চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

আধিপত্যের দ্বন্দ্বে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, কাপ্তাই

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:০২ পূর্বাহ্ণ

ডা. এসএম চৌধুরী স্মৃতি মিউজিয়াম প্রকল্পের দখল নিয়ে চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতাল কতৃপক্ষের আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে হাসপাতাল এলাকায় বিশৃংখলা বিরাজ করছে। সন্ত্রাসী তৎপরতায় হাসপাতাল এলাকায় ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। বাসভবনে অবস্থানরত প্রয়াত ডা. এস এম চৌধুরী পরিবারের লোকজনকে জোরপূর্বক বের করে দেয়ার চেষ্টাসহ বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সামগ্রীক প্রতিকুল পরিস্থিতিতে হাসপাতালে স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম বিঘিœত হচ্ছে।

প্রয়াত ডা. এস এম চৌধুরীর পুত্রবধূ বিপাশা চৌধুরী জানান, মিউজিয়াম পরিকল্পনা বিঘিœত করতে নানা প্রতিকুলতা সৃষ্টি করছে বর্তমান হাসপাতাল পরিচালনা কতৃপক্ষ। সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর বাসভবনে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। নানাভাবে তারা মিউজিয়াম প্রকল্প এলাকা জবর দখলের পাঁয়তারা করছে। এব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে রাঙামাটি জেলা আদালতে মামলা দারের করা হয়েছে।
কাপ্তাই থানা ওসি নাসিরউদ্দিন জানান, বিশৃংখলা ঠেকাতে পুলিশি তৎপরতা রয়েছে। উভয় পক্ষকে আদালতের নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য,বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘের ( বি বিসি এস) তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এলাকায় চিকিৎসা সেবার একটি প্রাচীনতম এবং খ্যাতিমান এই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ডা. এস এম চৌধুরীর পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি বি বি সি এস সভাপতির দায়িত্বও সফলতার সাথে পালন করেন। পার্বত্য এলাকায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দোর গোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, সামাজিক অঙ্গনে তার অবদানে এলাকার সর্বস্তরের জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাঁর বাসভবনে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলের পরিকল্পনা তৈরি হয়। মুক্তিযুদ্ধের বহু কর্মকান্ডের সাথে এই বাসভবনে স্মৃতি জড়িত। এলাকার খ্রীষ্টিয়ান সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ চায় বাসভবনটি যেন এই কৃত্তিমান পুরুষের স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষিত হয় ।

প্রয়াত পরিবারের ডা. এনজলা চৌধুরী বলেন, এলাকার মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে মিউজিয়াম প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং বিশিষ্ট ব্যক্তি সমন্বয়ে সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে প্রয়াত পরিচালকের বাসভবনসহ প্রায় ৩০ শতাংশ জমির উপর প্রয়াত পরিচালক ডা. এস এম চৌধুরীর মিউজিয়াম প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এখানে প্রয়াতের সমাধির পাশাপাশি তাঁর পুত্র হাসপাতালের পরবর্তী পরিচালক প্রয়াত ডা. মং স্টীফেন চৌধুরী ও স্ত্রী প্রয়াত প্রসুন চৌধুরীকে পরিকল্পিতভাবে সমাধিস্থ করা হয়। অভিযোগ পাওয়া যায়, হাসপাতাল পরিচালনা কর্তৃপক্ষ তিন প্রয়াতের সমাধিতে ঘেরা দিয়ে পরিকল্পনার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। এছাড়া বাসভবন জবর দখলের চেষ্টা করা হয়। বিবিসিএস এর জয়ন্ত অধিকারী বলেন, চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালের পরিস্থিতির বিষয়ে বর্তমান পরিচালক সবকিছু জানেন।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রবীর খিয়াং জানান, অবৈধভাবে বাসভবন দখল করার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট