চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

কর্ণফুলী ৫ ইউনিয়নে আ.লীগের কার্যক্রম চলছে দু’ পদে

মোর্শেদ নয়ন, কর্ণফুলী

২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:০৪ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী উপজেলার আওতাধীন পাঁচ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই দীর্ঘদিন ধরে। তিন মাসের মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার কথা থাকলেও প্রায় সাড়ে তিন বছর পার হয়েছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদেই। এর মধ্যে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন একবছর আগে মারা গেছেন। এতে এলাকাগুলোতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ৮ মার্চ উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে শিকলবাহা ইউনিয়নে দিদারুল ইসলাম চৌধুরী সভাপতি ও আবদুল করিম ফোরকান সাধারণ সম্পাদক, চর পাথরঘাটায় সৈয়দ আহমদ সভাপতি ও জসিম উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক, চরলক্ষ্যায় রফিক আহমদ সভাপতি ও মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ সাধারণ সম্পাদক, জুলধায় আমির আহমদ সভাপতি ও রফিক আহমদ সাধারণ সম্পাদক এবং বড় উঠানে আমজাদ হোসেন সভাপতি ও আবদুল মান্নান খানকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্মেলন করতে না পারায় তৎকালীন ভূমি প্রতিমন্ত্রীর পরামর্শে আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিলেন। বিজ্ঞপ্তিতে তিন মাসের মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার কথা থাকলেও সভাপতি-সা. সম্পাদক পার করেছেন বছরের পর বছর। এর মধ্যে চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন আ. লীগ সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন একবছর আগে মারা গেছেন।

এদিকে গত বছরের ২২ অক্টোবর সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমদের স্থলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরীকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির অধীনে সদস্য সংগ্রহ অভিযান, ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিলে কর্ণফুলী উপজেলায় নেতাকর্মীদের মাঝে চাঙ্গাভাব বিরাজ করে। পদ পেতে চলে লবিং আর তদবির। কিন্তু সে উদ্যোগও থমকে যায়।

নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, উপজেলার আওতাধীন পাঁচ ইউনিয়নে প্রতিটি কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তিন বছর পরও একটি কমিটিতেও নতুন কোনো নেতার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তাছাড়া আওয়ামী লীগের অন্য কোনো সহযোগী সংগঠনের কমিটি নেই এসব ইউনিয়নে। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় কর্ণফুলী এলাকায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এসব কমিটির উদ্যোগে জাতীয় দিবস ও দলীয় কর্মসূচি ঠিকমত পালন করা হয় না। আগস্ট মাসে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে একমাত্র বড়উঠান ইউনিয়ন আ.লীগ শোকসভা করেছে। জুলধা আ. লীগ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও চরলক্ষ্যা মসজিদে দোয়া মাহফিল করে দায় সারলেও চরপাথরঘাটা ও শিকলবাহা ইউনিয়ন আ. লীগকে কোন কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক নেতা বলেন, দীর্ঘদিন দল ক্ষমতায় আছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত করতে দলীয় কার্যক্রমকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারছেন না এখানকার আওয়ামী লীগ নেতারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক চৌধুরী দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আ. লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির নির্দেশনা মোতাবেক নিষ্ক্রিয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাউকে কাউকে বাদ দিয়ে কো-অপ্টের মাধ্যমে নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করে ইউনিয়ন আ. লীগের কমিটিগুলো শীঘ্রই পূর্ণাঙ্গ করা হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট