চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

কেন্দ্রের কাছে আপত্তি

ওয়ার্ড যুবলীগ সাংসদরা কমিটি দিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা

ইফতেখারুল ইসলাম

২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:২৫ পূর্বাহ্ণ

সাংসদদের মাধ্যমে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের ওয়ার্ড কমিটি গঠনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছেন নগর আওয়ামী লীগ। সংগঠনের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গত শুক্রবার চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সামনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে আপত্তির বিষয়টি তুলে ধরেন।

নগর আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা পূর্বকোণকে জানান, নগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তমতে লিখিতভাবে দলের শীর্ষ নেতাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কারণ নগর যুবলীগের ওয়ার্ড কমিটি যেভাবে গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা গঠনতন্ত্র অনুমোদন করে না। তাতে দ্বৈত কর্তৃত্ব সৃষ্টি হবে। কারণ এমপি’রা কমিটি দিলে সংগঠনের ওপর তাদের কর্তৃত্ব থাকবে, অপরদিকে রয়েছে সংগঠন। নিয়ম হল গঠনতন্ত্রানুযায়ী সংগঠনই কমিটি গঠন করবে। এনিয়ে নগর যুবলীগের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে। ক্যাসিনো, জুয়া, মানি ল-ারিংসহ নানা অভিযোগের কারণে যুবলীগ বেকায়দায় থাকায় নিজেদের ক্ষোভের কথা প্রকাশ্যে বলতে পারছেন না তারা।

নগর যুবলীগের ৪৩ টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪টি ওয়ার্ড পড়েছে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপির সংসদীয় এলাকায়। সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীন এমপির সংসদীয় এলাকায় পড়েছে ৯টি ওয়ার্ড। এম এ লতিফ এমপির সংসদীয় এলাকায় পড়েছে ১০টি ওয়ার্ড। সীতাকু-ের এমপি দিদারুল আলমের সংসদীয় এলাকায় পড়েছে দুইটি ওয়ার্ড। এছাড়া মহাজোটের এমপি মাঈনুদ্দিন খান বাদলের সংসদীয় এলাকায় ৬টি এবং ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সংসদীয় এলাকায় দুইটি ওয়ার্ড পড়েছে। নগর যুবলীগের বর্তমান আহবায়ক কমিটি ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র পাঁচটি ওয়ার্ডের কমিটি করতে পেরেছে। বাকি ৩৮টি ওয়ার্ড এখনো বাকি আছে।

জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন পূর্বকোণকে বলেন, কোন ধরনের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া ছাড়া কারো পকেট থেকে এভাবে যুবলীগের ওয়ার্ড কমিটি দিতে পারে কিনা, এভাবে কমিটি দেয়ার ক্ষমতা এবং সক্ষমতা আছে কিনা সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছ থেকে দিক নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরে যুবলীগের একটি কমিটি আছে। তাদের মাধ্যমে ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটিগুলো করা উচিত। তারা যদি কমিটি করতে ব্যর্থ হয় তাহলে নগর আওয়ামী লীগের সহযোগিতা নিতে পারে। এখন যাদের মাধ্যমে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাদের অনেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে অনেক দুরে। যারা দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকেন না তাদের পক্ষে ত্যাগী কর্মীদের বাছাই করা সম্ভব নয়। আর ত্যাগী এবং পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা বাদ গেলে তাদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে। অসন্তোষের কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। তাতে যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায়, তখন মূল সংগঠন হিসেবে সব দায় আওয়ামী লীগের উপর বর্তাবে। চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে সেই বার্তাটি দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছি। এক্ষেত্রে নগর আওয়ামী লীগের করণীয় বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা চেয়েছি।
তিনি জানান, ‘নগর যুবলীগের সম্মেলনের সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলতাফ হোসেন চৌধুরীকেও আশঙ্কার কথা বলেছি। তাকে বলেছি এমন কোন কাজ করবেন না যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট