চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

৩৮ ওয়ার্ডে আহ্বায়ক কমিটি দেবেন এমপিরা

আ. লীগ ও যুবলীগে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া, বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা

ইফতেখারুল ইসলাম

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:২৪ পূর্বাহ্ণ

আগামী মাসেই চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সম্মেলন হবে। এমাসেই ওয়ার্ডসমূহের আহবায়ক কমিটি গঠিত হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্যরাই ওয়ার্ডের আহবায়ক কমিটিগুলো গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। যারা কমিটিতে স্থান পাবেন তারাই কাউন্সিলর হিসেবে গণ্য হবেন। তবে সাংসদদের এককভাবে ওয়ার্ড কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেয়ায় নগর আওয়ামী লীগ এবং যুবলীগের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাদের কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এককভাবে এমপি’রা কমিটি গঠন করলে তা একপেশে হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।

জানতে চাইলে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে তারা ওয়ার্ড কমিটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব দিয়েছি। যে তালিকা নেয়া হচ্ছে তা কমিটি হিসেবে অনুমোদন দেয়া হবে। আগামী মাসে সম্মেলন হবে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট দিয়ে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে। কেউ যদি কাউন্সিলর হওয়ার সুযোগ না পায়নি, কিন্তু কোন কাউন্সিলর তার নাম সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদে প্রস্তাব করে এবং অপর একজন তাকে সমর্থন করে তাহলে তিনি কাউন্সিলে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। যেহেতু দীর্ঘ দিন সম্মেলন হয়নি তাই অনেকেই পদ-পদবী থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আপাতত সংসদ সদস্যরা কাউন্সিলর মনোনয়ন করে দিলেও সম্মেলনের পর আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুরোধ রক্ষা করা হবে। কাউকে অসম্মান করা হবে না।
ওয়ার্ড কমিটি তথা কাউন্সিলর মনোনয়নের ক্ষেত্রে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সাথে পরামর্শ করেছেন কিনা জানতে চাইলে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, তাদের সাথে কথা হয়েছে এবং আরো হবে। যারা স্থানীয় সাংসদ আছেন তারাই এটা করুক। সাংসদদের সাথে বিভাজন করার সুযোগ নেই।

নগর আওয়ামী লীগের সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু পূর্বকোণকে বলেন, চেয়ারম্যান যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন সেভাবে কাজ করছি। নগরের যে পাঁচটি ওয়ার্ডে সম্মেলন হয়েছে সেইগুলি বাদ দিয়ে বাকি ওয়ার্ডগুলিতে তিন মাসের জন্য একটি করে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হচ্ছে। একজন আহবায়ক, দুইজন আহবায়ক এবং বাকিরা সদস্য। তিনি জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্যরা কমিটিগুলি দেবেন। সংসদ সদস্য এম এ লতিফ আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান যুবলীগ থেকে নাম চেয়েছেন। তিনি দুইদিক থেকে তালিকা নিয়ে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করবেন। তিনি যদি মনে করেন তাহলে নগর যুবলীগের সাথেও কথা বলবেন। বাকি সাংসদ ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং ডা. আফছারুল আমীনও একইভাবে তাদের নিজ নিজ এলাকার ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে দেবেন। সাংসদরা যে তালিকা দেবেন তা কেন্দ্রীয় যুবলীগের কাছে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন পেলে তারা কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হবেন।
সাংসদ মাঈনুদ্দিন খান বাদল এবং ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের এলাকায় যে সাতটি ওয়ার্ড পড়েছে সেখানে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাথে কথা বলে মহানগর যুবলীগের সহযোগিতায় আহবায়ক কমিটি গঠন করা হবে।

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ও নগর যুবলীগের সভাপতি পদ প্রত্যাশী আবদুল মান্নান ফেরদৌস পূর্বকোণকে বলেন, অতীতে একপেশে কমিটি হওয়ার কারণে বড় একটি অংশ যুবলীগের পদ পদবীর বাইরে। গত কমিটি মাত্র সাতজন পেয়েছি। সংসদ সদস্যরা আমাদের কর্মীদের আহবায়ক কমিটিতে স্থান দেবেন কিনা তাতে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, অতীতের একপেশে কমিটির কারণে আমাদের আলাদা কমিটি ছিল। কিন্তু সিটি মেয়রের নির্দেশে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এবারো যদি সেভাবে একপেশে আহবায়ক কমিটি হয় তাহলে ত্যাগী কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে। তাতে সৃষ্টি হতে পারে বিশৃঙ্খলা।

জানতে চাইলে নগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ মাহমুদ পূর্বকোণকে বলেন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী প্রেসিডিয়াম সদস্য আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এমপি’দের সাথে তাঁর আলোচনা হয়েছে বলে শুনেছি। এনিয়ে ওয়ার্ড পর্যায়ের কারো কারো অসন্তোষের অভিযোগও আমাদের কাছে আছে। এসব নিষ্পত্তি করবেন চেয়ারম্যান।
নগর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ, সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আব্দুল মান্নান ফেরদৌস, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য দেবাশীষ পাল দেবু, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুরজিৎ বড়ুয়া লাভু, নগর যুবলীগ সদস্য নুরুল আনোয়ার প্রমুখ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট