চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

উদ্বোধন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর

স্বপ্নের সুইমিংপুলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা

নিজস্ব ক্রীড়া প্রতিবেদক

১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:১৮ পূর্বাহ্ণ

সুইমিংপুল নির্মাণ করলেই সবকিছু শেষ হয়ে যায় না। এর রক্ষণাবেক্ষণ করাটাই হচ্ছে আসল কাজ। সারাদেশে নির্মিত ২১টির মতো সুইমিংপুলের মধ্যে কয়েকটি ছাড়া বাকি গুলোর অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। আশি আশা করবো, চট্টগ্রামে নির্মিত এই দৃষ্টিনন্দন সুইমিংপুলটি স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হওয়ার পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণের দিক থেকে একটা আদর্শ হয়ে দেশের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। গত সোমবার চট্টগ্রামের আউটার স্টেডিয়ামে নবনির্মিত বিভাগীয় সুইমিংপুলের উদ্বোধন উপলক্ষে পুল চত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। তবে তার আগেই বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র এবং এই সুইমিংপুলের রুপকার এবং দায়িত্ব পাওয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরউদ্দীন দৃঢ় কন্ঠে বলেছেন, ’আমরা সারাদেশে একটা মাইলফলক হয়ে থাকতে চাই। গড্ডালিকা প্রবাহে গা না ভাসিয়ে চট্টগ্রামকে একটি ব্যতিক্রমী জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবো, আমাদের সব রকম সামর্থ্য আছে, নিজস্ব অর্থায়নে পুলের যত্ন নেয়া হবে। বহু প্রতীক্ষীত চট্টগ্রামের এ সুইমিং পুল উদ্বোধনের পরপরই বিভিন্ন সেশনে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও শুরু হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে পুল পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষকসহ ২১ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অর্থায়নে সদ্যনির্মিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় সুইমিং পুলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ হোসেন। তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এই সুইমিংপুলে টেম্পারেচার কন্ট্রোল এবং স্টিম বাথ ও সাথা বাথ সিস্টেমের উপর গুরুত্ব আরোপ করে জিমন্যাসিয়ামকে আধুনিকায়ন নিয়ে প্রধান অতিথির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি আরো বলেন, শহর অঞ্চলে এখন পুকুরের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, এ পুলের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে সাঁতার অঙ্গনের আমুল পরিবর্তন আসবে। এভাবে হারিয়ে গেলে নদী, খাল ও বিল দেখতে একসময় জাদুঘরে যেতে হবে। চট্টগ্রামের সুইমিংপুলের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করে প্রধান অতিথি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের দাবির মুখে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট এবং জিমন্যাসিয়াম সংস্কারে উডেন ফ্লোরসহ আধুনিকায়ন করার ব্যাপারে আশ^াস প্রদান করেন। সিটি মেয়র সুইমিংপুলের বরাদ্দ ছাড় করার ব্যাপারে বর্তমান অর্থমন্ত্রী ও সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে বলেন এ পুলের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের আশা পূর্ণ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সুইমিংপুলের অনেকে না বুঝে বিরোধিতা করেছেন। কেন করেছেন তাও বোধগম্য নয়। চট্টগ্রামের এ পুলে সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে আগামী নভেম্বরে প্রথমদিকে ৪ দিনব্যাপী জাতীয় ক্লাব সাঁতার প্রতিযোগিতা আয়োজনের ঘোষণা দেন সিটি মেয়র। জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম ও নির্বাহী সদস্য আসলাম মোরশেদের যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফরউদ্দিন বলেন, চট্টগ্রামে এই আয়োজনে আমি অভিভুত হয়েছি। আমার বিশ^াস এই সুইমিংপুল চট্টগ্রামে নবজাগরণ সৃষ্টি করবে। তিনি সারাদেশে ইতিপূর্বে নির্মিত সুইমিং পুলের করুণ দশা দেখে এর রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন এবং প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা প্রদানের আশ^াস দেন। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাঁতার কমিটির চেয়ারম্যান ও রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল বলেন, ক্রীড়াপ্রেমী সিটি মেয়র দীর্ঘদিনের দাবির মুখে চট্টগ্রামবাসির আশা পূর্ণ করেছেন। আন্তরিকতা থাকলে অনেক কঠিন কাজও সহজ হয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সাঁতার এখন আর শখ নয়, সাঁতার জানাটা এখন প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব হয়ে দাড়িয়েছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (যুগ্মসচিব) শাহ আলম, সংস্থার পক্ষে সহ-সভাপতি মোজাম্মেল হক বক্তব্য রাখেন। এ সময় চট্টগ্রাম জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার একাধিক নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিপুলসংখ্যক প্রশিক্ষণার্থী, তাদের অভিভাবক ও উৎসাহী ক্রীড়াপ্রেমীরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য এতে সাঁতার শেখার জন্য প্রায় ১০০০ হাজারের বেশি ফরম বিক্রি হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট