চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

হুমকির মুখে জাহাজ ভাঙা শিল্প

ষ স্ক্র্যাপের দাম কমে শত কোটি লোকসান ষ নতুন করে ৫ শতাংশ ভ্যাট বৃদ্ধি ষ চালান গ্রহণ করছে না ভ্যাট অফিস

নিজস্ব সংবাদদাতা হ সীতাকু-

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:০৬ পূর্বাহ্ণ

সীতাকু-ে জাহাজ ভাঙা শিল্পে চরম দুঃসময় চলছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে স্ক্র্যাপ লোহার মূল্যে ধস নামার পাশাপাশি ইতিপূর্বে সবরকম ভ্যাট-ট্যাক্স পরিশোধ করে ইয়ার্ডে আনা পুরোনো জাহাজের উপর নতুন করে আরো এক দফা ভ্যাট আরোপ করায় এ শিল্পের সাথে জড়িতরা বিরাট অংকের টাকা লোকসানের মুখে পড়েছেন। ফলে ক্ষোভ ও হতাশায় স্ক্র্যাপ লোহা বেচাকেনা বন্ধ রেখেছেন তারা। যা এ শিল্পকে হুমকির মুখে ফেলছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের সীতাকু-ে অবস্থিত দেশের একমাত্র জাহাজ ভাঙা শিল্প এলাকায় বর্তমানে শতাধিক জাহাজ ভাঙা উঠোন আছে। এর মধ্যে সচল ইয়ার্ড আছে ৬০টি। লোকসানসহ নানান কারণে অন্য ইয়ার্ডগুলো বন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। এদিকে, নানান প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও যে ৬০টি ইয়ার্ডের মালিক এখানে এখনো ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে নানামুখি প্রতিবন্ধকতায় তারা কোটি কোটি টাকা লোকসানের শিকার হয়ে ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়ছেন। সর্বশেষ স্থানীয় বাজারে স্ক্র্যাপ লোহার চরম দরপতন ও পুরোনো স্ক্র্যাপ জাহাজের ভ্যাট পরিশোধের পরও নতুন করে আবারো ভ্যাট আরোপ করায় মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এসব ক্ষোভে তারা গত বুধবার থেকে স্ক্র্যাপ লোহা বেচাকেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। যা এই শিল্পকে ক্রমশ হুমকির মুখে ফেলেছে। বাংলাদেশ শিপব্রেকিং এন্ড রি-সাইক্লিং এসোসিয়েশনের সাবেক সহ-সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে। নানামুখি সমস্যা মোকাবিলা করতে করতে আমরা

ক্লান্ত। তিনি বলেন, আমরা সরকারি সকল নিয়ম মেনে, সকল রকম ভ্যাট-ট্যাক্স পরিশোধ করে স্ক্র্যাপ জাহাজ ইয়ার্ডে আনার ছাড়পত্র পাই। এভাবেই নিয়মিত জাহাজ আসে। সম্প্রতি আমাদের কাছে এনবিআর থেকে একটি চিঠি পাঠিয়ে বলা হয় ৩০ জুন পর্যন্ত যেসব জাহাজ আমদানি করা হয়েছিল সেসব জাহাজকে আবারো টন প্রতি ১ হাজার টাকা করে ভ্যাট দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, ৩০ জুন পর্যন্ত আমদানি করা অন্তত ৫ লাখ টন লোহা আছে। তাহলে কি পরিমাণ টাকা আমাদের আবারো ভ্যাট দিতে হবে! এই ভ্যাট আমরা পরিশোধ না করায় চট্টগ্রাম ভ্যাট অফিস এখন আমাদের কাছ থেকে মাল বিক্রির চালান গ্রহণ করছে না। এসব অতিরিক্ত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে অবস্থা জানাতে আমরা বিএসবিএর একটি প্রতিনিধি দল বুধবার এনবিআর এর চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ভূঁইয়ার সাথে দেখা করেছি। তিনি সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবার আশ^াস দিয়েছেন। এখন আমরা সেদিকেই তাকিয়ে আছি।

সীতাকু-ের মাদাম বিবিরহাটের এস.এল স্টিল লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী মো. লোকমান বলেন, এই শিল্পটিকে নানাভাবে গলাটিপে হত্যা করার চেষ্টা চলছে। আগে আমরা প্রতি টনে ভ্যাট দিয়েছি ২৪শ টাকা। এখন আরো ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করায় প্রতি টনে আরো ২ হাজার থেকে ২২শ টাকা অতিরিক্ত দিতে হবে। শিল্পের ভ্যাট না কমিয়ে এভাবে বাড়াতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে এ ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট