চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বেসরকারি খাতেও পেনশন চালুর পরিকল্পনার কথা জানালেন তথ্যমন্ত্রী

‘শিক্ষার্থীদের স্কুলেই নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:৫৬ পূর্বাহ্ণ

‘আজকে নানা ক্ষেত্রে সামাজিক অবক্ষয় হয়েছে। ছোটবেলায় আমরা গুণীজন ও বাবা-মাকে সম্মান করার যে শিক্ষা পেয়েছি, এখনকার প্রজন্মের ক্ষেত্রে সেটা সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। বিশ্বব্যাপী একটা অবক্ষয় হয়েছে। আমাদের দেশও সেই অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। স্কুলে নৈতিক শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন, সেখানে গুরুজনদের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য কী সেটা শেখানো হবে। পরিবারের গুরুজন বৃদ্ধ হয়ে গেলে সেই শিক্ষা দিলে হবে না। ছোট বেলা থেকে সন্তানকে শিক্ষা দিতে হবে।’ গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বয়োজ্যেষ্ঠ সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। ‘দি সিনিয়র সিটিজেন্স সোসাইটি চট্টগ্রাম’ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গেলে সবসময় বলি, আজকে তোমাদের বাবা-মা তোমাকে আদর-যত্ন করে বড় করছে। তোমরা যখন বড় হবে তখন তোমাদের বাবা-মা তোমাদের সন্তানের মতো হবে। তোমাদের আজকে যে ¯েœহে লালন-পালন করছে, তারা যখন বয়স্ক হবে তখন তোমরা একই ¯েœহে তাদের লালন-পালন করবে। এই শিক্ষাটা যদি এখন থেকে পরিবারে দেয়া না হয়, স্কুলে দেয়া না হয় তাহলে তাকে পরে সেভাবে বোঝানো যাবে না। এসব বিষয়ে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সিনিয়র সিটিজেন সোসাইটি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, সেমিনার আয়োজন করতে পারে বলেও মত দেন তথ্যমন্ত্রী।’

সরকারি খাতের মতো বেসরকারি খাতেও সরকারের পেনশন চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়েছেন। সংসদে মা-বাবার ভরণপোষণ সম্পর্কে আইন পাস হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কোন সন্তান যদি বাবা-মায়ের প্রতি কর্তব্য পালন না করেন, তাহলে সেই আইন অনুযায়ী বাবা-মা এখন আদালতে যেতে পারেন। এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই আইনে মামলাও হচ্ছে।

দি সিনিয়র সিটিজেন সোসাইটির সভাপতি ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দি সিনিয়র সিটিজেন্স সোসাইটি চট্টগ্রাম’র সাধারণ সম্পাদক লায়ন এম সামশুল হক। এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন মহাসচিব মো. আবু বকর সিদ্দীক। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আজকাল দেখা যায় অনেক সন্তান মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমের রেখে আসছেন। বাবা-মা’র সাথে কিছুটা মুহূর্ত কাটানোর সময়টুকু সন্তানদের নেই। এটা সামাজিক অবক্ষয়ের প্রভাব। এই অবক্ষয় রোধে প্রয়োজন ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা। শিশু বয়স থেকেই যদি নিজেদের সন্তানদের নৈতিক শিক্ষায় গড়ে তোলা যায় তবেই এসব সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব।

সভাপতির বক্তব্যে দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, আমরা যারা সিনিয়র সিটিজেন আছি আমাদের একটা ধারণা রয়েছে, আমরা অবসরে গেলেই মনে করি আমার বুঝি সব শেষ। সেটা হচ্ছে আমাদের মনের ভুল। মরার আগে ভয়ে মরে যাওয়ার মত। আমরা যারা বয়স্ক হয়েছি, আমাদের মন খারাপ করার কিছু নেই। আমাদের যে অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং আমরা যা কিছু অর্জন করেছি সেগুলো যদি আমরা সমাজকে দিতে পারি তাহলে আমাদের সার্থকতা।
দি সিনিয়র সিটিজেন্স সোসাইটি চট্টগ্রামের ৬জন খ্যাতিমান বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিককে সম্মাননা প্রদান করেছে। তাঁরা হলেন-চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মো. আলী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও চেয়ারম্যান এ এ এম জিয়া হোসাইন, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শিক্ষাবিদ ড. প্রণব কুমার বড়–য়া, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট মাহবুব উদ্দিন আহমদ, কবি-লেখক ও সাংবাদিক অরুণ দাশগুপ্ত এবং উদীচী চট্টগ্রাম সভাপতি, লেখক ও মহিলা নেত্রী বেগম মুশতারী শফি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট