চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

তালাক দেওয়ায় রাগে বটি দিয়ে স্বামী খুন

সাতকানিয়ায় দাফনের ১৬ দিন পর লাশ উত্তোলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, সাতকানিয়া

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:০২ পূর্বাহ্ণ

সাতকানিয়ার এওচিয়ায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের ১৬ দিন পর গত রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিহত নুরুল আমিনের (৪০) লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। এর আগে তালাক দেওয়ায় ঘুমন্ত স্বামী নুরুল আমিনকে বটি দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে নিহতের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার। গত ১৫ আগস্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপংকর তঞ্চ্যঙ্গার উপস্থিতিতে এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩ মসজিদের পাশে পাহাড়ের উপরে দেয়া কবর থেকে লাশটি উত্তোলন করে চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। এ সময় এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাতকানিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মো. আহসান হাবিবসহ একদল পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, মিনি ট্রাক চালক নুরুল আমিন গত ২৮ আগস্ট তুচ্ছ ঘটনায় তর্কাতর্কির জের ধরে স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তারকে (৩৪) তালাক দেয়। তর্কাতর্কি শেষে পার্শ্ববর্তী এক মহিলা উভয়কে মিমাংসা করে দিয়ে ঘুমাতে বলে চলে যায়। পরে স্বামী ছেলে ও মেয়েদের নিয়ে ঘরের ভেতর খাটে ঘুমিয়ে পড়ে। স্ত্রী ঘরের বারান্দায় শুয়ে পড়ে। রাত ৩-৪টার মধ্যে যে কোন সময়ে তালাক দেওয়ায় রাগে ঘুমন্ত স্বামীকে বটি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে স্ত্রী। গত ২৯ আগস্ট সকালে এলাকাবাসী নুরুল আমিনকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঁশখালী, পরে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসকদের পরামর্শে নুরুল আমিনকে নগরীর সার্জিস্কোপ হাসপাতালে ভর্তি করলে ৩০ আগস্ট সকাল ১১টায় তার মৃত্যু হয়। একই দিন আশ্রয়ন প্রকল্পের মসজিদের পার্শ্বে পাহাড়ের উপর নুরুল আমিনকে দাফন করা হয়। এ নিয়ে এলাকাবাসী স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বৈদ্যুতিক পাকায় নুরুল আমিন আঘাত পেয়েছে বলে জানায়। কবর দেওয়ার পর বিষয়টি সন্দেহ হলে স্থানীয় লোকজন সাতকানিয়া থানার ওসি মো. সফিউল কবীরকে জানালে দাফনের ৩ দিন পর তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তারকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং একই দিন রাতে নিহতের বড় বোন সামশুন্নাহার বাদি হয়ে ইয়াছমিন আক্তারকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার ৩ সেপ্টেম্বর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এতে তাকে তালাক দেওয়ায় রাগের বশবতী হয়ে স্বামীকে খুন করার ঘটনা স্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে আহসান হাবিব বলেন, ট্রাক চালক নুরুল আমিনকে হত্যা করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশের দাফন করা হয়েছে। দাফনের ১৬ দিন পর একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশটি কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সাতকানিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) দীপংকর তঞ্চ্যাঙ্গা তার উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য ট্রাক চালক নুরুল আমিনের লাশ চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট