বয়ে গেছে চাম্বী খাল। পাশে রয়েছে ডলু ও সরই খাল। গরমকালে পানি খরা থাকলেও বর্ষায় অথৈ পানিতে প্লাবিত হয় দু’কুল। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চাষিরা। পানি নিষ্কাশন বা সেচের কোন ব্যবস্থা না থাকায় পাহাড় থেকে গড়িয়ে আসা পানিও সহজে খালের মধ্যে পড়ে যায়। যে কারণে চাষিরা সময়ের প্রয়োজনে ধান বা শাক-সবজি ক্ষেতে পানি দিতে পারেন। ফলে, চাষাবাদে তাঁরা নানা ভোগান্তির শিকার হল। অবশেষে, পানত্রিশা গ্রামের মূল ভূখন্ডের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চাম্বী খালের উপর রাবার ড্যাম স্থাপনের পরিকল্পনা চলতে থাকে। পরিকল্পনা মতে গত ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে এ’রাবার ড্যাম স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয় এবং ২০১৯ সালের জুলাই মাসে কাজ শেষ হয়।
তাতে প্রায় ৫ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা ব্যয় হয় বলে সূত্রে জানা গেছে। উক্ত রাবার ড্যামের দৈর্ঘ্য ১৮ মি. এবং উচ্চতা সাড়ে ৪ মিটার। এ’প্রসঙ্গে ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, রাবার ড্যামটি এলাকার কৃষকদের ভাগ্যের দুয়ার খুলে দিয়েছে। আমন চাষী ও শাক-সবজি উৎপাদনে ক্ষেতের মালিকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। বহু অনাবাদী জায়গা চাষের আওতায় এসেছে বলে তিনি জানান। পাশাপাশি মৎস্যচাষেরও উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপকারভোগী জনৈক কৃষক জানান, চাম্বী খালে রাবার ড্যাম হওয়ায় পানত্রিশা এলাকার কৃষকদের ভাগ্যের দুয়ার খুলে গেছে। তারা পানি সেব ব্যবস্থায় চাষাবাদে উপকৃত বলে উল্লেখ করে।