চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

জাস্ট ভুল বোঝাবুঝি : কাস্টম কমিশনার

বন্দরে প্রবেশের পাস না পেয়ে কাজ বন্ধ করে ‘প্রতিবাদ’ কাস্টমসের

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:২৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশের গেট পাস না পাওয়ায় কাস্টমসের আনস্টাফিংয়ের কাজ তিন ঘণ্টা বন্ধ রেখেছে কাস্টমস কর্মকর্তারা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে বন্দরের ৪ নম্বর গেটে পাস নিয়ে বন্দর নিরাপত্তাকর্মীর সাথে কাস্টমস কর্মকর্তারা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে বন্দর গেট থেকে ফিরে এসে কর্মকর্তারা কাস্টমসের কাজ বন্ধ রাখে। এ কারণে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কোন ধরণের কাজ হয়নি। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাস্টমস সংশ্লিষ্টরা। সুত্র জানায়, আইএসপিএস কোড অনুসারে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশের জন্য আগের দিন বিকেলে আবেদন করতে হয়। পরদিন সকাল থেকে অনুমোদন হওয়া গেট পাস নিয়েই কেবল বন্দরে প্রবেশ করতে পারেন সংশ্লিষ্টরা। আবার বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান সাপেক্ষে কাস্টমসের কর্মকর্তারা স্থায়ী অথবা অস্থায়ী পাস নিয়ে থাকেন। বন্দরের অভ্যন্তরে যতক্ষণ থাকেন ততক্ষণই সেই পাস গ্রহীতা কাস্টমস কর্মকর্তার কাছে রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বায়োমেট্রিক পাস ছাড়া কোনভাবেই বন্দরে প্রবেশের কোন সুযোগ নেই।

বন্দর নিরাপত্তা সুত্র জানায়, নিয়মানুযায়ী সোমবার বিকেলে বন্দরে প্রবেশের জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমসের তিন কর্মকর্তা আবেদন করেন। তাদের গেটপাস অনুমোদনও হয়। মঙ্গলবার সকালে তিনজনের পাস নিয়ে ৬ কর্মকর্তা বন্দরের অভ্যন্তরের প্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় নিরাপত্তা কর্মীরা তিনজনের সঙ্গে পাস না থাকায় তাদেরকে গেটে আটকে দেন। কিন্তু কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার সাধন কু- পাস না থাকা কাস্টমস কর্মকর্তাদেরও বন্দরের প্রবেশ করানোর চেষ্টা চালান। এ নিয়ে যুগ্ম কমিশনার সাধন কু-’র সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (নিরাপত্তা) মেজর রেজাউল হকের বাকবিত-া হয়।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, এ ঘটনার জেরে কাস্টমস কর্মকর্তারা মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অঘোষিতভাবে কাজ বন্ধ করে দেন।
জানতে চাইলে কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার সাধন কু- পূর্বকোণকে বলেন, আমাদের কিছু কর্মকর্তা নতুন জয়েন করেছেন। তাদের বায়োমেট্রিক পাস এখনো অনুমোদন করেননি বন্দর নিরাপত্তা বিভাগ। এতে কর্মকর্তাদের কাজ করতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছিল। আমাদের তিন কর্মকর্তাকে বন্দরের প্রবেশ করতে না দেয়ার বিষয়টি কাস্টমস কমিশনারকে জানিয়েছি।
কাস্টমসে কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কমিশনার স্যারের রুমে থাকার সময় কাজ বন্ধ ছিল। হয়ত ৪০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা কাজ বন্ধ ছিল।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বন্দরের উপ-পরিচালক (নিরাপত্তা) মেজর রেজাউল হক পূর্বকোণকে বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল শিপ এন্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটি সিকিউরিটি (আইএসপিএস) কোড অনুসারে পাস ছাড়া কাউকে বন্দরে প্রবেশ করতে দিতে পারি না। কাস্টমসের অতিরিক্ত তিন কর্মকর্তার পাস না থাকায় তাদের জন্য নতুন করে পাস দিতে ২/৩ ঘণ্টা সময় লাগবে, এটা বলার পর কাস্টমস কর্মকর্তারা নিরাপত্তা বিভাগের লোকজনের সঙ্গে বাক বিত-া শুরু করে। পরে আমার সঙ্গেও তারা উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করে।’

রেজাউল হক বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুরক্ষিত রাখতে হলে আমাদের পক্ষে তো আইনের বাইরে কিছু করা সম্ভব না।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মো. ফখরুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, ‘সকালে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে সাথে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি বন্দর নিরাপত্তার কর্মকর্তার সাথে কথা বলে মিটমাট করে দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘কিছু নতুন কর্মকর্তা সদ্য যোগদান করেছের কাস্টমস হাউসে। ফলে তাদের আইএফআইডি কার্ড এখনো হয়নি। কিন্তু কাস্টমসের আইডি কার্ড ব্যবহার করে তারা দুইদিন আগেও বন্দরের ভিতরে প্রবেশ করেছে। মঙ্গলবার সকালে প্রবেশ করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। পরে নিরাপত্তা বিভাগ থেকে দুপুরে পাস দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল। এটি জাস্ট ভুল বোঝাবুঝি।’
এদিকে, চট্টগ্রাম কাস্টমসে তিন ঘণ্টা কাজ বন্ধ থাকায় সেবা গ্রহীতাদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট