চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কিশোর গ্যাংয়ের অপকর্মে অতিষ্ঠ চান্দগাঁওবাসী

৪ নং চান্দগাঁও ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

সম্প্রতি নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে বেশ কিছু কিশোর গ্যাং। তারা তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী ঘটনাও ঘটাচ্ছে। এক এলাকার ছেলে অন্য এলাকায় গেলেই মারধর করছে। শুধু তাই নয়, তাদের সম্মান না দেখালে, মেয়ে সংক্রান্ত বিষয়, সিনিয়র-জুনিয়র এসব ব্যাপারেও অহরহ ঘটছে মারামারির ঘটনা। এলাকার বাসিন্দারা জানান, সম্প্রতি এলাকায় খুন, মারামারি, চুরি-ছিনতাই, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা, প্রকাশে ইয়াবা, গাঁজা ও মদ বেচাকেনার মত অপরাধ দিনদিন বেড়েই চলছে।

এই কিশোর গ্যাংয়ের জন্য এলাকার মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। রাতের বেলায় এ এলাকার অনেক জায়গা দিয়ে চলাফেরা করতেও ভয় পায় মানুষ। কারণ এরা দল বল নিয়ে সামনে এসে নানাভাবে হেনস্তা করে ও পকেট হাতিয়ে টাকা মোবাইলসহ যা পায় নিয়ে যায়। এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বয়স মাত্র ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। এরা মূলত এলাকায় একাধিক রাজনৈতিক বড় ভাই নামধারীর ছত্রছায়ায় এসব অপকর্ম করছে। ১০ থেকে ১৫ জনের এক একটি দল এক এক ভাইয়ের নামে চলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নামধারী কিছু তরুণ দোকানে এসে চাঁদা দাবি করে। না দিলে দোকানে তালা মেরে দেবে, এখানে ব্যবসা করতে দেবে না ও নানারকম হুমকি ধমকি দেয়। এ ধরনের বেশ কয়েকটি দল রয়েছে। আমরাও ভয়ে নিরব থাকি আর চাঁদা দিয়ে এদের বিদায় করি। শুধু তাই নয় ছোটখাটো দোকানদার যেমন, ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করছে ও রিকশাচালকদের থেকেও চাঁদা নেয় এই চক্রের ছেলেরা। চুনার টাল এলাকার বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে ডিস ব্যবসা নিয়ে চান্দগাঁও থানার সামনেই একজন আরেকজনকে খুন করেছে। আর এদের বয়স মাত্র ১৯ থেকে ২০ বছর হবে। আবার এরা সম্পর্কে আত্মীয়। একমাত্র নিজেদের আধিপত্য স্থাপন করার জন্যই এই খুনটি হয়েছে। তারা মনে করে আমাদের ক্ষমতা বেশি আমরাই এখানে ব্যবসা করবো আর কেউ পারবে না। এতে যদি খুন করতে হয় তবে তাই করবো। চান্দগাঁও ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে এক বছরে প্রায় পাঁচ থেকে ছয়টি খুন হয়েছে। বন্ধু বন্ধুকে ছুরি মেরে খুন, পাথর দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়া, মেরে গুরুতর আহত করা এসব ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এলাকার আরেক বাসিন্দা মো. আব্দুল লতিফ বলেন, এই কিশোর গ্যাং নানারকম অপরাধমূলক কর্মকা- ছাড়াও এলাকায় নতুন ভবন নির্মাণ করতে গেলে চাঁদা চাইতে আসে। দাবি করে কয়েক লাখ টাকা। এক বা দু’টি দল নয় কয়েকটি দলকে এভাবে চাঁদা দিতে হয়। এদের জ্বালায় আমরা অতিষ্ঠ। থানায় গেলেও পুলিশ মামলা নিতে চায় না। আরো বলে নিজেদের মধ্যে সমাধান করে নিন। আমার একটি ভবন

একবছর আগে মাত্র কাজ শুরু করেছি। তখনি কয়েকটা দলের ছেলে এসে আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। না হয় কাজ করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। দুই লাখ টাকা চাঁদাও দিয়েছি। আমার বাড়ির দোতলা পর্যন্ত কাজ হয়েছে, এর মধ্যে আরো একটি দল চাঁদা চেয়ে বসে। তাই আমি কোন রকমে দোতলা করে ঘরে ঢুকেছি। বাকি তিন তলার কাজ শুরু করতে পারছি না। ওরা বলে চাঁদা না দিলে ভবনের কাজ করা যাবেনা। উল্লেখ্য চান্দগাঁও ওয়ার্ডের পুরাতন চান্দগাঁও থানা, চুনার টাল, কোলা পাড়া, বলির হাট, মৌলভীপুকুর পাড়, দর্জি পাড়া, বিসিক শিল্প এলাকার বরিশাল কলোনিতে এ গ্যাং অনেক সক্রিয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট